প্রতীকী ছবি।
চিকেন পক্সে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি এই পশ্চিমবঙ্গে! সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার প্রকাশিত এই তথ্য রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছে। কারণ, স্মল পক্স যে বেশি ভয়াবহ জানাই ছিল। চিকেন পক্সকে বরং নিরীহ ভাবা হতো। কিন্তু দেখা যাচ্ছে সেটা ভুল।
রিপোর্ট জানাচ্ছে, ২০১৫ সালে দেশে ৪৭০৯৪ জনের চিকেন পক্স হয়েছিল। মারা গিয়েছিলেন ৪৬ জন। তার মধ্যে ৪০ জনই পশ্চিমবঙ্গের। ২০১৬ সালে ৬১১১৮ জনের চিকেন পক্স হয়েছিল। মারা যান ৬০ জন। তার মধ্যে ৩৫ জনই পশ্চিমবঙ্গের।
অভিযোগ, এই অবস্থায় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর উপযুক্ত ভূমিকা পালন করেনি। ‘সেন্ট্রাল ব্যুরো অব হেলথ ইন্টেলিজেন্স’-এর এক কর্তার কথায়, ‘‘রাজ্য শুধু তথ্য পাঠিয়ে কাজ সারছে। তথ্য বিশ্লেষণ করছে না।’’ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্মসচিবের মন্তব্য, ‘‘মৃত্যুর খবর পেলেই সংক্রমণের ইতিহাস, রোগের ধরন, আনুষঙ্গিক কোনও রোগ রয়েছে কিনা দেখা উচিত। এমনও হতে পারে যে, পশ্চিমবঙ্গে চিকেন পক্সের অন্য রকম ভাইরাস এসেছে। কিন্তু রাজ্য কিছুই দেখছে না ফলে মৃত্যুর কারণ অজানা থেকে যাচ্ছে।’’
আরও পড়ুন:
এ নিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি মন্তব্য করেন, ‘‘চিকেন পক্স থেকে কখনও মৃত্যু হয় বলে শুনিনি। আপনারা যদি এমন কিছু জেনে থাকেন লিখে ফেলুন।’’ ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের অধিকর্তা অক্ষয়কুমার ধারিওয়াল কিন্তু বললেন, ‘‘চিকেন পক্সের সঙ্গে মেনিনজাইটিস, এনসেফ্যালাইটিস, টাইফয়েড, ডায়াবিটিস, নিউমোনিয়া জাতীয় রোগ হলে তা মারাত্মক হতে পারে। দেখা উচিত পশ্চিমবঙ্গে এই যৌথ সংক্রমণ বেশি হচ্ছে কিনা।’’
ছোঁয়াচে রোগে আক্রান্ত ও মৃত্যুর খবর জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে স্টেট ব্যুরো অব হেলথ ইন্টেলিজেন্সে পৌঁছয়। তারা তথ্য পাঠায় দিল্লিতে। চিকেন পক্সে রাজ্যে বেশি লোক মারা যাচ্ছে, এই তথ্য কি তাঁরা স্বাস্থ্য দফতরকে জানাননি? এসবিএইচআই এর দায়িত্বপ্রাপ্ত অতনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘কী তথ্য গিয়েছে ঠিক জানি না। খোঁজ নিতে হবে।’’
যদিও স্বাস্থ্য ভবন সূত্রেরই খবর, ২০১৫ সালে বেলেঘাটা আইডি-তে ৩৬ জন চিকেন পক্সের রোগীর মৃত্যু হয়েছিল। সেখানে ২০১৬ সালে চিকেন পক্সে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৩৫। ২০১১-১২ সালে আইডি-তে ৩০০ জন চিকেন পক্স রোগীর উপর সমীক্ষা চালান হাসপাতালের তৎকালীন চিকিৎসক অলকেশ কোলে। তিনিও জানান, সে বার ১৮ জন মারা গিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘অনেকেরই শ্বাসকষ্ট, ডায়াবিটিস বা হাইপারটেনশন ছিল না। অবশ্যই চিকেন পক্সের মৃত্যু নিয়ে রাজ্যে সরকারি ভাবে আলাদা ভাবে তদন্ত হওয়া উচিত।’’
কী করবেন
• গর্ভবতী, এইচআইভি, ক্যানসার রোগীদের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা।
• শৈশবেই টিকা। নিতে পারেন বড়রাও।
• ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অ্যান্টি-ভাইরাল ওষুধ।
• রোগীকে প্রচুর জল খাওয়ান।
কী করবেন না
• আক্রান্ত অবস্থায় স্কুল, বাজার, অফিস নয়।
• মাছ-মাংস বন্ধ নয়।
• ঠান্ডা লাগানো নয়।
• ডাক্তার ডাকুন দ্রুত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy