Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

সোনমের বং কানেকশন

রেখা অভিনীত ‘খুবসুরত’-এর রিমেকে সোনম কপূর। বাঙালি ফিজিওথেরাপিস্টের ভূমিকায়। লিখছেন প্রিয়াঙ্কা দাশগুপ্ত।মনে আছে হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায়ের ‘খুবসুরত’-এর রেখাকে? দুই বিনুনি বাঁধা সেই মঞ্জু? দিদির শ্বশুরবাড়িতে এসে যিনি প্রায় হাঙ্গামাই বাধিয়ে দিয়েছিলেন। দিদির শাশুড়ি নির্মলাদেবীর নিয়মানুবর্তিতা নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত বাড়াবাড়িকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে যিনি গেয়েছিলেন ‘সারে নিয়ম তোড় দো’? সেই ‘খুবসুরত’-এর রিমেক করছে বলিউড। মুখ্য ভূমিকায় সোনম কপূর। পরিচালক এক বঙ্গসন্তান। নাম শশাঙ্ক ঘোষ। রিমেক হলেও সোনমের ‘খুবসুরত’ কিন্তু রেখার ছবির থেকে যথেষ্ট আলাদা।

সোনম কপূর

সোনম কপূর

শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৪ ০০:১৬
Share: Save:

মনে আছে হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায়ের ‘খুবসুরত’-এর রেখাকে? দুই বিনুনি বাঁধা সেই মঞ্জু? দিদির শ্বশুরবাড়িতে এসে যিনি প্রায় হাঙ্গামাই বাধিয়ে দিয়েছিলেন। দিদির শাশুড়ি নির্মলাদেবীর নিয়মানুবর্তিতা নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত বাড়াবাড়িকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে যিনি গেয়েছিলেন ‘সারে নিয়ম তোড় দো’?

সেই ‘খুবসুরত’-এর রিমেক করছে বলিউড। মুখ্য ভূমিকায় সোনম কপূর। পরিচালক এক বঙ্গসন্তান। নাম শশাঙ্ক ঘোষ। রিমেক হলেও সোনমের ‘খুবসুরত’ কিন্তু রেখার ছবির থেকে যথেষ্ট আলাদা। তার প্রধান কারণ হল ২০১৪-তে বসে তো এমন কোনও মেয়েকে পাওয়া দুষ্কর যিনি কাজকম্ম ফেলে তাঁর দিদির শ্বশুরবাড়িতে এসে দিনের পর দিন বসে থাকবেন। “সে সব হয়তো সুরজ বরজাতিয়ার ফিল্মে হয়ে থাকে। আমাদের ফিল্মে কিন্তু ও রকমটা নেই,” হাসতে হাসতে বলছেন পরিচালক।

তা হলে নতুন ‘খুবসুরত’য়ে আছেটা কী? মূল ছবিতে রেখা এসেছিলেন তাঁর দিদির শ্বশুরবাড়িতে। এখানে সোনম এমন কিছুই করছেন না। তিনি পেশায় চিকিত্‌সক। আর কাজের সূত্রেই তিনি এসে পড়েন নির্মলা দেবীর পরিবারে। “মূল ছবি থেকে আমি একটাই জিনিস নিয়েছি। তা হল দু’টো আলাদা ধরনের আদর্শের মধ্যে সংঘাত। এক দিকে ফ্রি স্পিরিট। অন্য দিকে পারিবারিক মূল্যবোধ, নিয়মানুবর্তিতা,” বলছেন শশাঙ্ক।

ছবির সবচেয়ে বড় চমক অবশ্য সোনম নিজেই। কারণ? হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায়ের ছবিতে রেখা কোনও বাঙালি মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেননি। শশাঙ্কের ছবিতে সোনমের নাম মিলি চক্রবর্তী। থাকেন দিল্লিতে। পেশায় ফিজিওথেরাপিস্ট। সেই সূত্রে তিনি এক রাজপরিবারে আসেন। কী কারণে সোনম এই পরিবারে এসে পড়েন, সেটা এখনই কেউ বলতে নারাজ।


অরিজিনাল ‘খুবসুরত’য়ে রেখা।

অরিজিনাল ছবিতে রেখা যাঁর প্রেমে পড়েন, সেই রাকেশ রোশন ছিলেন চিকিত্‌সক। তবে ফিজিওথেরাপিস্ট নন। তা হলে কি এই নতুন ছবিতে দুই চরিত্রের পেশাকে ইচ্ছে করে ওলটপালট করে দেওয়া হয়েছে? “আপাতত এই নিয়ে কিছুই বলব না। এটুকু বলব যে আমাদের ছবিতে একটি চরিত্রই পেশায় ডাক্তার। আর সে হল সোনম,” বলছেন ছবির সহ-প্রযোজক ও সোনমের বোন রিয়া কপূর।

যেহেতু এই প্রথম সোনমকে দেখা যাবে এক বাঙালি চরিত্রে, তাঁকে কি বাংলা বলতে দেখা যাবে? পরিচালক নিজেও প্রবাসী বাঙালি। এর আগে পরিচালনা করেছেন ‘অ্যায়সা ভি হোতা হ্যায় ২’ আর ‘কুইকগান মুরুগান’। বলিউড তারকারা সিনেমায় বাংলা বলতে গেলে অনেক ক্ষেত্রেই গণ্ডগোল করে থাকেন। বং কানেকশন থাকলেও শশাঙ্ক জোর করে সোনমকে দিয়ে কোনও বাংলা কথা বলাননি ছবিতে।

হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায়ের ছবিতে নির্মলা দেবী এক মধ্যবিত্ত পরিবারের কর্ত্রী। তাঁর তৈরি নিয়মকানুন মেনেই সবাইকে চলতে হয়। খাবার টেবিলে সকাল ৮-টার মধ্যে না পৌঁছলে ব্রেকফাস্ট বাতিল হয়ে যায়। বাড়ির কর্তাকেও তবলার চর্চা করতে গেলে চুপিচুপি চলে যেতে হয় চিলেকোঠার ছাতে! এমন এক পরিবারে হঠাত্‌ এসে হাজির রেখা। আর প্রেমে পড়ে যান তাঁর দিদির দেওর, অর্থাত্‌ নির্মলা দেবীর ছেলের সঙ্গে। অরিজিনাল ছবিতে লভস্টোরিটা খুব বড় করে দেখানো হয়নি। কিন্তু নতুন ছবিতে সোনম আর পাকিস্তানি অভিনেতা ফোয়াদ খান-এর লভস্টোরিটাই প্রাধান্য পাবে।

আরও এক পার্থক্য হল নতুন ‘খুবসুরত’-এর রয়্যালটি অ্যাঙ্গল। মূল ছবিতে নির্মলা দেবীর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন দীনা পাঠক। এই ছবিতে সেই চরিত্রে দীনা-কন্যা রত্না পাঠক শাহ্‌। “নির্মলা দেবীর পরিবারের সবাই কিছু আদবকায়দায় বিশ্বাস রাখেন। তা নিয়েই সংঘাত,” জানাচ্ছেন পরিচালক।


সোনম-রিয়া।

ট্রেলারে সোনমকে দেখা যায় ফোয়াদকে বলতে ‘তুমহে দেখকে গণ্ডে গণ্ডে খয়াল আ রহে হ্যায়’। হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায়ের ছবির প্রেক্ষাপট ছিল ৮০-র দশকের মুম্বই। সেখানে প্রেম নিবেদন মানে নায়িকার ঘরে গোলাপ রেখে আসা। প্রেমিক রাকেশ রোশনের মুখ দিয়ে ঘনিষ্ঠ হওয়ার কথা উঠলেও রেখা এ প্রসঙ্গে নীরব। কাট টু ২০১৪। সোনম আজকের দিনের খুবসুরত নারী। নিজমুখে প্রেমিককে ঘনিষ্ঠ হওয়ার কথা বলতে তাঁর কোনও সঙ্কোচ নেই!

নতুন ছবিতে আরও এক সংযোজন রয়েছে। অরিজিনাল ছবিতে রেখার মায়ের চরিত্রটাই ছিল না। নতুন চিত্রনাট্যে সে চরিত্রে অভিনয় করেছেন কিরণ খের। মূল ছবিতে রেখার নাম ছিল মঞ্জু। রিমেকে সোনমের মায়ের চরিত্রের নাম মঞ্জু। “আগেকার দিনে মেয়েরা মায়েদের সব কিছু বলতে পারতেন না। এখনকার মেয়েরা তো মায়ের সঙ্গে তাঁদের ব্যক্তিগত কথা শেয়ার করেন। আমি নিজেও তো আমার মা-কে কত কথা বলতে পারি। মা-মেয়ের সম্পর্কটাকে আমরা বেশ ভাল ভাবেই প্রাধান্য দিয়েছি ছবিতে,” বলছেন অনিল কপূর কন্যা রিয়া।

রিমেক হলেও মূল ছবির কোনও গানই ফিল্মে ব্যবহার করা হবে না, বলছেন রিয়া। “ওই সব কাল্ট গানগুলো নিয়ে আমরা কোনও দিন ছেলেখেলা করব না। তাই অরিজিনাল ছবির কোনও গানের রিমিক্স আমরা এ ফিল্মে রাখিনি,” বলছেন রিয়া।

সেপ্টেম্বর মাসে মুক্তি পেতে চলেছে এই রিমেক। ছবিটি মুক্তির আগে রেখাকে এই ছবিটা দেখানোর জন্য বিশেষ কিছু প্ল্যান করছেন প্রযোজক-পরিচালকরা। শেষে রিয়া বলছেন, “আসলে আমাদের ছবিটা হল অ্যান ওড টু ‘খুবসুরত’। ডিজনি ইন্ডিয়ার সঙ্গে এমন একটা ছবি প্রযোজনা করতে পেরে আমি খুব খুশি। সপরিবারে দেখার মতো একটা লভস্টোরি তৈরি করেছি আমরা। শশাঙ্ক আর আমি ভেবেই রেখেছি যে যদি দর্শক ছবিটা দেখে হাসতে হাসতে হল থেকে বেরিয়ে আসেন, তা হলেই আমরা খুশি।”

আনাচে কানাচে


দেব-চর্চা: দেব ক্রিম মাখিয়ে দিলেন
পরিচালক অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরীর গালে।


স্বরের ও-পারে: ‘যোদ্ধা’-র ডাবিংয়ে মিমি।
শহরের এক স্টুডিয়োয়। ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE