কারও অফিস থেকে আকাশ দেখতে না পারলে মন খারাপ হয়।
আকাশে মেঘ জমলে মন খারাপ হয় অনেকের।
একটানা কাজের চাপও অবসাদ ডেকে আনে অনেকের।
অবসাদ থেকে কাজের প্রতি অনীহা তৈরি হয়। কর্মক্ষমতা কমে যায়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, হু-র সমীক্ষা বলছে কর্মক্ষেত্রে কারও কর্মক্ষমতা কমানোর মূল কারণ অবসাদ। যখন-তখন ছুটি নিয়ে নেওয়া, কাজে মনোনিবেশ করতে না পারা— এটাই সব থেকে বেশি কাজের ক্ষতি করে।
শুক্রবার বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসে ‘ওয়ার্ল্ড হেলথ অরগানাইজেশন’ (হু) এ বছরের থিম নির্বাচন করেছে অবসাদ। কর্মক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে অবসাদ নিয়ে সচেতনতা বাডা়নোই উদ্দেশ্য হু-র।
ন্যাশনাল ইনস্টিটউট অব মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড নিউরো সায়েন্সের রিপোর্ট অনুযায়ী, অবসাদগ্রস্থ রাজ্যগুলির মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে স্থান চতুর্থ। এ রাজ্যে সবচেয়ে বেশি মানসিক অবসাদে ভোগেন ষাটোর্ধ্ব মানুষেরা। পুরুষের তুলনায় মহিলারা বেশি অবসাদগ্রস্থ। তবে বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, স্কুলপড়ুয়া থেকে অবসরপ্রাপ্ত, মন খারাপের রোগ রয়েছে সব বয়সেই।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, অবসাদ নিয়ে সচেতনতার অভাব রয়েছে। শরীরে অসুখ বাসা বাঁধলে মানুষ যত দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়, মনের অসুখের ক্ষেত্রে তেমনটা হয় না। কারণ সেই অসুখটা মানতেই অনেক দেরি হয়ে যায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে। এ বিষয়ে মনোবিদ জয়রঞ্জন রাম বলেন, ‘‘যে কোনও বয়সের মানুষের মধ্যেই অবসাদ দেখা দিতে পারে। দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে শারীরিক সমস্যা যেমন এড়ানো যায়, তেমনই কমানো যায় মনের অসুখ। নিজের কর্মদক্ষতাতেও হ্রাস হয় না।’’
মানসিক অবসাদের উপসর্গ কী?
মনো-চিকিৎসকদের মতে, টানা দু-সপ্তাহ মন খারাপ থাকা কিংবা কোনও কাজের মধ্যেই আনন্দ না পাওয়া, আচমকা খিদে বেড়ে যাওয়া কিংবা কমে যাওয়া এবং নেতিবাচক চিন্তাভাবনা গড়ে ওঠা, এগুলো মানসিক অবসাদের লক্ষণ। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, মন খারাপের সঙ্গে শরীরের সম্পর্ক রয়েছে। দুশ্চিন্তা, রেগে যাওয়া—এ সব কারণে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস-সহ একাধিক রোগ দেখা যায়।
মানসিক অবসাদ এত বাড়ছে কেন? মনোবিদদেরা জানাচ্ছেন, বিভিন্ন বয়সে মন খারাপের কারণ আলাদা আলাদা। স্কুলপড়ুয়াদের মধ্যে অবসাদের মূল কারণ, সৃজনশীল কাজের অভাব। অভিভাবকত্ব শুধু স্কুলের রেজাল্ট ভাল হয়েছে কি না দেখেই শেষ হয়না। কিন্তু আধুনিক ব্যস্ত সময়ে সন্তানদের মন ভাল আছে কি না, সেটা দেখভাল ঠিক মতো হচ্ছে না। তাই অল্প বয়সেই অবসাদ গ্রাস করছে। বয়স্কদের একাকীত্ব থেকে অবসাদ দেখা যায়। সময় মতো চিকিৎসকের কাছে গেলে, অন্যান্য রোগের মতোই মানসিক অবসাদও কাটিয়ে ওঠা যায়, আশ্বাস দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy