এই বাস থেকেই খোয়া যায় প্রশ্নপত্র
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা টেট-এর প্রশ্নপত্র উধাওয়ের ঘটনার এক সপ্তাহ পরেও কার্যত অন্ধকারে সিআইডি। ডাক বিভাগের একাধিক অফিসার থেকে কর্মীকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করার পরেও উধাও হয়ে যাওয়া প্রশ্নপত্রের ওই প্যাকেটের কোনও সন্ধান পাননি গোয়েন্দারা।
এর আগে আইটিআই প্রশ্নপত্র ফাঁসের তদন্ত সিআইডি করলেও এখনও পর্যন্ত মূল মাথাকে গ্রেফতার করতে পারেননি গোয়েন্দারা। এমনকী, কোথা থেকে ওই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছিল তা নিয়ে ধন্দে রয়েছেন তাঁরা। অভিযোগ, টেট-এর প্রশ্নপত্র উধাও হওয়ার ঘটনা ধামাচাপা দিতে চাইছে সিআইডি। এই ঘটনায় অভিযুক্ত দুই বিভাগের কর্মী এবং রাজ্য পুলিশের দুই কর্মীর নাম জড়িয়ে যাওয়া সত্ত্বেও তাঁদের কাউকেই এখনও নিজেদের হেফাজতে নেয়নি সিআইডি। ওই চার জনের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ এনে বিধাননগর উত্তর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিল শিক্ষা দফতর। কিন্তু তার পরেও কেন তাঁদের শুধু জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেওয়া হল তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা।
সিআইডি-র দাবি, ঘটনার দিন পর্ষদ অফিসের সামনে যেখানে বাসটি দাঁড়িয়ে ছিল, সেই জায়গাটি সিসিটিভি-র নজরদারির বাইরে। সিসিটিভি ফুটেজ থেকে পরিষ্কার, পর্ষদ অফিস থেকে ১৫৪টি প্যাকেটই বের হয়েছে। ডাক বিভাগের কর্মীরা জানিয়েছেন, তাঁরা সব প্যাকেট তুলেছেন। তা হলে তার পরে প্যাকেট কোথায় গেল? ডাক বিভাগের ওই কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও তাঁদের কথা পুরো বিশ্বাস করছেন না গোয়েন্দারা। কারণ হিসেবে গোয়েন্দারা বলছেন, বাসের ফাইবার গ্লাস ভেঙে ওই প্যাকেট পড়ে যাওয়ার কোনও প্রমাণ তাঁরা এখনও পাননি। এক গোয়েন্দাকর্তার ব্যাখ্যা, ‘‘প্রশ্নপত্র বোঝাই একটি প্যাকেটের ওজন প্রায় ১০ কেজি। অত বড় ব্যাগ বা প্যাকেট রাস্তায় ছিটকে পড়লে কারও না কারও নজরে পড়ত। তা ছাড়া, একটি প্যাকেট নয়, বাকি প্যাকেটও পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি।’’ তাই গোয়েন্দারা মনে করছেন, রাস্তা নয়, হয়তো পর্ষদের নিবেদিতা ভবনেই যা হওয়ার হয়েছে।
গোয়েন্দাদের এখন অনুমান, রাস্তা নয়, যা হওয়ার হয়েছে সল্টলেকেই। প্যাকেট তোলার পর কেউ হয়তো সেই প্যাকেট নামিয়ে নিয়েছে বাস থেকে। এমন সম্ভাবনা কোনও ভাবে উড়িয়ে দিচ্ছেন না ভবনী ভবনের গোয়েন্দারা। এক তদন্তকারী অফিসার জানিয়েছেন, ওই প্রশ্নের উত্তর জানতে ডাক বিভাগের কর্মীদের পাশাপাশি পর্ষদের কর্মী এবং নিরাপত্তা রক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। উভয়পক্ষকে এক সঙ্গে বসিয়ে জেরা করলেই ওই রহস্যের সমাধান করা সম্ভব হবে। কিন্তু কবে ওই সব কর্মীকে জেরা করা হবে তা নিয়ে কার্যত নিরুত্তর গোয়েন্দারা। আর এখনই ফের প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, টেট-এর প্রশ্নপত্র উধাওয়ের ঘটনা ধামাচাপা দিতেই কি তৎপর সিআইডি?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy