Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

নিয়ম মানা হল না কেন, প্রশ্ন মালদহে

তিন বছর আগে তাঁর হাতেই তৈরি হয়েছিল বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করার সময় ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর’ বা এসওপি। অথচ সেই সৈয়দ ওয়াকার রেজার জেলাতেই সোমবার ঘটে গেল ভয়াবহ দুর্ঘটনা। যা নিয়ে ২৪ ঘণ্টা পরেও সব স্তরে চাপানউতোর চলছে।

বোমা নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে নিহত এএসআই বিশুদ্ধানন্দ মিশ্রকে শেষ শ্রদ্ধা আত্মীয়ার। মঙ্গলবার। ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায়

বোমা নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে নিহত এএসআই বিশুদ্ধানন্দ মিশ্রকে শেষ শ্রদ্ধা আত্মীয়ার। মঙ্গলবার। ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায়

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ ও কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৬ ০৪:৫৮
Share: Save:

তিন বছর আগে তাঁর হাতেই তৈরি হয়েছিল বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করার সময় ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর’ বা এসওপি। অথচ সেই সৈয়দ ওয়াকার রেজার জেলাতেই সোমবার ঘটে গেল ভয়াবহ দুর্ঘটনা। যা নিয়ে ২৪ ঘণ্টা পরেও সব স্তরে চাপানউতোর চলছে। এক দিকে যেমন পরস্পরকে দোষারোপ করে পথে নেমেছে শাসক দল ও বিরোধী জোট, অন্য দিকে তেমনই মৃত পুলিশ কর্মীদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে জেলা পুলিশকর্তাদের। এক মৃতের স্ত্রী এমনকী এ-ও প্রশ্ন করেছেন, পর্যাপ্ত বোমা-নিরোধক পোশাক থাকবে না কেন? সঙ্গে তাঁরই খেদোক্তি, ‘‘এ রাজ্যে ক্লাবের মধ্যে টাকা বিলি করা হয়। কিন্তু পুলিশের জন্য কিছু করা হয় না।’’

প্রাথমিক তদন্ত কিন্তু বলছে, উদ্ধার হওয়া বোমার মশলা বা বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করার সময় তাড়াহুড়ো করেছিল সিআইডি-র বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াড। মাটি খুঁড়ে গর্ত করে তাতে প্রাথমিক পরীক্ষা ছাড়াই উদ্ধার হওয়া বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করতে গিয়েছিল তারা। আর তাতেই দুর্ঘটনা। এসওপি অনুযায়ী, এই কাজের সময় ঘটনাস্থলে দমকলের ইঞ্জিন ও চিকিৎসক দল থাকার কথা। সোমবার মালদহের বৈষ্ণবনগরের ভগবানপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে তা-ও ছিল না বলে জানিয়েছে ভবানীভবন। সিআইডির অভিযোগ, সব কিছু কাছাকাছি থাকলে হয়তো এমন ভাবে প্রাণ হারাতে হতো না তাঁদের দুই সহকর্মী বিশুদ্ধানন্দ মিশ্র ও সুব্রত চৌধুরীকে।

তিন বছর আগে, ২০১৩ সালে আলিপুরদুয়ারে এমনই এক ঘটনার পরে বিস্ফোরক সামলানো নিয়ে রাজ্য পুলিশের সর্বস্তরের জন্য একটি সতর্কতার তালিকা তৈরি করেন ওয়াকার রেজা। এখন তিনি মালদহের পুলিশ সুপার। রবিবার গভীর
রাতে বোমা বিস্ফোরণে চার তৃণমূল কর্মীর মৃত্যু হয়। সে খবর পাওয়ার পরে সোমবার ঘটনাস্থলে পুলিশের যে দলটি যায়, তাতে রেজাও ছিলেন। তাঁর সামনেই দু’ধরনের বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়। রেজার অবশ্য দাবি, ‘‘আমি ঘটনাস্থল থেকেই আগেই চলে গিয়েছিলাম। তাই কী ভাবে এটা হল, বলতে পারব না। তবে সমস্ত দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ মৃতের পরিবারদের সমবেদনা জানিয়ে তাঁদের ক্ষোভ কিছুটা কমাতে চেয়েছেন সিআইডি এডিজি রামফল পাওয়ার। একই সঙ্গে ওই পুলিশকর্মীদের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘সন্দেহজনক বস্তু পড়ে থাকলে ক্ষেত্রে বিস্ফোরক নিরোধক পোশাক অবশ্যই ব্যবহার করা হয়। এ ক্ষেত্রে বিস্ফোরক আগেই উদ্ধার হয়েছিল। তার পরে কী ভাবে বিস্ফোরণ হল, তা নিয়ে তদন্ত হচ্ছে।’’

এতে অবশ্য শান্ত হচ্ছেন না বিশুদ্ধানন্দের স্ত্রী পাপিয়া। পুলিশের জন্য পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা না করার জন্য তিনি সোজাসুজি সরকারকে দুষেছেন। যেমন সিপিএম এবং কংগ্রেসও দুষেছে শাসক দলকে। যদিও তৃণমূলের তরফে বলা হয়েছে, এখানে সিপিএম এবং কংগ্রেস শক্তিশালী। তারা কেন এই কাজ গুলি বন্ধ করতে পদক্ষেপ করেনি?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

tmc Malda
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE