প্রতীকী ছবি।
বৃষ্টির দুপুরে মেনুতে খিচুড়ির সঙ্গে পটল, বেগুন বা করলা ভাজাতেও এ বার টান পড়ার জোগাড়! বৃষ্টির জেরে একের পর এক আনাজ খেত জলে ডুবে থাকায় বাজার এখন আগুন।
শুধু আনাজের বাজারই নয়, বিয়ে কিংবা উৎসবের মরসুম না-হওয়া সত্ত্বেও আকাশছোঁয়া দাম ফুলের। সব মিলিয়ে মাথায় হাত আনাজ বা ফুলের ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ মানুষের।
পাইকারি ও খুচরো ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, বর্ষায় করলা, লম্বা ঝিঙে, সাদা পটল, বেগুনের ফলন ভাল হয়। কিন্তু রাজ্যের যে সমস্ত জেলায় ওই সব আনাজের ফলন হয়, তার অধিকাংশই বৃষ্টিতে বেহাল। আবার জেলার সঙ্গে সংযোগকারী রাস্তাও জলমগ্ন। ফলে এ বছর ফলন ভাল হলেও বাজারে সেই আনাজ এসে পৌঁছতেই সমস্যা হচ্ছে।
বিক্রেতাদের দাবি, বাঁকুড়া ও মেদিনীপুরের সীমানা এলাকা খড়কাটা, বামুনবাদ, গড়বেতায় করলা ও লম্বা ঝিঙের ফলন ভাল হয়। ওই সব এলাকায় পাঁচ টাকা কেজি দরে করলা, ঝিঙে মিললেও কলকাতার বাজারে তার পাইকারি দাম প্রায় ৪০ টাকা। খুচরো দাম কম-বেশি পঞ্চাশ। কারণ, যে পথে আনাজ আসবে, সেই চন্দ্রকোনা-আরামবাগ জলে ভাসছে।
আবার বীরভূমের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ায় সেখান থেকে বেগুনও আসছে না। ফলে কলকাতার বাজারে বেগুন বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৫০ টাকায়। অন্য সময়ে যেখানে সাদা পটলের দাম থাকে কেজিতে ৩০ টাকা, তা এখন ৫০। বিভিন্ন বাজারে শসা ৬০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৫০ টাকা, কাঁচা লঙ্কা ৮০ থেকে ১০০ টাকা, টোম্যাটো ৮০ থেকে ১০০ টাকা, ওল ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গড়িয়াহাট বাজারের ব্যবসায়ী দিলীপ মণ্ডল বলেন, ‘‘যে হারে বৃষ্টি হচ্ছে, তাতে আনাজের দাম আরও বাড়বে।’’
উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, হুগলি, বাঁকুড়া, দুই মেদিনীপুর থেকেই আনাজ আসে কলকাতায়। কোলে মার্কেটের সুপারভাইজার উত্তর মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘ডুবে থাকায় প্রায় সব গাছেই পচন ধরেছে। ফলে জল কমে গেলেও এক মাস এই সমস্যা চলবে।’’ আকাল পানের বাজারেও। পান ব্যবসায়ীদের কথায়, ‘‘পানের বরজগুলি জলে ভর্তি। ফলে চাষিরা পান পাতা সংগ্রহ করতে পারছেন না।’’ বাংলা পাতা পান আসে হাওড়ার শানপুর, বাগনান, আমতা থেকে। আর মেচেদা থেকে আসে মিষ্টি পাতা। কিন্তু হাওড়া ও মেদিনীপুরের ওই সমস্ত জায়গাই এখন জলমগ্ন। রাজ্যেক কৃষি বিপণন মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘অতিবৃষ্টি ছাড়াও ডিভিসি-র জল ছাড়ার ফলে সব প্লাবিত হয়েই এই সমস্যা। এ সময়ে ফড়েদের দাপটও বাড়ে। তবে সব কিছুর উপরে নজর রাখছি।’’
অন্য দিকে, আকাল ফুলের বাজারেও। অতি বৃষ্টিতে হাওড়া, কোলাঘাট, পশ্চিম মেদিনীপুর, রানাঘাট থেকেও ফুলের জোগান কম। ফলে সমস্যায় গৃহস্থেরা। অতি বৃষ্টিতে গাঁদা ফুলে দাগ হয়ে যাচ্ছে। ব্যবসায়ারী জানান, ২০ পিস গাঁদার গুচ্ছ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়। আবার খুচরো গাঁদার কেজি ২০০ টাকা। জবা ফুল এক একটি বিকোচ্ছে দু’টাকায়। দোপাটির দাম ১৫০ টাকা কেজি। সমস্ত পুকুর ডুবে থাকায় মিলছে না পদ্মও। নিউ মার্কেটের ফুল ব্যবসায়ী সুরজিৎকুমার দাঁ বলেন, ‘‘ফুলের কুঁড়ি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ফুলে পচন ধরছে। দামও বাড়ছে। বৃষ্টিতে ফুলের জোগানও কমে গিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy