প্রতীকী চিত্র।
বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র বলতে প্রথমেই মাথায় আসে বিহারের মুঙ্গেরের নাম। কারণ গোটা দেশে যত বেআইনি অস্ত্রের হদিশ মেলে, তার বড় অংশই তৈরি হয় মুঙ্গেরে। এ রাজ্যের পুলিশেরও একই অভি়জ্ঞতা। কলকাতা বা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ধরা পড়া বেআইনি অস্ত্রের অধিকাংশরই উৎস যে বিহার, তা তারা জানেন।
কিন্তু, রবিবার সেই মুঙ্গেরেই ধরা পড়া ৮৪টি সেমি-অটোমেটিক পিস্তলের কাঠামোর তদন্তে নেমে তাজ্জব বিহার পুলিশের কর্তারাই। কারণ, অস্ত্র সহ ধৃত চারজনকে জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র কলকাতা থেকে আমদানি করা হয়েছিল।
রবিবার মুঙ্গেরের হেরুদিয়ারা এলাকায়, একটি যাত্রীবাহী বাসে তল্লাশি চালিয়ে এই অস্ত্রের সন্ধান পান মুঙ্গের জেলা পুলিশের বিশেষ দল। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ঝুড়ির মধ্যে, সব্জির আড়ালে এই অস্ত্র পাচার করা হচ্ছিল। পুলিশ চারজন বাস যাত্রীকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের মধ্যে মহম্মদ ইরফান এবং মহম্মদ ইমতিয়াজ বিহারের হজরতগঞ্জের বাসিন্দা। বাকি দু’জন মহম্মদ নাসিম এবং মুক্তার জামালপুরের বাসিন্দা। বিহার পুলিশের তদন্তকারীদের দাবি, ধৃতদের কাছে সেভেন মিমি বোরের সেমি-অটোমেটিক পিস্তলের কাঠামো পাওয়া গিয়েছে। এই কাঠামোগুলি সবই কলকাতার শহরতলির কোনও কারখানায় তৈরি বলে জেরায় জানিয়েছে ধৃতরা। মুঙ্গেরে পৌঁছনর পর সেই কাঠামোতে স্প্রিং,ট্রিগারের মতো যন্ত্রাংশ লাগিয়ে বাজারে বিক্রির উপযুক্ত করা হত। মুঙ্গের জেলা পুলিশ সুপার গৌরব মঙ্গলা জানিয়েছেন, ধৃতেরা প্রায় দেড় বছর ধরে এই অস্ত্র পাচারের সঙ্গে যুক্ত। এদের জেরা করে কলকাতার কারখানা সম্পর্কে কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে,ধৃতদের মধ্যে মহম্মদ ইরফান এর আগেও গ্রেফতার হয়েছিল।
আরও পড়ুন: মঙ্গলবার ফের সেলিমের ছেলেকে তলব করল সিআইডি
আরও পড়ুন: দোষীরা কেউ তৃণমূলের নয়, দাবি হৃদয়ের
২০১৪-য় এরকমই একটি অস্ত্র কারখানার হদিশ পাওয়া গিয়েছিল হাওড়ার বাগনানে। এর পর ২০১৬ এবং ২০১৭ সালে দক্ষিণ-পশ্চিম শহরতলির রবীন্দ্রনগর এলাকা ও খোদ কলকাতা শহরের তিলজলাতে তিনটি এরকমই অস্ত্র কারখানার হদিশ পেয়েছিল রাজ্য পুলিশ। প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছিল বিহার থেকে অস্ত্র তৈরির কারিগরদের এখানে এনে সেই আগ্নেয়াস্ত্রর মূল কাঠামো তৈরি করা হত। রাজ্য সিআইডির এক শীর্ষ কর্তার দাবি, “ওই অস্ত্র কারখানাগুলিতে হানা দিয়ে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল তাদের জেরা করে জানা গিয়েছিল, বিহার থেকে এখানে অস্ত্র নিয়ে আসার চেয়ে এ রাজ্যে বানানোর ঝুঁকি কম।” রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকেও বিহার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। তবে সিআইডি কর্তারা স্বীকার করেছেন যে এই প্রবণতা যথেষ্ট চিন্তার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy