Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

হুমায়ুনকে ‘মানিয়ে নিয়ে’ চলতে হবে, নির্দেশ তৃণমূলের

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর খাসতালুকে আজ, শনিবার শাসকদলের ‘মহামিছিল’। এবং সেই মিছিলে পা মিলিয়েই তাঁর রাজনৈতিক ‘সন্ন্যাস’ থেকে প্রত্যাবর্তন চাইছেন দলের বিতর্কিত নেতা হুমায়ুন কবীর। লোকসভা নির্বাচনের পর কার্যত ‘ব্রাত্য’ হয়ে যাওয়া হুমায়ুনকে যে দলেরও প্রয়োজন, তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের গত কয়েক দিনের ‘ভাবগতিক’ও সে ইঙ্গিত দিচ্ছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৪ ০৩:৩৪
Share: Save:

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর খাসতালুকে আজ, শনিবার শাসকদলের ‘মহামিছিল’। এবং সেই মিছিলে পা মিলিয়েই তাঁর রাজনৈতিক ‘সন্ন্যাস’ থেকে প্রত্যাবর্তন চাইছেন দলের বিতর্কিত নেতা হুমায়ুন কবীর।

লোকসভা নির্বাচনের পর কার্যত ‘ব্রাত্য’ হয়ে যাওয়া হুমায়ুনকে যে দলেরও প্রয়োজন, তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের গত কয়েক দিনের ‘ভাবগতিক’ও সে ইঙ্গিত দিচ্ছিল। দিন কয়েক আগে, তৃণমূল ভবনে ‘জরুরি বৈঠকে’ তাঁকে ডেকে পাঠিয়ে সে বার্তাই দেওয়া হয়েছিল। শুক্রবার, বহরমপুরের জেলা পদাধিকারীদের সঙ্গে বৈঠকেও হুমায়ুন-সহ জেলার ‘কোণঠাসা’ নেতাদের ডেকে তাঁদের যে যথেষ্ট ‘গুরুত্ব’ দেওয়া হচ্ছে তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুর্শিদাবাদের যুগ্ম পর্যবেক্ষক আশিস চক্রবর্তী।

বৈঠক শেষে হুমায়ুন অবশ্য বলছেন, “বৈঠকে ডাক পাওয়ায় আমার ব্যক্তিগত শক্তিবৃদ্ধি হল, এমন নয়। আমাকে গুরুত্ব দিলে তৃণমূলের সাধারণ কর্মীরাই উজ্জীবিত হবেন।”

লক্ষ্যনীয় এটাই যে, কলকাতা এবং বহরমপুর, দুটি বৈঠকের কোথাও-ই ডাক পড়েনি লোকসভা নির্বাচনে বহরমপুরে দলীয় প্রার্থী তথা দলের মুর্শিদাবাদ জেলা যুগ্ম পর্যবেক্ষক ইন্দ্রনীল সেনের। শনিবারের মহামিছিলেও উপস্থিত থাকছেন না তিনি। যা শুনে বিরোধীদের প্রশ্ন--তাহলে কি ইন্দ্রনীল-হুমায়ুন কাজিয়ায় শেষ পর্যন্ত পিছু হটতে হল মুখ্যমন্ত্রীর ‘ঘনিষ্ঠ’ ওই গায়ককে?

ইন্দ্রনীল অবশ্য বলছেন, “তৃণমূল ভবনের বৈঠকে যোগ দিতে পারিনি কারণ ওই সময় নবান্নে অন্য বৈঠকে ছিলাম। আর বহরমপুরে যেতে পারছি না, কারণ একটি গানের অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত আছি।”

নির্বাচনে ভরাডুবির পরে, গত ১১ জুলাই বহরমপুরের সিরাজবাগে দলীয় সভায় পুরনো কমিটি ভেঙে মুর্শিদাবাদে আদ্যন্ত নতুন কমিটি গড়ে ছিলেন ইন্দ্রনীল। সে দিন সভায় ঢোকার মুখে জেলা নেতারা জানতে পারেন, মোবাইল ফোন বাইরে রেখে আসতে হবে। কেন? উত্তর এসেছিল, ‘ইন্দ্রনীলের নির্দেশ’। নতুন কমিটি ঘোষণার পরে আর এক প্রস্ত বার্তা ছিল ইন্দ্রনীলের“নতুন কমিটিতে যাঁদের নাম নেই, তাঁদের আর সভায় থাকার প্রয়োজন নেই।”

হুমায়ুন একা নন, সে দিন বিভিন্ন কমিটি থেকে বাদ পড়েছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী সুব্রত সাহা, সাগির হোসেন, মহম্মদ আলি, উৎপল পাল। অন্যরা এ নিয়ে মুখে কুলুপ আঁটলেও ওই ‘অপমান’ হজম করতে রাজি ছিলেন না হুমায়ুন। পরের দিনই ইন্দ্রনীলের বিরুদ্ধে দলের সর্বভারতীয় সম্পাদক মুকুল রায়ের কাছে সটান অভিযোগ জানান তিনি। ১৭ জুলাই তাঁর ইফতার পার্টিতেও আমন্ত্রণ জানাননি ইন্দ্রনীলকে।

দলের একাংশের অভিযোগ, নির্বাচনের পরে বহরমপুরে আর বিশেষ যাতায়াত ছিল না ‘বহিরাগত’ ইন্দ্রনীল সেনের। তাঁকে দিয়ে অধীরের গড়ে সংগঠন মজবুত সম্ভব নয় বুঝতে পেরেই কী ফের হুমায়ুনের ‘শক্তিবৃদ্ধি’র চেষ্টা শুরু হল? যা শুনে দলীয় পর্যবেক্ষক আশিসবাবু বলছেন, “হুমায়ুনের একা নন, জেলা নেতাদের কয়েক জনের অভিমান ছিল। দলীয় কর্মসূচিতে তাঁদের পাওয়া যাচ্ছিল না। সেই অভিমান মুছতে, হুমায়ুনকে নিয়ে চলতে হবে বলে জেলা নেতৃত্বকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE