Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

আসানসোলের যুবক নিখোঁজ নেপালে

স্বদেশবাবু জানান, গত ১২ সেপ্টেম্বর দুপুরে ছেলে ফোন করে দু’লাখ টাকা চান। বলেন, ‘দরকার আছে’। ওই দিনই ব্যাঙ্ক মারফত টাকা পাঠান স্বদেশবাবু। ১৩ সেপ্টেম্বর দুপুরে ছেলের সঙ্গে ফোনে শেষ বার কথা হয় সত্তর ছুঁইছুঁই ‘বাবা’র। সে দিন অরিন্দম বলেছিলেন, ‘থ্যাঙ্ক ইউ’।

অরিন্দমের ছবি হাতে বাবা-মা। নিজস্ব চিত্র

অরিন্দমের ছবি হাতে বাবা-মা। নিজস্ব চিত্র

সুশান্ত বণিক
আসানসোল শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:৩০
Share: Save:

বাবার কাছে দু’লক্ষ টাকা চেয়ে নেপাল থেকে ফোন করেছিলেন ছেলে। টাকা পাঠিয়ে দেওয়ায় আসানসোলে থাকা বাবাকে ফোনেই দিয়েছিলেন ধন্যবাদ। কিন্তু তার পরে গত তিন দিন ধরে খোঁজ নেই সেই যুবকের। তাঁর সন্ধানে নেপাল এবং এ রাজ্যের পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন পরিজনেরা।

পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলের মাস্টারপাড়ার বাসিন্দা স্বদেশ বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী পান্নাদেবীর ছেলে বছর ৩৯-এর অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায় স্ত্রী অলিভ পুনমের সঙ্গে ২০১৩ সাল থেকে কাঠমান্ডুতে থাকেন। অরিন্দম একটি বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানির ‘সেলস ম্যানেজার’। অলিভ নেপালেই একটি স্কুলে পড়ান। স্বদেশবাবু জানান, গত ১২ সেপ্টেম্বর দুপুরে ছেলে ফোন করে দু’লাখ টাকা চান। বলেন, ‘দরকার আছে’। ওই দিনই ব্যাঙ্ক মারফত টাকা পাঠান স্বদেশবাবু। ১৩ সেপ্টেম্বর দুপুরে ছেলের সঙ্গে ফোনে শেষ বার কথা হয় সত্তর ছুঁইছুঁই ‘বাবা’র। সে দিন অরিন্দম বলেছিলেন, ‘থ্যাঙ্ক ইউ’।

কী ভাবে নিখোঁজ হলেন অরিন্দম? স্বদেশবাবু জানান, গত ১৪ সেপ্টেম্বর অলিভ তাঁদের ফোনে জানান, অরিন্দম ফি দিনের মতো সকালে কাজে যাচ্ছেন বলে বেরোন। আর ফেরেননি। অলিভ ওই রাতেই নেপালের থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। এই অবস্থায় আসানসোলের বাড়িতে বসে বৃদ্ধ দম্পতির আক্ষেপ, ‘‘বিদেশে বউমা এখন আতান্তরে পড়েছে। ছেলেটা কোথায়, কেন গেল, বুঝতে পারছি না!’’

স্বদেশবাবু আসানসোল দক্ষিণ থানার দ্বারস্থ হয়েছেন। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি (সেন্ট্রাল) বরুণ বৈদ্য বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে নবান্ন মারফত বিদেশ মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করছি।’’ এক পুলিশ-কর্তার দাবি, প্রাথমিক তদন্তে তাঁরা জেনেছেন, বাজারে অরিন্দমবাবুর বেশ কিছু টাকা ধার রয়েছে। তিনি ‘নিখোঁজ’ হওয়ার পরেও প্রায় প্রতিদিন তাগাদা দিতে কাঠমান্ডুর বাড়িতে তাঁর স্ত্রী-র কাছে যাচ্ছেন পাওনাদারেরা। পুলিশ-কর্তাদের একাংশের অনুমান, এই ঘটনার সঙ্গে নেপালের জুয়া-চক্রের যোগ থাকতে পারে।

শনিবার মাস্টারপাড়ায় গিয়ে দেখা গেল, ছেলের ছবি হাতে বসে রয়েছেন স্বদেশবাবু ও পান্নাদেবী। পান্নাদেবীর কথায়, ‘‘অরিন্দম বলেছিল, পুজোয় ছুটি কাটাতে এখানে আসবে। এখন বুঝতে পারছি না, কী হবে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE