মনোযোগ: সমস্যার বিষয়গুলি লিখছেন শিক্ষিকারা। —নিজস্ব চিত্র।
প্রশাসনিক কাজের পাশাপাশি স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের নেতৃত্বের প্রশিক্ষণ দিতে শুরু হয়েছিল ‘লিডারশিপ প্রোগ্রাম’। এ বার তার দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু করল প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকদের বিশেষ দল। কলকাতার ১৮টি স্কুলে পরিদর্শন ও অভিভাবকদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করে উন্নয়নের রূপরেখা তৈরির কাজ শুরু হচ্ছে বলে জানান স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা।
স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, কলকাতা-সহ রাজ্যের সমস্ত মাধ্যমিক স্তরের স্কুলগুলির উন্নয়নে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে স্টেট কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং বা এসসিইআরটি।
সেই প্রশিক্ষিত শিক্ষকদের কয়েকটি দলে ভাগ করা হয়। সেই দলগুলিই এই সমস্ত প্রশিক্ষণের কাজে ব্যস্ত। তাঁরাই বাছাই করা কিছু স্কুলে পরিদর্শনে যাচ্ছেন। চলতি সপ্তাহেই লিডারশিপ প্রোগ্রাম-এর দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শেষ হবে বলে জানান দফতরের এক কর্তা। যাদবপুর বাঘা যতীন হাইস্কুল, বেলতলা গার্লস হাইস্কুল, কসবা চিত্তরঞ্জন হাইস্কুল, চেতলা বয়েজ-সহ ১৮টি স্কুলে পরিদর্শন করছে ওই প্রশিক্ষিত শিক্ষকদের দল।
ওই দলের এক সদস্য জানান, বিভিন্ন স্কুলে স্মার্ট ক্লাসরুম চালু হওয়ার ক্ষেত্রে যে সমস্ত পদক্ষেপ করা প্রয়োজন, তা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু স্কুলের পড়ুয়া, অভিভাবক এবং শিক্ষকদের সঙ্গে সরাসরি কথা হয়নি। কোনও সমস্যা থাকলে তাঁদের সঙ্গে কথা বলে সেগুলি খুঁজে বার করা হচ্ছে। কলকাতা শহরে এমন বহু স্কুল রয়েছে, যেখানে পঠনপাঠনের পদ্ধতি নিয়েও অনেক প্রশ্ন ওঠে। সেগুলি কী ভাবে সংশোধন করা যায়, তার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি স্কুলগুলির মধ্যে পারস্পরিক আদানপ্রদান ও সহযোগিতাও যেন বজায় থাকে, সে দিকে নজর দিয়েছে ওই দল।
যে ভাবে ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল বা নাক-এর সদস্যেরা বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনে আসেন, খানিকটা সে ভাবেই স্কুল পরিদর্শনে যাচ্ছেন শিক্ষকদের ওই দল। ওই দলের সদস্য যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ছাত্র, শিক্ষক অভিভাবক ও দফতরের মধ্যে সেতু বন্ধন করে উন্নয়ন করার লক্ষ্যেই এই পরিদর্শন।’’
পরিকাঠামো কেমন রয়েছে, তার উপরে ভিত্তি করে নম্বরও দেওয়া হচ্ছে স্কুলগুলিকে। পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করে বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠানো হবে এসসিইআরটি-তে। পরে তা ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং বা এনসিইআরটি-র কাছে পাঠানো হবে। তাদের নির্দেশ মতো পরবর্তী পদক্ষেপ করবে স্কুলশিক্ষা দফতর।
কিন্তু ঢাক-ঢোল পিটিয়ে পরিদর্শন ও প্রশিক্ষণের পরেও প্রশ্ন থেকে যায়, সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কতটা এগোচ্ছে স্কুলগুলি? পঠনপাঠনের মান কি আদৌ টানতে পারছে পড়ুয়াদের? বর্তমানে যে ভাবে বাংলা মাধ্যম থেকে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের দিকে অভিভাবকেরা ঝুঁকে পড়ছেন, তার জেরে সিঁদুরে মেঘ দেখছে শিক্ষামহল। সরকারি বা সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলে পড়ুয়ারা যে পরিষেবা পায়, তা যথেষ্ট নয় বলে অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। এই প্রশিক্ষণের ফলে কি অবস্থা ফিরবে? ওই দলের এক সদস্য বলেন, ‘‘প্রথম পর্যায়ে ১৮টি স্কুল, পরে ধাপে ধাপে সমস্ত স্কুলকেই এর আওতায় আনা হচ্ছে। আশা করছি সমস্ত বাংলা মাধ্যম স্কুল নিজেদের গুরুত্ব বোঝাতে পারবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy