পৌষস্য প্রথম দিবসে টালমাটাল পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার সুখবর দিল শীত। নিম্নচাপ, পশ্চিমি ঝঞ্ঝার পরে অবশেষে থিতু হচ্ছে সে।
রবিবার, সপ্তাহখানেক পরে কলকাতার রাতের তাপমাত্রা ফের চলতি সময়ের স্বাভাবিকের থেকে নীচে নেমে গেল। আবহাওয়া দফতর জানায়, এ দিন মহানগরীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি কম। দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জেলাতেও রাতের পারদ নিম্নমুখী। বীরভূমের শ্রীনিকেতনে এ দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০.৫ ডিগ্রির। তরাই-ডুয়ার্সের তাপমাত্রা ১৩-১৪ ডিগ্রির আশেপাশে রয়েছে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানান, আপাতত কয়েকটা দিন কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের সর্বত্র তাপমাত্রা এমনই থাকবে। কমবেশি মালুম হবে উত্তুরে হাওয়ার দাপটও।
এ বার গোড়া থেকেই শীতের পথে কাঁটা ছড়ানো। গভীর নিম্নচাপ, ঘূর্ণাবর্তের ধাক্কায় বারবার হোঁচট খেয়েছে উত্তুরে হাওয়া, নেমে গিয়েও ফের চড়েছে রাতের পারদ। তাই আমবাঙালির প্রশ্ন, এ বার কত দিন থিতু হবে শীত? বড়দিনে কি আদৌ উত্তুরে হাওয়ার দেখা মিলবে?
এ ব্যাপারে এখনই নিশ্চিত ভাবে কিছু বলতে রাজি নন হাওয়া অফিসের বিজ্ঞানীরা। আবহাওয়া দফতরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, মঙ্গলবার নাগাদ কাশ্মীরে আবার একটি পশ্চিমি ঝঞ্ঝা (ভূমধ্যসাগরীয় এলাকা থেকে বয়ে আসা ঠান্ডা ভারী হাওয়া, যার প্রভাবে উত্তর ভারতের পাহা়ড়ি এলাকায় তুষারপাত হয়) হাজির হবে। তার ফলে ওই এলাকার তাপমাত্রা সাময়িক ভাবে বাড়বে। গাঙ্গেয় বঙ্গের শীত নির্ভর করে উত্তুরে হাওয়ার উপরে। কাশ্মীর-সহ উত্তর-পশ্চিম ভারতে তাপমাত্রা বাড়লে উত্তুরে হাওয়া দু্র্বল হয়ে যাবে। ফলে গাঙ্গেয় বঙ্গে তাপমাত্রার পতনও আটকে যাবে সাময়িক ভাবে।
আরও পড়ুন: ওভারহেড তার ছিঁড়ে স্তব্ধ ট্রেন
‘‘ওই পশ্চিমি ঝঞ্ঝার প্রভাবে কাশ্মীর এবং লাগোয়া এলাকায় ঠিক কেমন তুষারপাত হচ্ছে, তার উপরে বড়দিনের শীত অনেকটাই নির্ভর করবে,’’ বললেন গণেশবাবু।
আবহবিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা, ঝঞ্ঝাটি তুষারপাত ঘটিয়ে উত্তর ভারত থেকে সরে গেলেই ফের কনকনে ঠান্ডা পড়বে সেখানে। উত্তুরে হাওয়া সেই ঠান্ডার কিছুটা বয়ে নিয়ে আসবে বাংলার দিকে। সাধারণত উত্তর-পশ্চিম ভারতে জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়ার পরে সেই হাওয়া এ রাজ্যে পৌঁছতে দিন চারেক লাগে। সেই হিসেবে প্রবল তুষারপাত ঘটিয়ে বৃহস্পতিবার নাগাদ ঝঞ্ঝাটি সরলে বড়দিনে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে জাঁকিয়ে শীত পড়তে পারে। কিন্তু ঠান্ডাবাহী উত্তুরে হাওয়ার বদলে ওই ঝঞ্ঝা নিজেই উত্তর ভারত থেকে এ রাজ্যের দিকে বয়ে এলে বাঙালির শীত-ভাগ্যে আবার ঘোরতর প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিতে পারে।
অতএব? অতএব বড়দিনে শীতের আমেজ কতটা কী মিলবে, তার খবর পেতে ওই ঝঞ্ঝার মেজাজের উপরেই নির্ভর করতে হচ্ছে হাওয়া অফিসকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy