Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

হার মানা হার

পার্টি হোক বা বিয়েবাড়ি একটা জমকালো নেকলেস হলেই সাজ কমপ্লিট। লিখছেন স্বরলিপি ভট্টাচার্যকারও না কারও গলায় তো ‘হার মানা হার’ পরাবেন মশাই। কেউ বা নিজেই পরবেন। কিন্তু এত তাড়া কীসের? মাঠে নামার আগে একবার চটজলদি সাজেশনে চোখ বুলিয়ে নিন।

শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৬ ০০:৩৪
Share: Save:

…হুম। কারও না কারও গলায় তো ‘হার মানা হার’ পরাবেন মশাই। কেউ বা নিজেই পরবেন। কিন্তু এত তাড়া কীসের? মাঠে নামার আগে একবার চটজলদি সাজেশনে চোখ বুলিয়ে নিন।

যাঁহা তেরি ইয়ে নজর হ্যায়, মেরি জাঁ মুঝে খবর হ্যায়

গব্বরের নজর বলে কথা। পরভিন ববির গলার নেকলেস বাঁচাতে অমিতাভও গেয়েছিলেন ‘কালিয়া’ ছবির সেই বিখ্যাত গান। নজর বটে গব্বরের। সেই নেকলেসেই মাত এ বারের অস্কার মঞ্চ।

সৌরভের মতো কামব্যাক

অনেক নামী নেকেই লেস হয়ে দাদার মতো কামব্যাক করল সে। কামব্যাক বলার কারণ? নব্বইয়ের দশকে এর বিপুল বাজারি চাহিদার পর শেষ পাঁচ-ছ’ বছরে আবার নিজের হারানো জমি ফিরে পাচ্ছিল ধীরে ধীরে। আর তাতে শেষ সিলমোহরের জন্য অস্কারের চেয়ে ভাল আন্তর্জাতিক স্টেজ আর কী বা হতে পারে?

অস্কার-ওয়াইল্ড

এমনিতেই গোটা ফ্যাশন দুনিয়া লেটেস্ট ট্রেন্ড বুঝতে অস্কারের মঞ্চের দিকে তাকিয়ে থাকে প্রত্যেক বার। ওয়াইল্ড সাজে মঞ্চ মাত করেন সুন্দরীরা। চলতি বছরের সেরা আকর্ষণ ছিল নায়িকাদের গলার নেকলেসই। যেমন-অলিভা ওয়াইল্ডের নেলি লেন চোকার। সফেদ সাহসী পোশাককে কমপ্লিমেন্ট দিয়েছে অনায়াসে। হিরের বুলগারি নেকলেসে সেজেছিলেন নাওমি ওয়াটস্। বোল্ড লুকে অস্কার মাত করতে টিনা ফেরি বেছে নিয়েছিলেন বুলগারি সাফিরে ডায়মন্ড লেকলেস। কারলাইজ থেরনের রক্তলাল পোশাকের উন্মুক্ত বিভাজিকায় বসত জমিয়েছিল লম্বা ক্লাস্টার ডায়মন্ড নেকলেস।

নেকলেসের বাঙালিয়ানা

মধ্যযুগে পারস্পরিক বন্ধন বোঝানোর জন্য নেকলেসের ব্যবহার ছিল। পরবর্তীতে নেকলেসের মাধ্যমে ক্রীতদাসদের প্রভুর আনুগত্যের স্বীকৃতি দেওয়াও নতুন নয়। কিন্তু নেকলেসের বাঙালিয়ানাও বা কম কোথায়? জরোয়া, চিকের সাজে বাঙালি বাড়ির নতুন কনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সাজতেন সত্তরোর্ধ্ব রাঙা দিদাও। তার আবার নানা রকমফের। সীতাহার, পাটিহার, বেলফুল, নারকোল ফুল— সে এক লম্বা লিস্টি। আধুনিকারাও এ স্বাদের ভাগ চান। তাই পার্টি হোক বা বিয়েবাড়ি একটা জমকালো নেকলেস হলেই সাজ কমপ্লিট।

যাদবপুরের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সেকেন্ড ইয়ার অঙ্কিতার পছন্দ ভারী সাবেকি নেকলেস। ‘‘আমার আসলে একটু পুরনো গয়না বেশি পছন্দের। ঠাম্মা বা মায়ের যে ভারী হার রয়েছে তা খুব ক্লোজ কোনও বিয়েবাড়িতে পরার পারমিশন পাই। আর ডেলি রুটিনে আমি তো ওয়েস্টার্নের সঙ্গেও স্লিক নেকলেস ক্যারি করি,’’ জানালেন কন্যে। সদ্য শাশুড়ি হয়েছেন ঈশানী। বউমার সঙ্গে জাঙ্ক নেকলেস কেনার ফাঁকে বললেন, ‘‘আমার একটু হালকা ডিজাইন পছন্দ। আমি তো শাড়িই পরি। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ট্রেন্ডি নেকলেস পরলেই সাজ কমপ্লিট। আমার বউমা তো নানা রকম পোশাক পরে। ওকে জাঙ্ক নেকলেস কিনে দিচ্ছি। সব সময় তো আর দামি গয়না পরতে পারবে না।’’

ডিজাইনারস্ কর্নার

টলিউডের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে এখন অন্যতমা শুচিস্মিতা দাশগুপ্ত। পোশাকের পাশাপাশি গয়নার ফ্যাশনেও তুখড় ডিজাইনার নেকলেস নিয়ে দিলেন চটজলদি কিছু টিপস।

• যে কোনও সাধারণ পোশাককে সুন্দর করে তোলে নেকলেস। তাই অকেশন আর পোশাকের কথা মাথায রেখে ডিজাইন বা মেটিরিয়াল পছন্দ করুন।

• ফ্যাশনে এখন চোকার ভীষণ ইন। তবে মাথায় রাখুন, এটা সকলকে মানাবে না। লম্বা গলা হলে চোকার ট্রাই করুন। পোশাকের নেকলাইন চওড়া হলে মানাবে ভাল। তবে এটা একান্তই পার্টি ওয়্যার।

• দিনের বেলা গর্জাস কিছু পরবেন না। ওগুলো রাতের জন্যই তোলা থাক। দিনের জন্য স্লিক ডিজাইনের পাথর সেটিং নেকলেস বেছে নিতে পারেন।

• ওয়ের্স্টান ওয়্যারের সঙ্গে বিভিন্ন মেটালের মিক্স অ্যান্ড ম্যাচ করে নেকলেস পরতে পারেন।

• শাড়িতে সিলভার জরির কাজ থাকলে সোনার গয়না এড়িয়ে চলুন। সেক্ষেত্রে হিরে বা রুপোর নেকলেস পরুন।

• অক্সিডাইসের ম্যাট নেকলেস ফাঙ্কি লুকের সঙ্গে চলতে পারে।

• ভারী নেকপিস পরলে কান বা হাত খালি রাখুন। তবে সাবেকি গয়নায় সাজলে আর আপনার অনুষ্ঠান ডিমান্ড করলে চুটিয়ে গয়না পরুন।

• হালকা কাজের পোশাকের সঙ্গে ভারী নেকলেস আর ভারী কাজের পোশাকের সঙ্গে স্লিক নেকলেস পরুন।

দরদাম

গড়িয়াহাট বা হাতিবাগানের ফুটপাথ যদি আপনার শপার্স স্টপ হয় তা হলে বিডস, অক্সিডাইস, নকল মুক্তো, জাঙ্ক নেকলেস পাবেন পকেট ফ্রেন্ডলি দামে। এমনকী ধান, সুতো, বিভিন্ন ফলের বীজ দিয়ে তৈরি রঙিন নেকলেসও কিনতে পারেন। বিভিন্ন পোশাকের সঙ্গে ম্যাচ করে পরতে পারবেন। আর যদি আপনি সোনা, রুপো, হিরে বা কোনও দামি পাথরের নেকলেস কিনতে চান, সেক্ষেত্রে বড় কোনও দোকানে গিয়ে কেনাটাই ভাল।

নেক-এ-লেস

শুধু আপনি, আমি কেন? দুর্গা-সরস্বতীর গলায় সোনালি রিবনের সোনার চিক তো হাল আমলে জেন ওয়াইয়ের কাছেও বেশ পপুলার। অসুর-কার্তিকও বাদ যায়নি নেকলেস মহিমা থেকে। যদিও গণেশেরটা তর্কসাপেক্ষ! তাই চুটিয়ে নেকলেসের ফ্যাশন করতে আপত্তি কোথায়? শুধু মাথায় রাখবেন নেকলেসের ভারে যেন আপনাকে চলন্ত গয়নার দোকান বলে ভুল না হয়। আদতে নেক-এ যেন সে লেস না হয়ে বসে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

designer necklace ornaments Swaralipi Bhattacharyya
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE