Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

চ্যাম্প ফ্লপ হলে ককপিট হতো না

একগুচ্ছ নতুন প্রজেক্ট নিয়ে আবার ময়দানে দেব। খবর দিচ্ছে আনন্দ প্লাসএকগুচ্ছ নতুন প্রজেক্ট নিয়ে আবার ময়দানে দেব। খবর দিচ্ছে আনন্দ প্লাস

দেব। ছবি: রণজিৎ নন্দী

দেব। ছবি: রণজিৎ নন্দী

স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

সাক্ষাৎকার নিতে তাঁর সাউথ সিটির অফিসে যখন পৌঁছলাম, তখন ঘড়িতে রাত ন’টা। চলছে দেবের আগামী ছবি ‘ককপিট’ নিয়ে আলোচনা। পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়। অভিনেত্রী রুক্মিণী মৈত্র। সংগীত পরিচালক অরিন্দম। পুজোয় মুক্তি পাচ্ছে ‘ককপিট’। মিউজিক থেকে প্রোডাকশনের কাজ জোরকদমে চলছে। ‘চ্যাম্প’-এর সাফল্য দিয়েই প্রযোজক দেব তৈরি করছেন ‘ককপিট’।

কিন্তু ‘চ্যাম্প’ তো বক্স অফিসে তেমন বড় কিছু জায়গা করেনি! কথাটা পাড়তেই চটজলদি দেব, ‘‘সংবাদপত্রে দেখেছিলাম ‘চ্যাম্প’-এর বক্স অফিস নিয়ে একটা হিসেব। সেটা কিন্তু ঠিক নয়। ইদের সময় ‘টিউবলাইট’, ‘বস টু’ কোনও ছবিই মারাত্মক লাভের মুখ দেখেনি। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ‘চ্যাম্প’ যা ব্যবসা করেছে তাতে আমি খুশি। আর ‘চ্যাম্প’-এর সাফল্য দিয়েই তো ‘ককপিট’ প্রযোজনা করছি।’’ আত্মবিশ্বাসী দেব মনে করেন, প্রথম প্রযোজনায় এক টাকা লাভ মানেও অনেক। অকপটে স্বীকার করলেন, তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় ঝুঁকি ‘ককপিট’। দেব জানালেন, এই ঝুঁকি তিনি নিচ্ছেন বাংলা ইন্ডাস্ট্রির জন্যও। এমন একটা ছবির কথা ভাবছেন, যা ‘ক্লাস’ আর ‘মাস’ দুই ধারাকেই আকৃষ্ট করবে।

আরও পড়ুন: ‘আমাদের মধ্যে কোনও দিনই ঝামেলা ছিল না’

পিছন ফিরে তাকানোর সময় নেই আজ। ‘ককপিট’-এর পরই সেপ্টেম্বরে শুরু হচ্ছে অনিকেত চট্টোপাধ্যায়ের পরিচালনায় দেবের নতুন ছবি ‘কবীর’। মোবাইল খুলে দেখিয়ে দিলেন সেই ছবির লুক। এ যেন এক অন্য দেব। তাঁর অর্ধেক মুখ কাপড়ে ঢাকা। বিস্ফোরক ধোঁয়াটে চোখ। কোথাও যেন সন্ত্রাসের ছায়া। ‘‘অনিকেতদার গল্প শুনে দারুণ লেগেছিল। এতটাই জীবন্ত বিষয় যে, সব মানুষ বুঝতে পারবে। পুরো ছবিটা ট্রেনে শ্যুট হবে,’’ উত্তেজিত দেব। অভিনয়, প্রযোজনার পর এ ছবিতে সহকারী পরিচালকের ভূমিকায় দেখা যাবে তাঁকে।

বিয়েটা কবে হচ্ছে?

রুক্মিণী: প্লিজ আপনারা সবাই মিলে এ বার দেবের বিয়েটা দিয়ে দিন।

দেব: ও! আচ্ছা! তা হলে বিয়েটা করে নিই? ভেবে বলছিস তো!

রুক্মিণী: অফ কোর্স। এই সময় আমি অন্তত বিয়ে করার কথা ভাবছি না।

চলতে লাগল দু’জনের খুনসুটি। ককপিটে তখন কেবল সুন্দরী এয়ারহোস্টেস আর পাইলট। কেউ কোত্থাও নেই।

ট্রেন থেকে বিমান। তাঁর সব ছবিতেই দ্রুত চলার কথা, সম্পর্কের কথা। দ্রুত চলায় হোঁচট খেতেও তো হতে পারে! ‘‘উদ্যোগী হতেই হবে। রেজাল্ট যাই হোক। কমলদা যখন ‘ককপিট’-এর চিত্রনাট্য শোনাল, ভেবেছিলাম ৩৬ হাজার ফুট উপরে শ্যুটিং করব কী করে? বাংলা কেন, বলি‌উডেও তো এই ধরনের কাজ হয়নি। সেখানে আমরা কী করে পারব! ঘণ্টায় আট লক্ষ টাকা প্লেনেরই ভাড়া...’’ সাধ পূরণ করতে পেরে দেব নিজেও বিস্মিত! দেব-কোয়েল কেমিস্ট্রি আবার দেখা যাবে এ ছবিতে। অন্য দিকে রুক্মিণী বিমানসেবিকার ভূমিকায়। পাশ থেকে বলে উঠলেন রুক্মিণী, ‘‘প্রচুর খেটেছি এই ছবির জন্য। বিমানসেবিকাদের হাঁটা-চলা, কথা বলা রীতিমতো ট্রেনিং নিতে হয়েছে। ‘ককপিট’-এর শ্যুটেও আমাদের সঙ্গে এক জন পাইলট আর এয়ারহোস্টেস ছিলেন।’’ সাক্ষাৎকারের মাঝেই ঘড়ির কাঁটা মেপে নিয়মমাফিক চলে এল এক থালা ফল। এক জায়গা থেকে দু’জনে ফল খেতে খেতে বলতে লাগলেন আকাশে শ্যুট করার অভিজ্ঞতা। ‘‘মুম্বই, কলকাতা, অন্ডাল এয়ারপোর্টের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। এই প্রথম বাংলা ছবিতে এই ধরনের শ্যুট হল। বিমানবন্দরের সমস্ত কর্মী অপেক্ষা করে আছেন ‘ককপিট’ দেখার জন্য,’’ উচ্ছ্বসিত দেব। ‘নিউ এজ’ বাংলা ছবি তৈরিতে মজেছেন। ‘চ্যাম্প’ যা দেখাতে পেরেছে, ‘ককপিট’ তার চেয়েও বেশি দেখাবে। এভিয়েশন নিয়ে তৈরি প্রথম বাংলা ছবির কথা বলতে গিয়ে বললেন, ‘‘কমলদার মতো কম্পিউটার গ্রাফিক্সের কাজ কলকাতায় খুব কম লোকই জানে।’’ কথাটা শুনে পাশ থেকে উঠে গেলেন কমলেশ্বর। দেব সে দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘‘ওই দেখুন, কমলদার প্রশংসা শুনতে ভাল লাগছে না।’’

পুজোতে ছ’টা ছবি একসঙ্গে রিলিজ? দেব বেশ বিরক্ত। বললেন, ‘‘ও সব বলে লাভ নেই। সবাই ভাবে পুজোয় রিলিজ ছাড়া ছবি হিট হবে না। কেউ গায়ের জোর দেখায়, কেউ দর্শকের ভালবাসা। আমি পুজোতে রিলিজ ছাড়তে পারতাম। কিন্তু তখন এমন বাংলা ছবিও তো চাই, যা একই সঙ্গে ১৭০টা হলে রিলিজ করতে পারবে। সে ক্ষেত্রে জিৎদা বা আমার ছবি তো থাকতেই হবে।’’

শুধু ‘কবীর’-এ থেমে নেই দেব। প্ল্যানিং চলছে ‘বিনয়-বাদল-দীনেশ’-এর। যার চিত্রনাট্য লিখেছেন অনিকেত। পরিচালক কমলেশ্বর। দেব যোগ করলেন, ‘‘দেব কিন্তু ছবিতে কাউকে জ্ঞান দিতে আসিনি। আমি রিমেক ছবি করে, শুধু অভিনয় করে, জীবনটা কাটাতে পারতাম। আমি রিয়েল স্টোরিকে পপুলার ফর্ম দিতে চাই। সেই জন্যই আমার ছবি করা।’’

রুক্মিণী বলে উঠলেন, ‘‘এ মা, ‘বিনয়-বাদল-দীনেশ’টাও বলে দিলে? পরে বলতে পারতে...’’

দেব, ‘‘অত রেখেঢেকে লাভ কী? ঠিকই আছে।’’

শ্রাবণের রাতে দু’জনের চোখ এক হল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE