ক্যামেরা, ড্রোন থেকে সাবেক ফাঁদ খাঁচা— সব ডাহা ফেল। লালগড়ের জঙ্গলে উঁকি মারা বাঘ ধরতে তাই এ বার বন দফতরের ভরসা প্রশিক্ষিত কুকুর।
সুন্দরবনের সজনেখালিতে বন দফতরের ‘ডগ স্কোয়াড’ রয়েছে। সেখান থেকেই আনা হবে প্রশিক্ষিত কুকুর। মূলত চোরাশিকারিদের হদিস জানতে এতদিন এই কুকুর ব্যবহার করা হত। এ বার সে বাঘ খুঁজবে। রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) রবিকান্ত সিংহ বলেন, ‘‘সুন্দরবন থেকে একটি প্রশিক্ষিত কুকুর আনা হচ্ছে। জঙ্গলে বাঘের অবস্থান জানতেই এই পরিকল্পনা।
এতে লাভ হবে তো?
রবিকান্তের জবাব, ‘‘কাজটা না হলে লাভ-ক্ষতি বলা সম্ভব নয়।’’ প্রায় এক মাস হল পশ্চিম মেদিনীপুর-ঝাড়গ্রামের জঙ্গলমহলে ঘাঁটি গেড়েছে সুন্দরবন থেকে বাঘ ধরতে আসা বনকর্মীদের বিশেষ দল। সেই দলের এক সদস্য অবশ্য বলেন, “প্রাথমিক ভাবে কোনও সম্ভাবনাই খারিজ করা যায় না। তবে এটা ঠিক, সুন্দরবনের পরিস্থিতি আর এখানকার পরিস্থিতি এক নয়।”
আরও পড়ুন: খুনের মামলায় বেকসুর, ২৮টা বছর ফেরাবে কে?
প্রশিক্ষিত এই কুকুর ‘স্নিফার ডগ’ বা ‘ডিটেকশন ডগ’ নামে পরিচিতি। গন্ধ শুঁকেই এরা তল্লাশি চালায়। চোরাশিকারিদের ধরতে সুন্দরবনে এই কুকুরদের ব্যবহার করে সাফল্য মিলেছে। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের যে সব জঙ্গলে বাঘের গতিবিধির খোঁজ মিলেছে, প্রশিক্ষিত কুকুরটিকে সেখানে নিয়ে গিয়ে এলাকার গন্ধ শোকানো হবে। বিশেষ করে বাঘের মলের গন্ধ শুঁকিয়ে তাকে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে।
গত এক মাসে বাঘের বিচরণ ক্ষেত্র ক্রমে বেড়েছে। লালগড়ের লেন্স-বন্দি হওয়ার পরে কখনও মেদিনীপুর গ্রামীণের ধেড়ুয়া, চাঁদড়া, কখনও কাঁটাপাহাড়ি, কখনও আবার গোয়ালতোড়ের মহারাজপুর, কাদরার জঙ্গলে বাঘের পায়ের ছাপ মিলেছে। বাঘের আঁচড়-কামড়ে লোকজন জখমও হয়েছেন। বন দফতর মনে করছে, এই মুহূর্তে বাঘটি লালগড়-গোয়ালতোড়ের মাঝামাঝি এলাকায় রয়েছে।
জঙ্গলমহলের এই নয়া হানাদারের হদিস পেতে এই সময়ের মধ্যে কম ফাঁদ পাতা হয়নি জঙ্গলমহলে। নয় নয় করে ন’টা ক্যামেরা, তিনটে খাঁচার ব্যবস্থা হয়েছে। পাশাপাশি উড়েছে ড্রোনও। কোনও কিছুতেই লাভ না হওয়ায় বিকল্প পথ খুঁজছিল বন দফতর। আর সেই ভাবনা থেকেই প্রশিক্ষিত কুকুর আনার সিদ্ধান্ত। জেলার এক বনকর্তার আশা, “যে কুকুরটা আসছে তার ঘ্রাণশক্তি প্রবল। আশা করি কিছু একটা সুরাহা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy