তোড়জোড়: আসানসোলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে চলছে সমাবর্তনের মঞ্চ বাঁধার কাজ। সোমবার। ছবি: পাপন চৌধুরী
কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে একই মঞ্চে উপস্থিত থাকবেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২৬ মে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণেই ওই অনুষ্ঠান হবে। হাসিনার হাতে সাম্মানিক ‘ডি লিট’ তুলে দেবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী।
এরই মধ্যে এখনও সমাবর্তনে আমন্ত্রণ না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকার সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। সোমবার তিনি জানান, এলাকার সাংসদ হওয়া সত্ত্বেও রাজ্য সরকারের তরফে তাঁকে এখনও অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ না জানানোয় তিনি বিস্মিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সাধন চক্রবর্তী অবশ্য বলেন, ‘‘রবিবারই আমাদের কার্ড ছাপা হয়ে এসেছে। তা পাঠানো শুরু করছি। সাংসদের কাছেও আমন্ত্রণপত্র যাবে।’’ তবে বাবুল বলেন, ‘‘এর পরে আমন্ত্রণপত্র পাঠালেও আমি গ্রহণ করব না।’’
সমাবর্তন উৎসবের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে এখন সাজ-সাজ রব। প্রশাসনিক ভবনে প্রতিটি কক্ষের খোলনলচে পাল্টাচ্ছে। বাইরের মাঠে বড় ম্যারাপ বাঁধার কাজ চলছে। প্রতিদিনই দফায়-দফায় আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট ও বাংলাদেশের নিরাপত্তা আধিকারিকেরা ঘুরে গিয়েছেন। সোমবারও কয়েক দফায় পরিদর্শন করেন তাঁরা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে নানা পরামর্শও দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সাধন চক্রবর্তী জানান, ২৬ মে বাংলাদেশ সরকারের বিশেষ চাটার্ড বিমানে অণ্ডাল বিমানবন্দরে নামবেন শেখ হাসিনা। তাঁর সঙ্গে থাকবে প্রায় দেড়শো জনের একটি দল। বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন উপাচার্য। এর পরে ২ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে হাসিনার কনভয় সকাল ১১টা নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছবে। সেই সময়েই অনুষ্ঠান মঞ্চে পৌঁছনোর কথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীরও। আগের রাতে আসানসোলে পৌঁছনোর কথা রাজ্যপাল তথা আচার্যের।
উপাচার্য জানান, হাসিনার দুপুর ১টা পর্যন্ত সমাবর্তন অনুষ্ঠানে থাকার কথা। তার পরে অণ্ডাল থেকে বিমানে কলকাতায় গিয়ে আরও দু’টি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা তাঁর। হাসিনার সঙ্গে সে দিন বাংলাদেশের শিক্ষাবিদ ও নজরুল গবেষক রফিকুল ইসলাম, আনিসুর জামান এবং সে দেশের বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নানের থাকার কথা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, সমাবর্তনে হাসিনার সঙ্গে সাম্মানিক ডি লিট দেওয়ার কথা ছিল অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুরকেও। কিন্তু তিনি সে দিন উপস্থিত থাকতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন। তাঁকে পরে কোনও সময়ে কলকাতায় এই সম্মান তুলে দেওয়া হবে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
১৯৯৯ সালের জানুয়ারিতে প্রথম বার আসানসোলে এসেছিলেন শেখ হাসিনা। সে বার চুরুলিয়ায় নজরুল ইসলামের জন্মভিটে পরিদর্শনে গিয়েছিলেন তিনি। তবে এ বার তাঁর আর চুরুলিয়ায় যাওয়ার পরিকল্পনা নেই বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। নজরুল অ্যাকাডেমির সাধারণ সম্পাদক কাজী রেজাউল করিম জানান, হাসিনাকে চুরুলিয়ায় নিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁরা প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছিলেন। তবে সময়ের অভাবে তা সম্ভব নয় বলে জানা গিয়েছে।
এ বার সমাবর্তনে প্রায় ৪৪০ জন পড়ুয়াকে শংসাপত্র ও বিভিন্ন বিষয়ে প্রথম বিভাগে প্রথম হওয়ার জন্য ১৯ জনকে স্বর্ণপদক দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy