ফাইল চিত্র।
গত মাসেই বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস (বিআইএন)-এ অমিত মণ্ডলের মৃত্যু হয়। অভিযোগ, ঘুষ দিতে না পারায় সময় মতো স্টেন্ট পাওয়া যায়নি। এই ঘটনার দু’সপ্তাহও কাটেনি। রোগীকে বিনা চিকিৎসায় মেঝেতে ফেলে রাখার অভিযোগ উঠেছে এসএসকেএম হাসপাতালে।
সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবায় গাফিলতি এবং অসাধু চক্রের এই রমরমায় যে তিনি অত্যন্ত ক্ষুব্ধ, মঙ্গলবার তা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন বেলা বারোটা নাগাদ তিনি নিজে এসএসকেএম হাসপাতালে যান। পরে নবান্নের প্রশাসনিক বৈঠকেও স্বাস্থ্য দফতরের কাজকর্মে অসন্তোষ জানান।
কালীঘাটের বাসিন্দা ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত শম্ভু জানা এসএসকেএম-এর স্নায়ুশল্য (নিউরো সার্জারি) বিভাগে ভর্তি হওয়ার পরেও চিকিৎসা শুরু হয়নি বলে অভিযোগ তাঁর পরিবারের। উল্টে রোগীকে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁদের চাপ দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি। এই অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত পৌঁছেছিল।
মঙ্গলবার মমতা হাসপাতালে গিয়ে প্রথমেই শম্ভুবাবুর সঙ্গে দেখা করেন। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিনিট কুড়ি কথা বলেন। এসএসকেএম-এর চাপ কমাতে শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতাল ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশ দেন তিনি। গরমে রোগী ও পরিজনদের জলের সমস্যা কমাতে কলকাতা পুরসভাকে এসএসকেএম চত্বরে আরও দু’টি জলের ট্যাঙ্ক রাখার কথা বলেছেন তিনি। হাসপাতালের নিরাপত্তা জোরদার করার নির্দেশও দেন।
হাসপাতাল ঘুরে মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে যান। এ দিন নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠক ছিল। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, সরকারি হাসপাতালে রোগীর হয়রানি কমাতে স্বাস্থ্য দফতরের তৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মমতা। তাঁর কথায় উঠে আসে বিআইএন ঘুষ কাণ্ডে অমিত মণ্ডলের মৃত্যুর প্রসঙ্গও। দফতরের কর্তাদের কাছে তিনি এ ধরনের ঘটনার কারণ জানতে চান। দফতরের নজরদারির খামতির কথা বলেন।
প্রশাসনিক মহলের একাংশের দাবি, এ দিনের বৈঠকে মমতার ক্ষোভ ছিল— একাধিক পরিষেবার ব্যবস্থা থাকলেও এ রাজ্যের বাসিন্দারা তার সুযোগ অনেক দেরিতে পাচ্ছেন। বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে দালাল চক্র সক্রিয়। যারা ভিনরাজ্যের রোগী এ রাজ্যে নিয়ে এসে চিকিৎসা করাচ্ছে। দালাল-চক্র বন্ধে কেন স্বাস্থ্য দফতরের তৎপরতা নেই, মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্যসচিবকে সেই প্রশ্নও করেন।
এই বৈঠকে রাজ্য জুড়ে রক্ত সঙ্কট নিয়েও উদ্বেগ জানান মুখ্যমন্ত্রী। রক্ত সঙ্কট এড়াতে পুলিশ রক্তদানে আগ্রহ জানিয়েছিল। তার পরেও কেন স্বাস্থ্য দফতর দ্রুত রক্ত সংগ্রহ করতে পারল না, প্রশ্ন তোলেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy