Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

পুলিশকে ধোঁকা দিতে গুরুঙ্গদের অস্ত্র এখন মোবাইল

পুলিশের সন্দেহ, গোড়ায় চারমূর্তি হিসেবে যে ‘টিম’ ছিল, তা ইদানীং খানিকটা পাল্টেছেন গুরুঙ্গ। প্রথম টিমের দু’জন, সঞ্জয় থুলুং ও দাওয়া লেপচা যথাক্রমে নেপাল ও কালিম্পঙের গ্রামে ঘাঁটি গেড়েছেন।

বিমল গুরুঙ্গ। ছবি: সংগৃহীত

বিমল গুরুঙ্গ। ছবি: সংগৃহীত

কিশোর সাহা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:২৭
Share: Save:

পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। দু’টি অভিযানেও হাত ফস্কে গিয়েছেন পুলিশের। এখন তাঁর হদিস পেতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ অন্য সমস্যার মুখোমুখি। পুলিশ ও গোয়েন্দাদের দাবি, নিজের গোপন ঘাঁটিতে বসে মোবাইল ব্যবহার আগেই বন্ধ করেন বিমল গুরুঙ্গ। গোয়েন্দাদের মতে, গুরুঙ্গের ছায়াসঙ্গী হিসেবে এখন যে ‘চারমূর্তি’ রয়েছেন, সেই পেমা গুরুঙ্গ (মোর্চার অন্দরে যিনি গুরুঙ্গের পঞ্চম জীবনসঙ্গিনী হিসেবেই পরিচিত), দুই যুব নেতা দীপেন মালে, প্রকাশ গুরুঙ্গ ও ঠিকাদার প্রবীণ সুব্বা, তাঁরা পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে মূল ঘাঁটি থেকে অন্তত ৫ কিলোমিটার দূরের কোনও লোকালয়ে গিয়ে মোবাইল ব্যবহার করছেন।

পুলিশের সন্দেহ, গোড়ায় চারমূর্তি হিসেবে যে ‘টিম’ ছিল, তা ইদানীং খানিকটা পাল্টেছেন গুরুঙ্গ। প্রথম টিমের দু’জন, সঞ্জয় থুলুং ও দাওয়া লেপচা যথাক্রমে নেপাল ও কালিম্পঙের গ্রামে ঘাঁটি গেড়েছেন। তাই গুরুঙ্গ ও তাঁর চার ছায়াসঙ্গীর ঘাঁটি খুঁজে বার করতে এখন দুর্গম পাহাড়ি গ্রামের মানুষজনকে কাছে টানার চেষ্টা করছে পুলিশ ও গোয়েন্দাদের একাধিক ‘ক্র্যাক-টিম’।

দার্জিলিং পুলিশের এক কর্তা জানান, দু’বার তাঁকে ধরতে অভিযান হয়ে যাওয়ার পরে ‘ফেরার’ মোর্চা সভাপতি নিজের অবস্থান সম্পর্কে পুলিশ ও গোয়েন্দাদের নানা ভাবে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। তিনি জানান, সেটা মাথায় রেখেই প্রতিটি দলকে গ্রামে যোগাযোগ বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তাতে কিছু নতুন তথ্যও সামনে এসেছে।

যেমন, মনে করা হয়েছিল, সিংলা থেকে পালিয়ে গুরুঙ্গ সিকিমে ঢুকেছেন। সেই মতো একটি অডিও বার্তার সূত্র ধরে পুলিশ দেখেছে, তা রঙ্গিতের ও পারে সিকিমের একটি প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে ব্যবহার করা হয়েছে। যেখান থেকে নদী পেরিয়ে প্রায় ৫ কিলোমিটার খাড়াই পথে হাঁটলে দার্জিলিঙের গ্রামে ঢোকা যায়। কিন্তু তার পরেই দেখা গিয়েছে, বার্তা পাঠানোর জায়গা অন্যত্র সরে গিয়েছে। পুলিশ কখনও দেখেছে, পেট্রোল পাম্পে পাম্পকর্মীর মোবাইল ব্যবহার হয়েছে। আবার কখনও জানা গিয়েছে, প্রত্যন্ত গ্রামের মুদি দোকানির মোবাইল ব্যবহার করে সরে পড়েছে গুরুঙ্গের ছায়াসঙ্গীরা। প্রতি ক্ষেত্রে নিজেদের ফোনের ‘ব্যালান্স’ নেই বলে অন্যের মোবাইল ব্যবহার করা হয়েছে বলে পুলিশ জেনেছে।

পুলিশের একাধিক কর্তা একান্তে মানছেন, দুর্গম এলাকায় স্থানীয়দের পাশে না পেলে অভিযানে সফল হওয়া প্রায় দুঃসাধ্য। আগামী অভিযানের আগে তাই পাহাড়বাসীকে কাছে টানাটাও পুলিশের কাছে বড় ‘চ্যালেঞ্জ’। তবে জিটিএ-র কেয়ারটেকার চেয়ারম্যান বিনয় তামাঙ্গ দাবি করেছেন, জঙ্গি আন্দোলন করে যে গোর্খ্যাল্যান্ড হওয়া মুশকিল, তা অনেকেই বুঝেছেন। বাকিদেরও বোঝানোর জন্য তাঁরা গ্রাম স্তরে প্রচারে নেমেছেন বলে বিনয় জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE