Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

অ্যাম্বুল্যান্স না পেয়ে মারধর ডাক্তারকে, অভিযুক্ত তৃণমূল

লের আহত কর্মীদের চিকিৎসা করাতে গিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স না পেয়ে ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসককে মারধরে নাম জড়াল তৃণমূল নেতা-কর্মীদের। সোমবার রাতের ঘটনা।

আহত চিকিৎসক বিপ্লব মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র

আহত চিকিৎসক বিপ্লব মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বরাবাজার শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:১৬
Share: Save:

তৃণমূল ও বিজেপি কর্মীদের ঝামেলায় ক’দিন আগেই তেতে উঠেছিল পুরুলিয়ার জঙ্গলমহলের বলরামপুর। এ বার দু’দলের সংঘর্ষ বাধল জেলারই আদিবাসী-প্রধান আর এক ব্লক বরাবাজারে। আর সে ঘটনার রেশ গিয়ে পড়ল স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। দলের আহত কর্মীদের চিকিৎসা করাতে গিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স না পেয়ে ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসককে মারধরে নাম জড়াল তৃণমূল নেতা-কর্মীদের। সোমবার রাতের ঘটনা।

তৃণমূলের অভিযোগ, সোমবার রাতে নিশ্চিন্তপুরে তাদের পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী প্রতিমা মাহাতোর স্বামী মনোজ মাহাতোর মাথায় কুডু়লের কোপ মারে বিজেপি কর্মীরা। আরও দুই তৃণমূল কর্মী জখম হন। স্থানীয় সূত্রের খবর, এর পরেই দু’পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় ইট-পাটকেল ছোড়াছুড়ি চলে।

আহত তিন কর্মীকে বরাবাজার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান দলের ব্লক কার্যকরী সভাপতি তথা পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সহ-সভাপতি প্রতুল মাহাতো। কর্তব্যরত ডাক্তার মনোজকে চিকিৎসার জন্য ‘বড় হাসপাতালে’ নিয়ে যেতে বলেন। অভিযোগ, মনোজকে অন্যত্র নিয়ে যেতে অ্যাম্বুল্যান্স না পেয়ে প্রতুলের নেতৃত্বে চিকিৎসক বিপ্লব মণ্ডলকে মারধর করা হয়।

আরও পড়ুন: রাতটার কথায় শিউরে উঠছি

ডাক্তারের অভিযোগ, ‘‘প্রতুলবাবু স্থানীয় রোগীকল্যাণ সমিতির সদস্য হওয়ার দৌলতে ভালই জানেন, এখানে দু’টি মাতৃযান ছাড়া, সাধারণ রোগীদের অ্যাম্বুল্যান্স নেই। তবুও ‘কেন অ্যাম্বুল্যান্স নেই’ বলতে বলতে উনি আমাকে চুলের মুঠি ধরে চড়, ঘুষি মেরে মেঝেতে ফেলে দেন। আমার কপাল ফেটে যায়। আমাকে ওঁর সঙ্গীরা লাথি মারে।’’ বিপ্লববাবুর মাথায় এবং বাঁ হাতে চোট লাগে। মঙ্গলবার সকালে তিনি থানায় প্রতুলবাবু ও অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিলকুমার দত্ত বলেন, ‘‘চিকিৎসকই যদি বিনা কারণে মার খান, তা হলে পরিষেবার কী হবে?’’ যদিও কেউ গ্রেফতার হয়নি।

অভিযুক্ত প্রতুলবাবু, দলের ব্লক সভাপতি সুদর্শন মাহাতোর সঙ্গে এ দিন থানার সামনে পথসভা করে অভিযুক্ত বিজেপি কর্মীদের গ্রেফতারের দাবি জানান। জেলার পুলিশ সুপার জয় বিশ্বাস বলেন, ‘‘তৃণমূলের অভিযোগে ১১ জন গ্রেফতার হয়েছেন। চিকিৎসকের অভিযোগেরও তদন্ত চলছে।’’

ডাক্তারের গায়ে হাত তোলার অভিযোগ অস্বীকার করে প্রতুলবাবুর দাবি, ‘‘অ্যাম্বুল্যান্স না পেয়ে গ্রামের কেউ হয়তো চিকিৎসকের গায়ে হাত দিয়েছেন।’’ ব্লক সভাপতির অভিযোগ, ‘‘লাগোয়া ঝাড়খণ্ড থেকে দুষ্কৃতীদের এনে বিজেপি বরাবাজারকে অশান্ত করতে চাইছে।’’ বিজেপি-র জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর জবাব, ‘‘ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই অ্যাম্বুল্যান্স নেই! এর পরে তৃণমূলের মুখে উন্নয়নের বড়াই সাজে না। নিজেদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে সংঘর্ষকে ওরা বিজেপি-র ঘাড়ে চাপাতে চাইছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Barabazar TMC Injured তৃণমূল
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE