যে আদালতে তাঁর বিচার চলছে, তার বিচারক সর্বোচ্চ তিন বছরের সাজা দিতে পারেন। আর ফৌজদারি আইন বলছে, কোনও অপরাধে যদি সর্বোচ্চ তিন বছর সাজার বিধান থাকে, আর বিচার চলাকালীন অভিযুক্ত যদি দেড় বছরের বেশি কারাগারে বন্দি থাকেন, জামিন দিতে হবে তাঁকে। কুণাল ঘোষ তা হলে কেন জামিন পাবে না?
বুধবার সারদা মামলায় অভিযুক্ত সাংসদ কুণাল ঘোষের জামিন মামলার শুনানির সময়ে এই প্রশ্ন তুললেন হাইকোর্টের বিচারপতি অসীম রায়ই। সিবিআই-এর আইনজীবী কে রাঘবচারিলুকে বিচারপতি এ দিন বলেন, ‘‘ফৌজদারি আইন বলছে, শাস্তির মেয়াদ যতটা হওয়ার কথা, তার অর্ধেকের বেশি সময় কোনও অভিযুক্ত জেলে বন্দি থাকলে আদালত তাকে জামিন দেবে। আপনাদের মূল মামলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে বিচারাধীন। কাউকে তিন বছরের বেশি শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা তো ম্যাজিস্ট্রেটের নেই। এ ক্ষেত্রে এই মামলায় অভিযুক্ত (কুণাল) দু’বছরের বেশি জেলে রয়েছেন।’’
মঙ্গলবার কুণালের জামিন মামলার শুনানিতে সিবিআই-এর এই বিশেষ আইনজীবী হাজির থাকতে না-পারায় হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই-এর এসপি উপেন্দ্র অগ্রবাল সওয়াল করেন। ওই দিন শুনানি শেষ হয়নি। এ দিন মামলাটি ফের শুনানির জন্য ওঠে। এ দিন সকালেই দিল্লি থেকে উড়ে এসে রাঘবচারিলু আদালতে পৌঁছে যান।
মঙ্গলবার উপেন্দ্র দাবি করেছিলেন, তদন্তের স্বার্থে কুণালকে এখনও জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে। ডিভিশন বেঞ্চের দুই বিচারপতি অসীম রায় ও মলয়মরুত বন্দ্যোপাধ্যায় সিবিআই-এর আইনজীবীর কাছে এ দিন পাল্টা জানতে চান, কুণালের কাছ থেকে নতুন কী তথ্যপ্রমাণ মিলেছে? তাঁকে আরও আটকে রাখার কেন প্রয়োজন?
রাঘবচারিলু জানান, কুণাল ঘোষ ‘ইকনমিক স্ক্যাম’-এ (আর্থিক কেলেঙ্কারি) জড়িত। বিচারপতি অসীম রায় তা শুনে বলেন, ‘‘আপনি ইকনমিক স্ক্যাম বলতে কি বোঝাতে চাইছেন?’’ রাঘবচারিলু জানান, যে আর্থিক কেলেঙ্কারি জনসমাজে প্রভাব ফেলেছে তা-ই ‘ইকনমিক স্ক্যাম’। তা শুনে বিচারপতি অসীম রায় আইনের একটি বই সিবিআই-এর আইনজীবীর হাতে তুলে দিতে নির্দেশ দেন আদালতের এক অফিসারকে। তার পরে বিচারপতি রায় রাঘবচারিলুর উদ্দেশে বলেন, ‘‘আইন প্রণেতারা যে আইন করেছেন, সেই আইনে অভিযুক্তের অপরাধ ‘ইকনমিক স্ক্যাম’ কি না দেখে নিন।’’
এ দিনও কুণালের জামিন মামলার এই শুনানি শেষ হয়নি। ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ৪ অক্টোবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy