Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

নাম বদলেও ফিরলেন কই?

ফিরে এসেছে পুরনো গিটার, রক ব্যান্ড। রঞ্জনা, মালা, চেনা চেনা সুর, চেনা চেনা চক্কর। উচ্চাকাঙ্ক্ষী মা আর তার মেয়ে, শয্যাশায়ী এক মহিলা— যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে মৃত্যুই যার একমাত্র উপায়, এক দল গানপাগল ছেলে। ভেঙে যাওয়া দাম্পত্য।

অন্বেষা দত্ত
শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৮ ০০:০১
Share: Save:

কলকাতা শহরের কিছু মানুষের গল্প। তাদের সংগ্রাম, কষ্ট, সঙ্কট। আধুনিক জীবনের চাওয়াপাওয়ার সঙ্গে নিজের মূল্যবোধের দ্বন্দ্ব। যে মূল্যবোধ গেড়ে বসে থাকে মনে। তাকে ভেঙে এগোনো কি সম্ভব? উত্তর খোঁজার চেষ্টা। তেমনটাই দাবি ছিল পরিচালকের। যিনি আবার ছবির অভিনেতা, গায়ক, সুরকারও বটে।

ফিরে এসেছে পুরনো গিটার, রক ব্যান্ড। রঞ্জনা, মালা, চেনা চেনা সুর, চেনা চেনা চক্কর। উচ্চাকাঙ্ক্ষী মা আর তার মেয়ে, শয্যাশায়ী এক মহিলা— যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে মৃত্যুই যার একমাত্র উপায়, এক দল গানপাগল ছেলে। ভেঙে যাওয়া দাম্পত্য। জীবনভর অশান্তি নিয়ে পাশাপাশি বেঁচে থাকা।

মানুষের মনের অন্ধকার কোণ তাঁকে টানে, এমন নয়। কিন্তু এটাই তাঁর ঘোর বাস্তব। যেটা ভুলে থাকতে পারেন না, চানও না অঞ্জন। বহু পরিবারের এমন সঙ্কট হতে পারে। যে নিয়ম এক দিন হেলায় ভেঙেছি যৌবনে, সন্তান তা ভাঙতে যাচ্ছে দেখলে মানতে পারি না। যে সঙ্কটে দীর্ণ হয় মানুষ। সঙ্কট থেকে সে নীচ হতে শেখে। সেখানে গান আসে মুক্তির বড় মাধ্যম হয়ে।
গান বাঁচায়!

অঞ্জনের দাবি, তিনি নিজে গানের দৌলতে অবসাদ পেরিয়েছেন। আজকের টালমাটাল সময়টাও গান থেকে শান্তি পাক।

আমি আসবো ফিরে

পরিচালনা: অঞ্জন দত্ত

অভিনয়: অঞ্জন দত্ত, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, কৌশিক সেন, সৌরসেনী মৈত্র, দর্শনা বণিক

৪.৫/১০

কিন্তু যে গান এত কিছুকে বাঁধবে, সে গান কি তেমনই জোরদার? যতটা ছবির চরিত্ররা দাবি করছে? ‘কী দারুণ একটা গান শুনলাম’— বললেই কি গানটা ভাল লেগে যাবে? কিছু কিছু কথা ছুঁয়ে গেল। ‘মন খারাপের বিকেল’ গানটিতে ‘কান্না পেলে কেন আমি আর কাঁদি না...’ শুনে গুনগুনও করা গেল। কিন্তু পাঁচ বছর যন্ত্রণা সহ্য করে যে গানের আরাম পেয়ে এক মৃত্যুপথযাত্রী বৃদ্ধা শান্তিতে মারা যান, গানগুলো সত্যিই কি সেই গান হয়ে উঠেছে? বিরতির পরের অংশ অনর্থক দীর্ঘ। শেষ পর্বে বিশ্বাসযোগ্যতা আরও ধাক্কা খায়। গান শুনে ধর্ষিত এক তরুণী, সব হারিয়ে ফেলা একটি মেয়ে ফিরে আসে জীবনে। ভীষণই আরোপিত মনে হয়েছে দৃশ্যটা। সিরিয়ার যন্ত্রণার কথা গানে এলেই কি হয়ে যায় জীবন ছোঁয়ার গান?

কোন গান কার ভাল লাগবে, তা ব্যক্তিবিশেষে পাল্টে যায়। কিন্তু যে গান সর্বাত্মক বলে নিজেকে দাবি করে, তেমন গল্প তো আগেও বলেছেন অঞ্জন। ‘ম্যাডলি বাঙালি’ তেমন জনপ্রিয়তা না পেলেও গান ছুঁয়েছিল অনেককে। সেখানেও ছিল একগুচ্ছ জীবনের সঙ্কট, একগুচ্ছ অল্পবয়সি ছেলেমেয়ে। গান সঙ্গী হয়ে অনেক কিছু জুড়ে দিয়েছিল তাদের জীবনে।

আসলে অঞ্জন থিমটা ভালবাসেন। কিন্তু একই গল্প বার বার? পরিচালকের দাবি, বক্স অফিসের কথা ভেবে তিনি ছবি বানাননি। বেশ! কিন্তু নিজের কথা, নিজের অবসাদ, নিজের সঙ্কট, নিজের একাকিত্ব বোঝাতে আর কতগুলো ছবি বানাতে হবে পরিচালক অঞ্জনকে?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Abar Asbo Phire Anjan Dutt Swastika Mukherjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE