Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বিরোধীদের মর্যাদার বার্তা, তবু হিংসা অব্যাহত

বিধানসভায় বিরোধীদের মর্যাদা দিতে হবে বলে ফের বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সৌজন্য মেনে বিরোধীরাও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গেল। কিন্তু বিধানসভার ভিতরে যখন এই বাতাবরণ, বাইরে তখন অব্যাহত সন্ত্রাসের অভিযোগ।

হাল্কা মেজাজে। মঙ্গলবার বিধানসভায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে আব্দুল মান্নান ও সুজন চক্রবর্তী।ছবি: সুদীপ আচার্য

হাল্কা মেজাজে। মঙ্গলবার বিধানসভায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে আব্দুল মান্নান ও সুজন চক্রবর্তী।ছবি: সুদীপ আচার্য

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৬ ০৪:৪৫
Share: Save:

পাঁচ বছর আগে প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হয়ে মমতা বিধানসভায় বলেছিলেন, ‘‘বিধানসভা বিরোধীদের।’’ দ্বিতীয় বার মুখ্যমন্ত্রী হয়েও মঙ্গলবার বিধানসভায় স্পিকার নির্বাচনের পরে মমতা বিরোধীদের এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, ‘‘যাদের এক জন সদস্য আছেন, আমি তাদেরও অভিনন্দন জানাচ্ছি। বিধানসভায় আমরা অনেক প্রয়োজনীয় বিষয়ে গঠনমূলক আলোচনা করব।’’ সম্প্রীতি এবং প্রগতির ব্যাপারেও আলোচনার অনুরোধ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘‘কটূক্তি, কুৎসা করবেন না, যাতে একে অপরের সঙ্গে তিক্ত সম্পর্ক হয়। যা হওয়ার হয়েছে। সুন্দর সীমারেখা রেখে সকলের বোঝাপড়া, ভালবাসার মধ্য দিয়ে শুভ উদ্যোগের মধ্য দিয়ে নজির সৃষ্টি করতে হবে। যা পশ্চিমবঙ্গ, ভারতকে পথ দেখাবে।’’ যদিও এর পরে মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, ‘‘হয়তো বলে যাব। হয়তো হবে না। কিন্তু চেষ্টা করতে ক্ষতি কী?’’

এর পর বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন বাম বিধায়করা। বাম পরিষদীয় দলের নেতা সুজন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীকে পুনর্নির্বাচিত হওয়ার জন্য শুভেচ্ছা জানান। একই সঙ্গে শাসক দলের সন্ত্রাস বন্ধের আবেদনও জানান তাঁর কাছে। পরে সুজনবাবু বলেন, ‘‘গঠনমূলক মনোভাব নিয়ে চলব। আশা করব, সরকারও পাল্টা সৌজন্য দেখাবে।’’ সুজনবাবুর বক্তব্য, ভোট মিটে যাওয়ার পরে রাজ্যে বিরোধীদের উপর শাসক দলের আক্রমণ,

লুঠ চলছে। এ সব বন্ধে প্রশাসনের উদ্যোগী হওয়া উচিত। তিনি বলেন, ‘‘এ কথা আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে বলেছি। তিনি পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলতে বলেছেন।’’ শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমি মুখ্যমন্ত্রীকে বলেছি, দয়া করে দেখুন, বিরোধী দলের বিধায়করা যেন জেলায় জেলায় পুলিশ-প্রশাসনের থেকে সম্মান পান। আমি মেয়র। কিন্তু আমিও অনেক সময় প্রাপ্য সম্মান পাই না।’’ অশোকবাবু জানান, এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন পার্থবাবু।

বিধানসভায় যখন এই সৌজন্যের প্রেক্ষাপট, তখন বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছে পূর্ব মেদিনীপুরের সিপিএম জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহির বাড়ির সামনে। এ দিন দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ পাঁশকুড়ার রাতুলিয়া গ্রামে তৃণমূলের বিজয় মিছিল থেকে নিরঞ্জনবাবুর বাড়িতে কয়েকটি বোমা ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। সেই সময়ে তিনি তমলুকে দলীয় কার্যালয়ে বৈঠকে ব্যস্ত ছিলেন। নিরঞ্জনবাবুর অভিযোগ, ‘‘ওই এলাকার বাসিন্দারা জোটের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন। তাই এই ভাবে তাঁদেরও ভয় দেখানোর চেষ্টা হয়েছে।’’ সন্ত্রাসের প্রতিবাদে এ দিনই জেলাশাসকের অফিসের সামনে বিক্ষোভ-অবস্থানে ছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। খবর পেয়ে নিরঞ্জনবাবুর বাড়িতে যান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee Opposition party
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE