দলনেত্রীর প্রিয় মন্ত্র ‘বিশ্ববাংলা’। তাঁর সরকারেরও। যে কারণে ই এম বাইপাস ছুঁয়ে বিধাননগর থেকে নিউটাউনে চলে যাওয়া রাস্তা সরকারি ভাবেই এখন ‘বিশ্ববাংলা সরণি’। কিন্তু বিশ্বকর্মা? বাংলার তেত্রিশ কোটি দেব-দেবীর মধ্যে এই কারিগর দেবতার সঙ্গেও সম্পর্ক পাতিয়ে ফেলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল!
বেশ কয়েক বছরের মতো এ বারও তৃণমূল ভবনে রীতি মেনে বিশ্বকর্মা পুজো হল। প্রশ্ন হচ্ছে, বিশ্বকর্মার সঙ্গে তৃণমূলের কি যোগ? বস্তুত, কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই বা কি যোগ? বিশ্বকর্মা শিল্পের দেবতা। তৃণমূল ভবন তো কারখানা বা ওয়ার্কশপ নয়! শাসক দলের সদর দফতরে ইদানীং গণেশ আরাধনা হয়। গণেশের সঙ্গে না হয় সিদ্ধিলাভের সম্পর্ক আছে। তা-ই বলে বিশ্বকর্মা?
তৃণমূলের এক বর্ষীয়ান নেতা বলছেন, সম্পর্কটা আসলে ‘যান্ত্রিক’! তাঁর কথায়, ‘‘তৃণমূল ভবনে কম্পিউটার এবং আরও কিছু যন্ত্রপাতি আছে। যে ছেলেরা ভবনে কাজ করে, তারাই সে সব দেখভাল করে। বাইরে থেকে লোক ডাকা হয় না। ছেলেরা দাবি করেছিল, বিশ্বকর্মা পুজো করবে। দিদি অনুমতি দিয়েছিলেন।’’ তখন থেকেই তৃণমূল ভবনে বিশ্বকর্মার আরাধনা হয়। বছর বছর পুরোহিতের দায়িত্ব পালনে ডাক পড়ে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের। এ বারও পুরোহিতের কৃত্য সম্পন্ন করেছেন বিদ্যুৎমন্ত্রী। পুজোয় যথারীতি হাজির ছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী।
দলের মধ্যে তৃণমূল ভবনের এই বিশ্বকর্মা পুজো অবশ্য তেমন নজরকাড়া নয়। নামী-দামি বহু নেতা-মন্ত্রীই তাই সেখানে থাকেন না। রবিবারও থাকেননি। তৃণমূলের একটি সূত্রের বক্তব্য, বিশ্বকর্মা পুজোয় দলের বর্ষীয়ান নেতা মুকুল রায়কে আমন্ত্রণ করা হয়েছিল দলের তরফে। কিন্তু সহ-সভাপতি পদটিও হারিয়ে ফেলা মুকুলবাবু ভবনমুখো হননি। তৃণমূল ভবনের স্বল্পদূরত্বেই একটি আবাসনে দুপুর পর্যন্ত ছিলেন। তাঁর এক অনুগামী জানাচ্ছেন, তার পরে ‘দাদা’ দিল্লি গিয়েছেন।
মুকুল অনুগামী অন্য এক নেতাও বলছেন, ‘দাদা’ কোনও কালেই বিশ্বকর্মা বা গণেশ পুজোয় ভবনে থাকেন না। তাই এ বারের না থাকার মধ্যে আলাদা কোনও গন্ধ নেই!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy