Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

জোড়া খুনে ধৃত ৪, আর্জি নিরাপত্তার

কালনার সুলতানপুরে নিহত তৃণমূল কর্মী বাপন শেখের পরিবারের তরফে রবিবার তৃণমূলের ২৭ জনের নামে কালনা থানায় অভিযোগ করা হয়েছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৮ ০১:৫৭
Share: Save:

প্রধান ও তাঁর সঙ্গীকে খুনের ঘটনায় চার জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে রয়েছে কালনার ওই ঘটনায় অন্যতম মূল অভিযুক্ত সাদেক শেখের ভাই। সাদেক পলাতক বলে জানায় পুলিশ। এ দিনই প্রশাসনের কাছে কার্যালয়ে সশস্ত্র পুলিশি প্রহরার আর্জি জানিয়েছেন সুলতানপুর পঞ্চায়েতের ভারপ্রাপ্ত এগজিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়।

কালনার সুলতানপুরে নিহত তৃণমূল কর্মী বাপন শেখের পরিবারের তরফে রবিবার তৃণমূলের ২৭ জনের নামে কালনা থানায় অভিযোগ করা হয়েছিল। তাতে কালনা ১ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ সাদেক ছাড়াও জেলা পরিষদ সদস্য শান্তি চালের নাম ছিল। নিহত প্রধান সুকুর শেখের ভাই মহম্মদ নাসের আলি শেখ সোমবার কালনা থানায় পনেরো জনের নামে অভিযোগ করেন। তাতে সাদেকের নাম থাকলেও শান্তিবাবুর নাম নেই।

নাসের আলি শেখ পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, শনিবার পঞ্চায়েতে একটি দরপত্র সংক্রান্ত কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথে হরিশঙ্কর মোড়ে চা খেতে দাঁড়িয়েছিলেন সুকুর। তখনই এক দল দুষ্কৃতী লাঠি, রড, টাঙি নিয়ে তাঁর উপরে হামলা চালায়। বাপন বাঁচাতে গেলে তাঁকেও মারধর করা হয়। সুকুর ও বাপন পালাতে গেলে দুষ্কৃতীরা এলোপাথাড়ি গুলি ছোড়ে। নাসেরের দাবি, রসুলপুরের বাসিন্দা মফিজুল শেখ ও বেলেডাঙার বাসিন্দা সাদেক গুলি ছুড়েছিল।

বাপনের পরিবারের অভিযোগে যাদের নাম রয়েছে, তাদের কয়েক জনের নাম এ দিন সুকুরের ভাই নাসেরের দায়ের করা অভিযোগপত্রে নেই। আবার, অন্য কয়েক জনের নাম রয়েছে সেখানে। নাসের দাবি করেন, ‘‘দাদাকে কলকাতা যাওয়ার সময়ে যাদের নাম বলেছিল, তাদের নাম লিখে রেখেছিলাম। পুলিশকে সেগুলিই জানিয়েছে।’’ তাঁর অভিযোগ, প্রথমে সুকুরকে বেধড়ক মারধর করা হয়। কাতর আকুতি জানালেও দুষ্কৃতীরা তাঁকে গুলি করে।

পুলিশ অবশ্য জানায়, রবিবার যে অভিযোগ দায়ের হয়েছে তার ভিত্তিতে মামলা দায়ের হয়েছে। তবে প্রধানের পরিবারের অভিযোগও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। কালনা আদালতের আইনজীবী গৌতম গোস্বামী বলেন, ‘‘একটি ঘটনায় আইনত একটি মামলা দায়ের হয়। তবে তদন্তে নেমে পুলিশ অভিযোগের তালিকার বাইরের নামও যোগ করতে পারে। আবার কোনও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তদন্তে তেমন কিছু না মিললে চার্জশিটে নাম বাদ দেওয়া যায়।’’ পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জোড়া খুনে অভিযোগের তালিকায় উপরের দিকে নাম থাকা লোকজন এলাকা থেকে গা ঢাকা দিয়েছে। তাদের খোঁজ চলছে। এসডিপিও (কালনা) শান্তনু চৌধুরী বলেন, ‘‘চার জন গ্রেফতার হয়েছে। বাকিদেরও খোঁজ চলছে।’’

পঞ্চায়েত ভোটের আগে এমন ঘটনায় শাসকদলের অন্দরে টানাপড়েন তৈরি হয়েছে। এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘কালনা ১ ব্লকে আগে কখনও প্রকাশ্যে দিনের আলোয় এ ভাবে কোনও নেতা খুনের ঘটনা ঘটেনি। দল যদি বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে না দেখে তাহলে ভবিষ্যতে ফল ভুগতে হতে পারে।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ বলেন, ‘‘বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েই দেখা হচ্ছে। দোষীদের শাস্তি হবে।’’ রবিবার সন্ধ্যায় স্বপনবাবু সুকুরের গ্রাম ভাটরায় গিয়ে পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

এ দিন ওই পঞ্চায়েতের তরফে সোমনাথবাবু ব্লক প্রশাসনকে লিখিত ভাবে জানান, প্রধান খুনের ঘটনার পরে এলাকার পরিস্থিতি ভাল নয়। পঞ্চায়েতের কাজকর্ম চালু রাখার জন্য পুলিশি পাহারার ব্যবস্থার আবেদন করেছেন তিনি। মহকুমাশাসক (কালনা) নীতিন সিংহানিয়া বলেন, ‘‘পাহারার বিষয়টি নিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

arrest Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE