Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

পানীয়ে ফের মেশানো হচ্ছে ‘নিষিদ্ধ’ বরফ

শহরের প্রায় সব জায়গাতেই ঠান্ডা পানীয়ে মাছ-মাংস সংরক্ষণে ব্যবহৃত বরফ ফের মেশানো হচ্ছে। তা দেখে হতাশ হয়ে পুরকর্তাদের বক্তব্য, শুধু পুরসভার অভিযানে এমন চক্র আটকানো যাবে না।

শিল্পে ব্যবহার্য বরফ মিশছে পানীয়ে। সোমবার, ধর্মতলায়। নিজস্ব চিত্র

শিল্পে ব্যবহার্য বরফ মিশছে পানীয়ে। সোমবার, ধর্মতলায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৮ ০৩:৩১
Share: Save:

মাছ, মাংস ও মৃতদেহ সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত বরফ শরবতে অবাধে মেশানো নিয়ে কলকাতা পুরসভা ধারাবাহিক ভাবে অভিযান চালিয়েছে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে টন টন বরফও। কিন্তু গরম পড়তে না পড়তেই রাস্তার ধারের পানীয়ে ফিরেছে সেই বরফ!

শহরের প্রায় সব জায়গাতেই ঠান্ডা পানীয়ে মাছ-মাংস সংরক্ষণে ব্যবহৃত বরফ ফের মেশানো হচ্ছে।
তা দেখে হতাশ হয়ে পুরকর্তাদের বক্তব্য, শুধু পুরসভার অভিযানে এমন চক্র আটকানো যাবে না। সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা ছড়ানো খুব জরুরি।

গত তিন বছর ধরেই ঠান্ডা পানীয়ে মাছ-মাংস সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত বরফ বা ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল আইস’-এর ব্যবহারের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক অভিযান চালাচ্ছে পুরসভা। নিউ মার্কেট, লিন্ডসে স্ট্রিট, ধর্মতলা-সহ একাধিক জায়গায় অভিযান চালানো হয়েছে। চলতি বছরেও দু’-এক বার অভিযান চালিয়েছেন পুরসভার ফুড সেফটি অফিসারেরা। কিন্তু তাতেও খুব একটা লাভ হয়নি বলে স্বীকার করছেন কাউন্সিলরদের একাংশ।

২ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান সাধন সাহা বলেন, ‘‘অনেক জায়গাতেই ঠান্ডা পানীয়ে যে ইন্ডাস্ট্রিয়াল আইস মেশানো হচ্ছে, তা আমাদের নজরে এসেছে। আবার অভিযানে নামা হবে।’’ তবে ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল আইস’-এর এই ব্যবহার বন্ধ করা মোটেই সহজ নয় বলে মন্তব্য সাধনবাবুর।

তবে অনেকে আবার মনে করছেন, রাস্তার পানীয় বিক্রেতাদের ধরে এই সমস্যার সমাধান করা যাবে না। বরফের কলগুলিতেও অভিযান চালাতে হবে। ৬ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান সঞ্চিতা মণ্ডল বলেন, ‘‘খুচরো ব্যবসায়ীদের বরফ বাজেয়াপ্ত করে তো এত বড় সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। যেখানে বরফ তৈরি হয়, সেখানে নজরদারি প্রয়োজন। নিয়ন্ত্রণ সেখানেই করতে হবে।’’

পুরকর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, বরফকল মালিকদের সঙ্গে ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে বৈঠক হয়েছে। কিন্তু পানীয়ে মেশানোর বরফ ও সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত বরফ যতক্ষণ না আলাদা ভাবে চিহ্নিত করা যাচ্ছে, ততক্ষণ এই কাজ আটকানো সম্ভব নয় বলেই বক্তব্য বরফকল মালিকদের একাংশ। তাঁদের এক জন বলেন, ‘‘সংরক্ষণ করবে বলে আমাদের কাছ থেকে কিনে নিয়ে এসে যদি তা পানীয়ে মেশানো হয়, সেটা আমরা বুঝব কী করে!’’ এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘পানীয়ে মেশানোর বরফ ও সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত বরফ আলাদা না হলে এটা আটকানো মুশকিল। তবু আমরা অভিযান করি, যাতে সচেতনতা তৈরি হয়।’’ চলতি সপ্তাহেই ফের অভিযান শুরু হবে বলে পুরসভা সূত্রের খবর।

প্রসঙ্গত, মহারাষ্ট্র সরকার ইতিমধ্যে সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত বরফ আলাদা ভাবে চিহ্নিত করতে জন্য রং ব্যবহার করেছে। কী রং ব্যবহার হচ্ছে, তা জানতে পুর স্বাস্থ্য দফতর তাদের চিঠিও পাঠিয়েছে। তবে এখনও উত্তর মেলেনি। মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করি। কিন্তু সার্বিক ভাবে সংরক্ষণের জন্য বরফের ব্যবহার আটকাতে গেলে কেন্দ্রীয় ভাবে আইন প্রণয়ন প্রয়োজন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Food Ice Bar Food Hygiene Morgue
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE