সৈয়দ মহম্মদ হুসেন মির্জা
দু’জনেই মির্জা। দু’জনেই নারদ-কাণ্ডে অভিযুক্ত।
এক জন সৈয়দ তারজাদা মির্জা ওরফে টাইগার, পেশায় মাদ্রাসা শিক্ষক। অন্য জন রাজ্যের আইপিএস অফিসার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা, ব্যারাকপুরে এসএসএফ-এর কম্যান্ডান্ট। বৃহস্পতিবার দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সব মিলিয়ে ১৫ ঘণ্টা জেরা করল দু’জনকে। টাইগারকে সাত ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি। পুলিশকর্তা মির্জাকে সিবিআই জেরা করে টানা আট ঘণ্টা।
ইডি-র দাবি, টাইগারের হাত ধরেই নারদ স্টিং অপারেশনের ছদ্মবেশী সাংবাদিক ম্যাথু স্যামুয়েল শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীদের কাছে পৌঁছেছিলেন। বিনিময়ে প্রায় এক লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন ওই শিক্ষক। এ দিন জেরায় অবশ্য টাইগার দাবি করেন, তিনি ৫০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন। তিনি যে ‘সত্যি’ বলছেন, তা বোঝাতে কিছু নথিও জমা দেন। রেকর্ড করা হয় টাইগারের বয়ান।
তদন্তকারীর সংস্থা সূত্রের খবর, কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র তথা বিধায়ক ইকবাল আহমেদের কাছে ম্যাথুকে নিয়ে গিয়েছিলেন টাইগারই। ম্যাথুর কাছ থেকে কয়েক দফায় প্রায় ইকবাল ১৫ লক্ষ টাকা নিয়েছেন— দাবি ইডি-র। গোয়েন্দারা আরও বলছেন, এক হোটেল কর্মচারীর কাছে ইকবালের টাকা রাখা হয়েছিল। ওই কর্মচারীকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাঁকেও নোটিস পাঠানো হবে। ইডি সূত্রে বক্তব্য, স্টিং অপারেশনে ম্যাথুর সঙ্গে আগাগোড়া ছিলেন টাইগার। ওই সময়ে প্রায় ৮০ লক্ষ টাকার লেনদেন হয়েছিল। সেই লেনদেন সংক্রান্ত যাবতীয় বয়ান নেওয়া হয়েছে টাইগারের থেকে। আজ, শুক্রবার তাঁকে ডেকেছে সিবিআই।
ইডি-র দফতরে সৈয়দ তারজাদা মির্জা। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য।
২০১৪-র লোকসভা ভোটের আগে রাজ্যসভার এক সাংসদের দক্ষিণ কলকাতার বাড়িতে টাকা দিতে গিয়েছিলেন ম্যাথু। তাঁকে বর্ধমান জেলার তৎকালীন পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জার কাছে টাকা পাঠিয়ে দিতে বলেন ওই সাংসদ। সিবিআইয়ের দাবি, সেই মতো এসপি-র বাংলোতে গিয়ে তাঁর হাতে পাঁচ লক্ষ টাকা তুলে দেন ম্যাথু।
সূত্রের খবর, তাঁর সঙ্গে ওই সাংসদের সম্পর্ক নিয়ে এ দিন মির্জাকে প্রশ্ন করে সিবিআই। সদুত্তর দিতে পারেননি পুলিশকর্তা। সিবিআইয়ের দাবি, ম্যাথুর তোলা সম্পাদিত ও অসম্পাদিত ফুটেজে মির্জাকে দেখানো হয়েছে। তাতে মির্জার ছবি রয়েছে তো বটেই, প্রতিটি ফুটেজে তাঁর একাধিক কথাও শোনা গিয়েছে। তদন্তকারীদের আরও দাবি, অসম্পাদিত ফুটেজের কয়েকটি অংশ দেখে হতবাক হয়ে যান ওই পুলিশকর্তা। সিবিআইয়ের দাবি, অসম্পাদিত ফুটেজে প্রাক্তন এসপি-র বাড়িতে আরও টাকা লেনদেনের তথ্য রয়েছে। কিন্তু তা নিয়েও কার্যত কোনও জবাব দিতে পারেননি মির্জা। তাঁকে আবার ডাকা হবে বলে জানান এক সিবিআই কর্তা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy