প্রতীকী ছবি।
বাড়ির বাছুর ঢুকে গিয়েছিল অন্যের খেতে। বছর ১৪-র কিশোরীটি পড়শির বাড়িতে গিয়েছিল সেই বাছুর ফেরাতে। অভিযোগ, ‘শাস্তি’ দিতে তাকে নগ্ন করে মারধর করে রাস্তায় শুয়ে রাখা হয়। প্রায় দু’সপ্তাহ আগে এই ঘটনার পরে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি ময়নাগুড়ি থানার পুলিশ। বাধ্য হয়ে শনিবার জলপাইগুড়িতে এসে পুলিশ সুপারের দফতরে অভিযোগ জানালেন ছাত্রীর পরিবার।
গত ৮ এপ্রিল ঘটনার পর মানসিকভাবে পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে নবম শ্রেণির ওই ছাত্রী। স্কুলে যাওয়া বন্ধ। বন্ধ টিউশনে যাওয়াও। ছাত্রীর মা জানিয়েছেন, সবসময় আতঙ্কে সিঁটিয়ে রয়েছে তাঁর মেয়ে। পঞ্চায়েত ভোটের মুখে এই ঘটনায় রাজনীতির রংও লেগেছে। নিগৃহীতা ছাত্রীর পরিবারের দাবি, তাঁরা বিজেপির সমর্থক। হামলাকারীরা তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী। তাই পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি অবশ্য জানিয়েছেন, কী ধারায় মামলা হয়েছে, এত দিন কী পদক্ষেপ হয়েছে সব যাচাই করা হচ্ছে। পুলিশ সুপারের কথায়, “কেউ অপরাধ করে থাকলে ছাড় পাবে না।”
ওই দিন দুপুরের পরে পড়শির খেতে ঢুকে প়ড়া বাছুর আনতে যায় ওই ছাত্রী। সেখানে কথা কাটাকাটি হওয়ার পরে ওই পরিবারের সদস্যরা ছাত্রীকে নগ্ন করে মারতে মারতে রাস্তায় নিয়ে যায় বলে দাবি।
ছাত্রীর মা অভিযোগ করেন, “আমার মেয়েকে নগ্ন করে পাড়ার ঘোরানোরও হুমকি দিচ্ছিল ওরা। সে সময় আরও কয়েকজন এসে মেয়েকে উদ্ধার করে।”এরপরেই সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলে ছাত্রীটি। প্রথমে তাকে ময়নাগুড়ি এবং পরে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
ছাত্রীর কাকা বলেন, “অভিযুক্তরা সকলে তৃণমূল করে। সে কারণে পুলিশ গ্রেফতার করছে না। এখন ওরা হুমকিও দিচ্ছে।”
ঘটনার তেরো দিন পরেও কেন বিস্তারিত সবকিছু জানতে পারলো না পুলিশ, কেন অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হল না এই প্রশ্ন তুলেছে পরিবার। পুলিশ সুপারের অফিসের নালিশ জানানোর সঙ্গে রাজ্য মানবাধিকার কমিশনকেও অভিযোগ জানিয়েছে পরিবার। পুলিশের অবশ্য দাবি, মূল অভিযুক্তদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ঠিক কী ঘটেছিল তা জানার জন্য আশেপাশের বাসিন্দাদেরও জেরা চলছে।
অভিযুক্ত পরিবার অবশ্য দাবি করেছে মিথ্যে কথা রটানো হচ্ছে। কথা কাটাকাটি থেকে ধাক্কাধাক্কি হলেও কাউকে মারধর করা হয়নি। জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এমন ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির যোগ থাকতে পারে না। দল এমন অভিযোগকে কখনও সমর্থন করবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy