Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

মিষ্টিমুখ

সুভাষ ঘাই-এর নতুন ছবি। নায়িকা বাঙালি। মিষ্টি। কেমন তিনি?মিষ্টি দই। রসগোল্লা। গোলাপ জাম। এ সব আবার অভিনেতারা খান নাকি? ‘কাঞ্চী’ ছবির নবাগতা নায়িকা মিষ্টি-র কোনও আপত্তি নেই। “আমি সব খাই,” বলে এক গাল হাসি। তার পর মিষ্টি দইয়ের ভাঁড় থেকে এক চামচ তুলে নিয়ে খাওয়ালেন সহ অভিনেতা কার্তিক আরিয়ানকে। পরের স্কুপটা নিজের জন্য।

মিষ্টি-কার্তিক। ছবি: কৌশিক সরকার।

মিষ্টি-কার্তিক। ছবি: কৌশিক সরকার।

শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৪ ০০:০০
Share: Save:

মিষ্টি দই। রসগোল্লা। গোলাপ জাম। এ সব আবার অভিনেতারা খান নাকি? ‘কাঞ্চী’ ছবির নবাগতা নায়িকা মিষ্টি-র কোনও আপত্তি নেই। “আমি সব খাই,” বলে এক গাল হাসি। তার পর মিষ্টি দইয়ের ভাঁড় থেকে এক চামচ তুলে নিয়ে খাওয়ালেন সহ অভিনেতা কার্তিক আরিয়ানকে। পরের স্কুপটা নিজের জন্য।

এই যে এতদিন শ্যুটিং করলেন এক সঙ্গে, মুম্বই থেকে হিমাচলের গ্রামে সব থেকে সুন্দর মুহূর্ত কোনটা ছিল? এক মিনিট ভাবলেন মিষ্টি। “প্রথমে কার্তিক আর আমার একটা কমপ্যাটিবিলিটি টেস্ট হয়েছিল। মাথায় ঘোমটা পরিয়ে দেওয়া হয়েছে আমাকে। কার্তিককে বলা হয়েছিল তা সরিয়ে দিতে। খুব সুন্দর একটা মুহূর্ত তৈরি হয়েছিল,” বলছিলেন মিষ্টি।

আর কার্তিক? তার মনে পড়ে গেল অন্য এক অভিজ্ঞতার কথা। “একটা চুম্বন দৃশ্য ছিল। আমার বাড়িতে শ্যুটিং। আমি মিষ্টিকে চুমু খেতে যাচ্ছি। হঠাত্‌ দেখি পেছন থেকে আমার বাবা ঘরে ঢুকে পড়েছেন। ছবিতে বাবার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন অনিল মাঙ্গে। ওই দৃশ্য আমি অনিলকে চোখে ইশারা করে জানাই যে আমাদের যেন বেকায়দায় না ফেলেন। ঘর থেকে বেরিয়ে যান। আর তিনি ইশারা বুঝে সেখান থেকে সরে আসেন! ওটা শ্যুট করতে দারুণ লেগেছিল,” বলেন কার্তিক, যিনি এর আগে অভিনয় করেছেন ‘প্যায়ার কা পঞ্চনামা’ আর ‘আকাশবাণী’তে।

ব্যক্তিগত জীবনেও কার্তিকের ‘মিষ্টি মুহূর্ত’ বলতে তাঁর বাবাকে ঘিরেই। “আমার বাবা-মা দু’জনেই ডাক্তার। বাবা আর আমি হলাম ‘সায়লেন্ট লাভারস’। বেশি কথা হয় না কিন্তু আমরা ইমোশনালি খুব অ্যাটাচড। এক বার বাবাকে জন্মদিনে মেসেজ করে লিখেছিলাম দুনিয়ার সব থেকে ভাল বাবা তিনি। সেই দেখে বাবা কেঁদে ফেলেন। আজও সে মুহূর্ত ভোলার নয়,” স্মৃতিতে চলে যান কার্তিক।

মিষ্টি যে সেই একই প্রশ্নের উত্তরে তাঁর শ্যাডোর প্রসঙ্গ তুলে আনবেন তা অজানা ছিল না। কারণ কলকাতায় তাঁর পরিচিতরা শ্যাডোর প্রতি তাঁর টানের কথা প্রায়শই বলে থাকেন। “আপনিও শ্যাডোর কথা জানেন?” আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞেস করলেন তিনি। চোখ তাঁর চকচক করে ওঠে স্পিটজের গল্প করতে গিয়ে। “পাঁচ বছর আগে যে দিন ওকে বাড়িতে নিয়ে এসেছিলাম সে দিন ওর বয়স ২২ দিন। স্পেশাল ছিল দিনটা। এখন শ্যাডো আমার বাড়ির সদস্য। ইন ফ্যাক্ট শি ইজ মাই সিস্টার! মুম্বই নিয়ে গিয়েছি ওকে,” বলছেন তিনি।

“সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে বাংলা ছবিতে কাজ করতে চাই।

কিন্তু এমন বাংলা ছবি আমি করব না যেখানে আমি একটা প্রপ”

পাঁচ বছর পরে সুভাষ ঘাই আবার সিনেমা করছেন। ট্রেলর দেখে মনে হয় পুরো ছবিটাই প্রায় মিষ্টির কাঁধে। নিষ্পাপ চেহারার এক মেয়ে যার মধ্যে রয়েছে রুখে দাঁড়াবার এক অসীম শক্তি। ব্যক্তিগত ভাবে মিষ্টির মধ্যে কার্তিক কী এমন লক্ষ্য করেছেন যা দেখে মনে হয়েছিল বিডি মোমেোরিয়ালের প্রাক্তন ছাত্রী এই চরিত্রে একদম রাইট চয়েস? “ও ভীষণ কনফিডেন্ট। শী ক্যান বি ডিসেপটিভ ইন এ পজিটিভ ওয়ে। অনেক ঝামেলার মধ্যে দিয়ে গেলেও ওকে দেখে তা বোঝা যাবে না। মিষ্টি কাঞ্চী হওয়ার যোগ্য,” বলেন কার্তিক।

প্রশ্ন করা হল মিষ্টির ফেলে আসা কলকাতার জীবন সম্পর্কে। কতটা ওয়াকিবহাল কার্তিক? জানেন কি সুভাষ ঘাইয়ের মতোই মিষ্টিও ছোটবেলায় বাবামায়ের ছাড়াছাড়ি হতে দেখেছিলেন। মানুষ হয়েছেন দাদু, দিদা আর মায়ের সঙ্গে। ফিল্মে অভিনয়ের আগে মিষ্টির পরিচয় ছিল ইংরেজি দিদিমনি হিসাবে। ছাত্রীদের কাছে তাদের প্রিয় ইন্দ্রাণী মিস। ইংরেজি বলার ধরনটাও বেশ অন্যদের থেকে আলাদা। খানিকটা অ্যাকসেন্ট দিয়ে। “ না, অ্যাকসেন্ট নয় তো। এ ভাবেই তো আমি কথা বলি,” বলেন মিষ্টি। কিন্তু তা মানতে রাজি নন কার্তিক। বলেন, “আমরা কিন্তু মিষ্টির মতো করে ইংরেজিটা বলি না। তবে ও যে ভাবে কথাগুলো বলে সেটা ওর চেহারা আর পার্সোনালিটির সঙ্গে দারুণ মানিয়ে যায়। একদম মনে হয় না যে অ্যাকসেন্টটা ফেক।”

কলকাতা থাকাকালীন বাঙালি পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করছেন মিষ্টি। অভিনয় করেছিলেন ‘বৈদেহীর খোঁজে রবীন্দ্রনাথ’ নামে এক ডকু ফিচারে। জিনাত আমনকে নিয়ে সঙ্ঘমিত্রা রায় চৌধুরীর কাজ করেছিলেন এক সংক্ষিপ্ত চরিত্রে। তা ছাড়া প্রসেনজিতের মেয়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন রূপালি বসুর পরিচয়ে। সুভাষ ঘাইয়ের সঙ্গে তিনটে ছবির কনট্র্যাক্ট রয়েছে।

এর পর কি টলিউডের ছবি করতে চাইবেন তিনি? “ঋতুপর্ণ ঘোষের ছবিতে কাজ করার ইচ্ছে ছিল। সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করতে চাইব,” বলছেন মিষ্টি। আর দেব? মূলধারার বাংলা বাণিজ্যিক ছবি কি তাঁকে আকর্ষণ করে? “আমি রাজি। কিন্তু এমন বাংলা ছবি আমি করব না যেখানে আমি একটা প্রপ,” সাফ জানিয়ে দেন তিনি।

এ না হয় গেল কেরিয়ারের প্ল্যান। আর ব্যক্তিগত জীবন? চারিদিকে মিষ্টি আর কার্তিকের অনস্ত্রিন কেমিস্ট্রি নিয়ে নানা গুজব। যেমন ফিল্মের আগে অভিনেতাদের ঘিরে হয়ে থাকে। তবে দু’জনেই তাঁরা বলেন ফেসবুকে তাঁদের রিলেশনশিপ স্টেটাস সিঙ্গল। “শু্যটিং করতে এক সঙ্গে সূর্যাস্ত দেখেছি। আড্ডা দিয়েছি। চুম্বন দৃশ্যে অনেক রিটেক দিয়ে একটা শট দিয়েছি,” খিলখিলিয়ে হেসে বলেন মিষ্টি।

কিন্তু এ কথা কি মিষ্টি জানেন যে কলকাতা বলছে তাঁর রিলেশনশিপ স্টেটাস মোটেই সিঙ্গল নয়? “যাকে নিয়ে বলছেন তিনি কি আপনার সামনে বসে আছেন?” পাল্টা প্রশ্ন করেন তিনি? উত্তর বলা হয়, না। শোনা যাচ্ছে সাক্ষাত্‌কার শেষ হলে তিনি নাকি মিষ্টির সঙ্গে দেখা করতে আসবেন। “শ্যাডোর কথা শুনেছেন। এটাও শুনেছেন?” বলে আবার হাসি। যাওয়ার আগে প্রশ্ন ছিল যে রিলেশনশিপ স্টেটাসটা কি ফাঁকা রেখে দেওয়াই শ্রেয়? হোটেলের ঘরের হালকা আলোয় কতটা ব্লাশ করছেন তিনি তা বোঝা গেল না। উত্তরে মিষ্টি হেসে বললেন, “দিন....”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

subhas ghai new film kanchi heroine misti
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE