Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

আমায় কেন গিরীশ ঘোষ করতে বলে না

পয়লা বৈশাখ থেকে শুরু নতুন বাংলা বছরে ভরপুর তিনি। পরপর তাঁর ছবি। সেই প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়-এর মুখোমুখি ইন্দ্রনীল রায়।সব খাচ্ছি। কিন্তু এক্সারসাইজও করছি। এইম হল পুরো ফ্যাটটা সরিয়ে আরও টোনড বডি তৈরি করা। কারও জন্য করছি ভাববেন না। শুধু নিজের জন্য করছি। এখন ট্রেন্ডটা ‘লিন অ্যান্ড থিন’ বডি টাইপের দিকে। মুম্বইতেও সবাই সেটাই করছে। আজকে জামা খুলে দাঁড়ালে লোকে এটা অন্তত বলবে, ‘বুম্বা ওয়ার্ক আউটটা সলিড করছে।’ ডাক্তার আর ট্রেনারদের সঙ্গে কথা বলেই এক্সারসাইজ করছি।

শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৬ ০০:০৩
Share: Save:

কেমন আছেন? অনেক দিন পরে আনন্দplus-এ আপনার ইন্টারভিউ।

ভালই আছি। ৩৬৫ দিনের ভেতর ৪৬৫ দিনের কাজ করছি।

ওজন তো বোধ হয় পঞ্চান্ন কেজিতে নিয়ে গিয়েছেন? গ্ল্যামার বেড়েছে। চুলের স্টাইলটাও বেশ উত্তমকুমার উত্তমকুমার হয়েছে।

(হাসি) চেষ্টা করছি আরও ফিট হতে।

খাওয়াদাওয়া সব বন্ধ নিশ্চয়ই?

সব খাচ্ছি। কিন্তু এক্সারসাইজও করছি। এইম হল পুরো ফ্যাটটা সরিয়ে আরও টোনড বডি তৈরি করা। কারও জন্য করছি ভাববেন না। শুধু নিজের জন্য করছি। এখন ট্রেন্ডটা ‘লিন অ্যান্ড থিন’ বডি টাইপের দিকে। মুম্বইতেও সবাই সেটাই করছে। আজকে জামা খুলে দাঁড়ালে লোকে এটা অন্তত বলবে, ‘বুম্বা ওয়ার্ক আউটটা সলিড করছে।’ ডাক্তার আর ট্রেনারদের সঙ্গে কথা বলেই এক্সারসাইজ করছি।

বুঝলাম। সবাই বলছে এটা আপনার বছর?

কেন?

সৃজিতের ‘জুলফিকর’য়ের শ্যুটিং শেষ হল একদিন রাত ৯টায়। পরের দিন সকাল ৭টায় শিবপ্রসাদের ‘প্রাক্তন’য়ের সেটে ঢুকে পড়লেন। তার পর ‘মহানায়ক’য়ে উত্তমকুমারের চরিত্রে অভিনয়। পয়লা বৈশাখে গৌতম ঘোষের ‘শঙ্খচিল’। আপনার বছর নয় তো কার ?

(হাসি) থ্যাঙ্ক ইউ। কমলেশ্বরের ছবিটাও রয়েছে। এর সঙ্গে আরও দুটো হিন্দি ছবিও যোগ করবেন। সত্যি এই বছরে মানুষ আমার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ দেখতে পাবেন। এগুলো নিয়েই তো বেঁচে আছি। এগুলোই বেঁচে থাকার রসদ এখন আমার।

শুনলাম ‘মহানায়ক’য়ের হোমওয়ার্কের জন্য নাকি রোজ সন্ধেবেলা নিয়ম করে উত্তমকুমারের ছবি দেখছেন?

হ্যাঁ রোজ রাতে। আইপ্যাডে প্রায় সব ক’টা ছবি ডাউনলোড করেছি। ওই জোনটায়, ওই মেজাজটা রাখতে চাই যতদিন শ্যুটিং চলেছে। এটা আমার হোমওয়ার্ক। আসলে উত্তমকুমারকে নিয়ে বেশ কিছু বছর আগে একটা অনুষ্ঠান করেছিলাম যার নাম ছিল ‘মহানায়ককে নায়কের সম্মান’ সেটাতে উত্তমজেঠুর সব নায়িকাদের সঙ্গে স্টেজে ছিলাম আমি। মালা সিংহ, বেনু আন্টি, মাধবী আন্টি — তাঁদের সঙ্গে নেচেওছিলাম। ওটা ছিল উত্তমজেঠুর প্রতি আমার শ্রদ্ধার্ঘ। সেটার পর ‘মহানায়ক’ হল উত্তম জেঠুর প্রতি আমাদের সবার ট্রিবিউট। আমার কাছে পার্সোনাল ট্রিবিউট। কারণ ‘দুই পৃথিবী’ ছবিতে ওঁর আশীর্বাদ আমি পেয়েছিলাম।

উত্তমকুমারের চরিত্র করতে গিয়ে আপনাকে নাকি আবার প্রচুর সিগারেট খেতে হচ্ছে?

(হাসি) শুরু হয়েছিল কমলেশ্বরের ছবি দিয়ে। ওটাতে সিগারেট নিয়ে আমি একটা ম্যানারিজম তৈরি করেছি যেটা দর্শক দেখলেই বুঝতে পারবেন কী ডেঞ্জারাস!
বহু বছর পর, আগের গরমকালে পুরীতে সেই শ্যুটিংয়ে ক্রমাগত সিগারেট আর চুরুট খেতে খেতে মাথা ঘুরে ব্ল্যাক আউট হয়ে গিয়েছিল। তার পর আর খাচ্ছিলাম না। কিন্তু ‘মহানায়ক’য়ে তো কোনও উপায় নেই। ৮০ পার্সেন্ট সিনে আমার মুখে ফাইভ ফিফটি ফাইভ জ্বলছে।

একটু ‘শঙ্খচিল’য়ে ফিরি?

হ্যাঁ, প্লিজ।

‘মনের মানুষ’য়ের পর আবার আপনার আর গৌতম ঘোষের যুগলবন্দি। সঙ্গে ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড ফর বেস্ট বেঙ্গলি ফিল্ম। দর্শকের প্রত্যাশা তো আকাশ ছোঁয়া।

গৌতমদা দারুণ বানিয়েছেন ছবিটা। আমি শিওর দর্শকের খুব ভাল লাগবে ‘শঙ্খচিল’। আমার চরিত্রটার সঙ্গেও আপামর বাঙালিও আইডেনটিফাইও করতে পারবেন। তার রাগ, দুঃখ, বিদ্রোহ— সবটাই একজন সাধারণ বাঙালির মতো। আর এটুকু বলতে পারি আমার গেট-আপটা দেখে তিন চার মিনিট দর্শক হোঁচট খাবেনই। তার পর যখন প্রভাত রায়ের মতো সিনিয়র ডিরেক্টর বলেন, এটা আমার জীবনের বেস্ট কাজ ভীষণ স্যাটিসফায়েড লাগে।

এত খাটলেন কিন্তু ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড তো পেলেন না। ওরা কি পণ করেছে আপনাকে কিছুতেই পুরস্কার দেবে না।

(হাসি) ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড শুনলে আমার হাসি পায়। ওরা যে কি চায়? যে বছর ‘মনের মানুষ’, ‘অটোগ্রাফ’ ছিল সেই বছর দিল না। তার পর ‘অপরাজিতা তুমি’ আর ‘২২শে শ্রাবণ’— দিল না। তার পরের বছর ‘জাতিস্মর’য়ের কুশল হাজরার মতো চরিত্র! সেখানেও নাথিং। এ বারে ‘শঙ্খচিল’। কিন্তু তাও কিছু নয়।
একটা ব্যাপারে শান্তি পাই। ভাই, আমরা তো কেউ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের থেকে বড় নই। সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে অতগুলো ছবি তো আর কারও নেই। এখানে আমি উত্তমজেঠুকে ধরছি না। সেই সৌমিত্রজেঠু প্রথম ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড পেলেন ‘পদক্ষেপ’-এ। তাই ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড নিয়ে আর বেশি ভাবি না। কাজ করে যাব মন দিয়ে, ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড পেতে হবে বলে কাজ করব না।

আচ্ছা এ তো গেল ইন্টারভিউয়ের ফার্স্ট পার্ট। আনন্দplus-য়ে আপনার ইন্টারভিউয়ের একটা সেকেন্ড পার্টও থাকে।

(হাসি) হ্যাঁ জানি। যেটা পড়ে মানুষ আমার ওপর রেগে যায়।

হা হা। আচ্ছা বলুন, নতুন বছরে আপনি খুশি বাংলা ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে?

বছর তিনেক আগে আমি প্রথম বার বাংলা ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে কিছু অপ্রিয় কথা বলেছিলাম...

হ্যাঁ, সেটা ‘পত্রিকা’তে বলেছিলেন। তার পর দু’বার আনন্দplusয়ে।

হ্যাঁ, আমার বক্তব্য ছিল আমরা যেন ইন্ডাস্ট্রি হিসেবে ধাপে ধাপে এগোই। এক লাফে চাঁদ ছুঁতে যাওয়ার চেষ্টা যেন না করি। এটাও বলেছিলাম, আমাদের ইন্ডাস্ট্রি বেলুনের মতো শুধু ফুলছে। যে দিন বেলুন ফাটবে সে দিন আমরা কেউ বাঁচব না। বলেছিলাম বাজেট কমাতে হবে।
আজকে নতুন বছরে দাঁড়িয়ে বলছি একটা কোর্স কারেকশান কিন্তু হয়েছে। একদম ‘ওয়াক-থু’ মার্কা ছবি আমরা বানাচ্ছি না। ভাল ছবি তৈরি করছি তবে তার পাশাপাশি এটা দেখছি না, অন্য রাজ্যগুলোতেও কি অসম্ভব ভাল ছবি তৈরি হচ্ছে। এটা আমি ‘শঙ্খচিল’ কে মাথায় রেখেও বলছি, মরাঠি, মালায়লাম ভাষাতে কিন্তু আইকনিক কাজ হচ্ছে। সে দিক থেকে আমরা একটু হলেও পিছিয়ে যাচ্ছি। মরাঠি একটা ছবি চব্বিশ কোটি টাকার ব্যবসা করল। নায়ক কে? নতুন ছেলে নয়, নায়ক নানা পটেকর।

কিন্তু...

দাঁড়ান, থামাবেন না। একটা প্রশ্ন মাথায় ঘুরছে অনেক দিন ধরে। আমরা বোধ হয় আর্ট আর প্যাকেজিংয়ের মোড়কে আটকে গিয়ে নিজেদের একটু হলেও হারিয়ে ফেলছি। হ্যাঁ, আর্ট ছবির দরকার আছে। এই ছবিগুলো আমাদের ইন্ডাস্ট্রিকে সমৃদ্ধ করে। এই ছবিগুলির একটা আলাদা লেগাসি আছে। যে লেগাসি অপর্ণা সেন, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, গৌতম ঘোষ, ঋতুপর্ণের পরে আজকে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় একা বয়ে নিয়ে চলেছে। এই গোত্রেই পড়ে ‘আসা যাওয়ার মাঝে’র মতো ছবি। এই ছবিগুলো কিন্তু আমাদের বানিয়ে যেতে হবে।
আর প্রযোজকদেরও বুঝতে হবে এই ছবিগুলো কিন্তু কোনও দিন পাঁচ কোটি টাকার ব্যবসা করবে না। তাই এদের ব্যবসার সঙ্গে কমার্শিয়াল ছবির ব্যবসা গুলিয়ে ফেলাটা মস্ত ভুল হবে।

কিন্তু আপনি কি মেনস্ট্রিম বাংলা ছবি নিয়ে খুশি?

না, মেনস্ট্রিমের চেহারাটা বদলানোর সময় এসে গিয়েছে। মেনস্ট্রিমকে রিওয়ার্ক করতেই হবে।

বদলাবেন কী ভাবে? রোড ম্যাপ কী?

(বাড়ির কাজের ছেলেকে উত্তমকুমারের স্টাইলে বললেন, ‘‘এই কে আছিস, আমাকে কালো ব্যাগটা এনে দে তো) আমি একটা রোডম্যাপ বানিয়েছি।

এ তো প্রজেক্ট রিপোর্ট?

ইয়েস, লাস্ট ছ’মাস ধরে এটাই তৈরি করেছি আমার টিমের সঙ্গে বসে। পুরো খোলনলচে পাল্টাতে হবে ইন্ডাস্ট্রির।
আমাকে ডিস্ট্রিবিউটর, এক্সিবিটর, প্রোডিউসরেরা দায়িত্ব দিয়েছিল এবং তার জন্য আমি তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ। ইম্পাতে অনেকে জানে এই রিপোর্টটা সম্বন্ধে। শ্রীকান্তও জানে। ইলেকশন শেষ হওয়ার পরে আমরা সবাই বসব। আমাদের ইন্ডাস্ট্রিকে বাঁচাতে হলে সিঙ্গল স্ক্রিন থিয়েটারকে বাঁচাতেই হবে। না হলে আমরা শেষ। আজকে ‘শঙ্খচিল’ বা ‘সিনেমাওয়ালা’র যা বাজেট তাতে ৪০-৫০টা হলে রিলিজ করলে একটা ব্রেক ইভেনের চান্স থাকে। কিন্তু যে ছবির বাজেট পাঁচ কোটি, সেটা রিকভারি করতে তো দু’শো হল লাগবে রে ভাই। ওই কমার্শিয়াল ছবিটাই তো ইন্ডাস্ট্রিকে বাঁচিয়ে রাখে।

এই স্টেটমেন্টে রিঅ্যাকশন হবে...

চাই রিঅ্যাকশন হোক। শুধু রিঅ্যাকশন নয়, এ বার টাইম এসেছে সবার ভয় পাওয়ার।

নতুন হলে পৌঁছানোর জন্যই আপনি ‘শঙ্খচিল’ বাংলাদেশের সঙ্গে জয়েন্ট ভেঞ্চারে করলেন?

এক্স্যাক্টলি তাই। আজকে বাংলাদেশের সঙ্গে জয়েন্ট ভেঞ্চারে হয়তো টাকা পাচ্ছি না কিন্তু এ পারের ৫০টা হল-য়ের পাশাপাশি বাংলাদেশের ৫০টা হল-য়ে তো পৌঁছে যাচ্ছে আমাদের ছবি। নতুন একটা মার্কেটে ঢোকাটাও বা কম কীসের? এটার জন্যই জয়েন্ট ভেঞ্চার এটা বুঝতে হবে সবাইকে। না হলে সবার দুঃখ আছে কপালে। আরও একটা ব্যাপার বুঝতে হবে...

কী?

বুঝতে হবে মফস্সলের মানুষকে বোকা ভাবার কোনও কারণ নেই। আজকে আমি গ্রামে গঞ্জে ঘুরি। সেখানে সবার কাছে স্মার্টফোন পৌঁছে গিয়েছে এই খবরটা আমরা ক’জন রাখি? পশ্চিমবঙ্গে কলকাতার থেকে বেশি স্মার্টফোন বিক্রি হয় মফস্সলে। এই ডেটা কত জন জানি? হোক না চাইনিজ ফোন, কিন্তু স্মার্টফোন তো।
আজকে গ্রামের মানুষ সাউথ সিটিতে আসে পুজোর বাজার করতে। তাদের বোকা ভাবার কোনও কারণ নেই। তারা কেন দেখবে আজগুবি ছবি একটু বলবেন?
তারাও বুদ্ধিদীপ্ত ছবি দেখতে চায়। তা বলে কি কমার্শিয়াল ছবিতে ঢিসুম ঢিসুম অ্যাকশান কি নাচ আমরা রাখব না? অবশ্যই রাখব। ‘দবাং’‌য়ের মতো ছবি সারাজীবন এক্সিস্ট করবে। কিন্তু একটা বেসিক সেন্সিবিলিটি থাকতে হবে।

এই জন্যই কি...

আর একটা কথা বলি প্লিজ? গত বছর ‘বেলাশেষে’ যে এত ভাল ব্যবসা করল, এই ‘বেলাশেষে’ যদি দশ বছর আগে রিলিজ করত তবে ‘লাঠি’র মতো পাঁচ কোটি টাকার ব্যবসা করতে পারত।
‘বেলাশেষে’ কি শহরের ছবি ছিল? একদমই নয়। ‘বেলাশেষে’ সব শ্রেণীর দর্শকের জন্য বানানো ছবি। কিন্তু শহরের গন্ডির ভিতর যেন আটকে গেল ছবিটা। আমাদের আরও বেশি করে সেই রকম কনটেন্ট বানাতে হবে যেটা গ্রাম-শহরে একসঙ্গে চলবে।
ইদানিং কোন কোন ছবি শহর আর গ্রামে সমান ভাবে চলেছে? চলেছে ‘মনের মানুষ’, ‘চাঁদের পাহাড়’, ‘মিশর রহস্য’, ‘ব্যোমকেশ’ আর ‘ফেলুদা’। প্রত্যেকটা বুদ্ধিদীপ্ত কনটেন্ট। কনটেন্টভিত্তিক একটা চেঞ্জ আনতেই হবে। যে কারণে আমার মনে হয় ‘জুলফিকর’ খুব গুরুত্বপূর্ণ ছবি ইন্ডাস্ট্রির জন্য। ‘জুলফিকর’য়ে কমার্শিয়াল এলিমেন্ট আছে, আবার শেক্সপিয়রও আছে। আর্ট আর কমার্শিয়ালের মাঝামাঝির জায়গাটাই আজকে সব চেয়ে ইন্টারেস্টিং। যে কারণে আমি বোধ হয় সবচেয়ে খুশি হয়েছিলাম যখন শুনলাম দেব, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘ধূমকেতু’ করছে। এই বয়সে কৌশিকের মতো মাস্টারদের সঙ্গে কাজ করলে ওর ম্যাচিওরিটি আরও বাড়বে, আরও স্ট্রং অভিনেতা হয়ে উঠবে দেব।

কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় তো আপনার জন্যই একটা গল্প লিখছেন।

আমি ব্লেসড হব। খুব ঝগড়া করব, কিন্তু ফাটিয়ে কাজ করব দু’জনে।
আপনার আর একটা কথায় ইন্ডাস্ট্রিতে খুব রিঅ্যাকশন হয়েছিল। আপনি বলেছিলেন আমরা শুধু টুইটার আর ফেসবুকে পরস্পরের পিঠ চুলকাচ্ছি...
(হাসি) সেটা অনেকটা কমেছে দেখছি। বদলাচ্ছে, বদলাচ্ছে, সব বদলাচ্ছে।

‘প্রাক্তন’ কেমন দাঁড়াল?

ট্রেলর লুকস ভেরি গুড। গান খুব ভাল। আমার যেটা শিবু আর নন্দিতার ভাল লাগে সেটা হল ওরা কোনও ভনিতা করে না। ওরা প্রথম থেকেই বলে দেয়, আমরা কিন্তু এই গল্পটা বলছি। আর তা ছাড়া আমার আর ঋতুর কাজ করাটাও ইম্পর্ট্যান্ট ছিল। অনেকগুলো বছর মাঝখানে কেটে গিয়েছে। তবে অনেকদিন পর কাজ করে ভাল লাগল খুব।

অস্বস্তি তো নিশ্চয়ই ছিল?

হ্যাঁ, একটা প্রেশার ছিল। সেটা সবচেয়ে বেশি সামলেছে শিবু নিজে। মিডিয়ার প্রচুর বন্ধুরা ফোন করে শিবুকে জিজ্ঞেস করত, ‘‘কী রে শিবু, শ্যুটিং শেষ হবে তো?’’ আপনাদের বিভাগীয় সম্পাদক করেছিলেন বোধহয় এ রকম ফোন। (হাসি)

তার পর?

তার পর তো প্রথম দিনেই আমরা ৩২টা শট দিয়েছিলাম। আসলে আমি জানি ঋতু কী করবে, ঋতু জানে আমি কী করব। ওই আন্ডারস্ট্যান্ডিংটা আজও আছে।
আপনাদের ‘বায়োস্কোপে বাজিমাত’ অনুষ্ঠানে তো আগের বছর নাচলাম আমরা। (হাসি) কোনও অস্বস্তিবোধ ছিল কী? ছিল না। আসলে আমার আর ঋতুর বেস্ট পার্ট হল, আমরা দু’জনেই প্রফেশনাল। একটা গল্প বলি। ছবির নাম ছিল বোধহয় ‘প্রতিহিংসা’।
সেই সময় আমি আর ঋতু কথা বলি না। কিন্তু ‘প্রতিহিংসা’তে একটা লাভ সং ছিল, যেটা বোধহয় বাংলা ছবির অন্যতম প্যাশনেট লাভ সং। ওটা দেখে কেউ যদি বলতে পারে, সেই সময় আমাদের দু’জনের কথা নেই, আমি অভিনয় ছেড়ে দেব। এই প্রোফেশনালিজমটা আমাদের দু’জনেরই সবচেয়ে বড় স্ট্রেন্থ।

পয়লা বৈশাখে এসে কাজের ক্ষেত্রে কোনও আফসোস হয় আপনার?

না, আফসোস সে রকম কিছুই হয় না। নিজেকে যখন চেঞ্জ করার ছিল সেই সময় চেঞ্জ করেছিলাম। যেটা মুম্বইতে অমিতাভ বচ্চন ৬৫তে করেছেন, সেটা বোধহয় আমি ৪৫-এ করে ফেলেছিলাম। আজকে মানুষ আমাকে আর শুধু সুপারস্টার প্রসেনজিৎ বলে না, পাশাপাশি অভিনেতা প্রসেনজিৎও বলে। তবে একটা দু’টো আফসোস কি আর থাকে না! এই যে নানা পটেকরের ‘নটসম্রাট’ দেখলাম, সেটা তো কোথাও আমাদের বাংলার গল্পও হতে পারত। তা হলে কেন কেউ আমাকে গিরীশ ঘোষের চরিত্র অফার করবে না বলুন (হাসি)। এটা কিন্তু ইন্ডাস্ট্রিকে মেসেজ দিলাম বুঝলেন?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Prosenjit Chatterjee Tollywood
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE