বাবলু হাঁসদা। —নিজস্ব চিত্র।
গর্জন শুনেই পিলে চমকে যাওয়ার জোগাড়। গোলগাল চেহারা। গায়ে ডোরাকাটা দাগ। আমাদের সামনে একটা কুকুর যাচ্ছিল। কুকুরটাকে হঠাৎ গর্জন করে ওঠে বাঘটা। দেখে মনে হল বাঘটাও ভয় পেয়ে গিয়েছিল। ওর হয়তো মনে হয়েছিল, আমরা ওর খোঁজেই ঢুকছি। ওকে মারব।
কী যে হত তা ভেবে এখনও গা শিউরে উঠছে। কোনও রকমে প্রাণে বেঁচেছি। হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। কিছু ক্ষণ পর জানতে পারলাম, বাঘটা মারা গিয়েছে। একটু মন খারাপ করছে। আসলে যে ক’জন বাঘটাকে শেষ দেখেছে তার মধ্যে আমি এক জন। কখনও মনে হয়নি, বাঘটা আমাদের মারতে এসেছে। বরং মনে হয়েছে, ভয় পেয়ে ও নিজেই বাঁচার চেষ্টা করছে।
শিকার উত্সব চলছে। তাই দল বেঁধে জঙ্গলে গিয়েছিলাম। জানতাম জঙ্গলে বাঘ রয়েছে। তবে এই জঙ্গলেই আছে জানতাম না। শুনেছিলাম বাঘটা আগে কয়েক বার বাগঘোরার জঙ্গলে এসেছিল। পরে চলেও গিয়েছিল। আমরা জনা চল্লিশ জন খালের উপর দিয়ে জঙ্গলের মধ্যে ঢুকছিলাম। আচমকা আমাদের সামনে থাকা কুকুরের উপর হামলা করে বাঘটা। কুকুরের পর বাদলের (বাদল হাঁসদা) উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে সে। নখ দিয়ে ওর পেটে-পিঠে আঁচড় কাটে। বাদলকে বাঁচাতে যাই। তখন আমার পিঠেও নখের আঁচড় বসিয়ে দেয়। কয়েক জন যুবক আমাদের উদ্ধার করে। প্রথমে আমাদের চাঁদড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
অ্যাম্বুল্যান্সে আসতে আসতেও বাদলকে বলছিলাম, দেখ, এই বাঘটা কিন্তু ঠিক বাঘের মতো নয়। খুব ভীতু। না হলে শুধু নখের আঁচড় কেটে চলে যেত না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy