প্রায় তিন বছর হয়ে গেল হৃতিক রোশন ও সুজান খানের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে। কিন্তু ভক্তদের কাছে তাঁদের বিচ্ছেদ নয়, ১৩ বছরের সম্পর্কের অনুরণনটা এখনও কানে বাজে। হৃতিক বা সুজানের কাছেও কি তাই নয়? তা না হলে, ২০১৪ সালে হৃতিক রোশনের বিচ্ছেদের অফিশিয়াল স্টেটমেন্ট দেওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত তাঁদের পাবলিক অ্যাপিয়ারেন্স এমন ভাবে কেন হবে, যাতে মনে হয় তাঁরা এখনও দম্পতি? দে আর স্টিল ইন লভ! হৃতিক এবং সুজান নতুন করে একসঙ্গে সংসার শুরু করতে চলেছেন, এমন খবর চারদিকে এবং তাতে ভরপুর ইন্ধন আছে তাঁদেরও। ডিভোর্স পরবর্তী ঘটনাগুলো খতিয়ে দেখলেই বোঝা যাবে যে, এই ধারণাটা মোটেই গুজব নয়।
২০১৪য় অফিশিয়াল ডিভোর্স হওয়ার পর হৃতিক এবং সুজানকে প্রথমবার একসঙ্গে দেখা যায় ছোটছেলে হৃদানের জন্মদিনে। তার পর থেকে নিয়মিত একসঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়া, হৃতিকের জন্মদিনের পার্টি, সিনেমা দেখা, সমুদ্রতটে ভ্যাকেশন... সব জায়গায় হম দো, হমারে দো। শুধু তাই নয়, নিজের বাড়ির কাছে সুজানের জন্য ফ্ল্যাট কিনে দিয়েছেন, যাতে রেহান আর হৃদানকে নিয়ে তাঁদের মা সেখানে থাকতে পারেন। হৃতিকের চোখের সামনে।
সুজানও কিছু কম যান না। কঙ্গনা রানাওয়াতের সঙ্গে হৃতিকের সম্পর্কের পোস্টমর্টেম করতে যখন পুরো ফিল্ম দুনিয়া ব্যস্ত, সে সময় সুজান পারতেন, হৃতিককে দোষী করে নিজের দিকে সিমপ্যাথির ঝোল টানতে। কিন্তু তিনি পুরো উল্টো পথে হেঁটেছেন। এক্স হাজব্যান্ডের পাশে পিলারের মতো থেকেছেন এবং তাঁর সঙ্গে হৃতিকের ছবিকে কী ভাবে কঙ্গনার ছবি দিয়ে মর্ফ করা হয়েছে, তার হাতেগরম প্রমাণ সোশ্যাল মিডিয়ায় রেখেছিলেন। তার পর ‘কাবিল’-এ হৃতিকের অভিনয়ের প্রশংসা করতে গিয়ে তো বিশেষণে ভরিয়ে দিয়েছিলেন।
বিচ্ছেদের পর ছেলেদের নিয়ে হৃতিক-সুজানের দুবাই ভ্রমণের ছবি।
এ সবের সঙ্গে দুই ছেলেকে নিয়ে দুবাইয়ে ছুটি কাটাতে যাওয়া, রেস্তোরাঁয় খাওয়া, ‘সচিন: আ বিলিয়ন ড্রিমস’এর প্রিমিয়ারে... মাঝেমাঝেই চোখে পড়েছে। আর একটা ব্যাপার সকলের নজর কেড়েছে, তা হল হৃতিকের পরিবারের সঙ্গে সুজানের নতুন করে সখ্য। এই তারকা দম্পতির বিচ্ছেদের অন্যতম কারণ ছিল শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে বউমার বনিবনা না হওয়া। একসঙ্গে ফ্যামিলি ডিনার, হৃতিকের জন্মদিন পালন, মনে হয়েছে সুজান যেন পরিবারেরই একজন। ডিভোর্স একটা দুঃস্বপ্ন ছিল। সকাল হতেই তা কেটে গিয়েছে।
তাঁদের একসঙ্গে মিলিত হওয়া প্রসঙ্গে সুজানকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমরা পরস্পরের খুব ক্লোজ। সব কিছুর উপরে রয়েছে আমাদের দুই ছেলে। যখন কোনও ব্যাপারের সঙ্গে আমাদের বাচ্চারা জড়িত, তখন আমরা সব মতান্তর সরিয়ে রেখে, ওদের পাশে দাঁড়াই।’’
হৃতিক ও সুজানের আবার নতুন করে কাছাকাছি আসার এটাই হল আসল কারণ। তাঁদের সন্তান। বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ রেহান ও হৃদানের কিশোর মনে এতটাই ছাপ ফেলেছে যে, বন্ধুবান্ধব, মেলামেশা সব কিছু থেকে তারা নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে। এমনকী, তাদের পড়াশোনাতেও ভীষণভাবে তার ছাপ পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আর পাঁচজন দায়িত্ববান বাবা-মা যা করেন, হৃতিক এবং সুজানও তা করেছেন। শুধু নিজেদের কথা না ভেবে দুটো নিষ্পাপ কিশোর মন যেন বাবা-মায়ের সাহচর্যে সুস্থ একটা ভবিষ্যৎ পায়, তার চেষ্টা।
আমরাও প্রার্থনা করি, দুই ছেলের কথা ভেবেই যেন হৃতিক এবং সুজান আবার ভেঙে যাওয়া সম্পর্ক জোড়া দেন এবং একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন সকলের জন্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy