অনুষ্কা শর্মার নামের সঙ্গে এখন আর শুধু অভিনেত্রীর তকমা লাগানো যায় না। তিনি এখন সফল প্রযোজকও বটে। এক দিকে নিজের প্রোডাকশন ‘পরি’ নিয়ে ব্যস্ত। অন্য দিকে শাহরুখ খানের সঙ্গে ‘জব হ্যারি মেট সেজল’-এর রিলিজ সামনে। রয়েছে আনন্দ এল রাইয়ের ছবিও। যেখানে ফের তিনি শাহরুখের সঙ্গে। মুম্বইয়ের ‘যশ রাজ স্টুডিয়ো’য় আনন্দ প্লাসের সামনে অনুষ্কা।
প্র: শাহরুখ খানের সঙ্গে তিনটে ছবি হয়ে গেল। ওঁর সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কী ভাবে ব্যাখ্যা করবেন?
উ: শাহরুখের অভিজ্ঞতা থেকেই অনেক কিছু শেখা যায়। আমি অনেক সময় ফিল্মের ভাষা বুঝতে পারতাম না। ক্যামেরাকে কী ভাবে নিজের বন্ধু করে নেব, বুঝতে পারতাম না। শাহরুখ অনেক সাহায্য করেছে। আমরা একে অপরের সঙ্গে সাবলীল। আমাদের অন-স্ক্রিন কেমিস্ট্রি ভাল জমে।
প্র: শাহরুখের সঙ্গে রোম্যান্টিক দৃশ্যের অভিজ্ঞতা কেমন?
উ: শাহরুখকে একজন অভিনেতা হিসেবে দেখি। সেটে দু’জনেই অন্য চরিত্রের খোলস পরে থাকি। ‘জব তক হ্যায় জান’ বা ‘রব নে বানা দি জোড়ি’তে আমাদের রোম্যান্টিক দৃশ্য ছিল না। ‘জব হ্যারি মেট সেজল’-এ সেই সাধ আমরা পূর্ণ করেছি (হেসে)!
প্র: শাহরুখ বলছিলেন, আপনার মুখস্থবিদ্যা নাকি দারুণ।
উ: হ্যাঁ, ছোটবেলা থেকেই খুব তাড়াতাড়ি পড়়া মুখস্থ করে ফেলতে পারতাম। সেই জন্য হয়তো ভাল নম্বরও পেতাম। অভিনয় করতে গেলে দুটো জিনিস খেয়াল রাখতে হয়। ঠিক সময় সেটে আসা আর সংলাপ মনে রাখা। আমি সাধারণ জিনিস কিন্তু মনে রাখতে পারি না। তবে ছবির ব্যাপারে খুব সজাগ থাকি।
আরও পড়ুন: প্রেমের ‘ময়দানে’ দীপিকা
প্র: ট্রেলার দেখে বোঝা যাচ্ছে, গুজরাতি ভাষাটা দিব্যি রপ্ত করেছেন।
উ: ইমতিয়াজ এমন একজন পরিচালক যে, চরিত্রের জন্য কোনও রেফারেন্স পয়েন্টে বিশ্বাস করে না। একজন ডিকশন টিচার রাখা হয়েছিল সেটে। যিনি আমাকে গুজরাতি শেখাতেন। একটা ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলাম, কোনও ক্যারিকেচার করব না। সেজল পুরো ছবিতে একই ভাবে কথা বলেছে। চারপাশের লোকজনের সঙ্গে আমি ওই স্টাইলেই কথা বলতাম। সকলকে বলা ছিল, কিছু দিন আমার এই রকম হ্যাংওভার চলবে (হাসি)! যখন ‘অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল’-এর ডাবিং করছি, তখন মাঝেমধ্যেই ডাবিংয়ে গুজরাতি টিউনে কথা বলে ফেলতাম।
প্র: ইমতিয়াজ আলির সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?
উ: বরাবরই ইমতিয়াজের সঙ্গে কাজ করতে চেয়েছিলাম। ‘জব উই মেট’ দেখে অভিনয়ের ইচ্ছেটা আরও চাগাড় দেয়। ইমতিয়াজের চরিত্রগুলো ভীষণ আলাদা। আমার জন্য ‘জব হ্যারি মেট সেজল’-এর চেয়ে ভাল ছবি আর কিছু হতে পারত না।
প্র: আপনি তো প্রত্যেক ছবিতেই নতুন কিছু করার চেষ্টা করেন...
উ: আসল জীবনে আমি ভীষণ বোরিং। তাই যখন কোনও ইন্টারেস্টিং চরিত্র পাই, তখন সেটার ওপর মনপ্রাণ ঢেলে দিই। আমার ব্যক্তিত্বও তেমন জোরদার নয়। যেমন সলমন খান কোথাও গিয়ে দাঁড়ালে সবাই ওঁর দিকে তাকিয়ে দেখবেন। আমাকে দর্শকদের আকর্ষণ করতে হবে নিজের কাজ এবং অভিনয় দিয়ে। ভাল চরিত্র না পেলে বাড়িতে বসে থাকব। কিন্তু চরিত্রের পুনরাবৃত্তি করব না।
প্র: ‘পরি’তে কলকাতার অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়কে বাছার কোনও বিশেষ কারণ ছিল?
উ: পরমব্রত বুদ্ধিমান এবং বিচক্ষণ অভিনেতা। যেহেতু ও নিজে পরিচালক, তাই ছবি সম্পর্কে জ্ঞান খুব ভাল। পরমব্রত আর পরিচালক প্রসিত রায় দু’জনেই বাঙালি, তাই ওরা সেটে সব সময়ে বাংলায় কথা বলত। আর আমি কিছুই বুঝতে পারতাম না। আমাদের প্রথম শিডিউল শেষ হয়ে গিয়েছে। বলেছি, পরের শ্যুটিংয়ে এ সব চলবে না (হাসি)!
প্র: আদিত্য চোপড়াকে আপনি প্রযোজক হিসেবে কাছ থেকে দেখেছেন। ওঁর থেকে কি প্রযোজনার খুঁটিনাটি শিখেছেন?
উ: ওঁকে না দেখলে, আমার ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে অন্য রকম ধারণা হতো। নিজে প্রযোজক হওয়ার পর বুঝতে পারি, একটা ছবি অভিনেতাসর্বস্ব নয়। সব বিভাগের লোকই সমান জরুরি। এখন কঠিন সময়েও আমি বিচক্ষণতার সঙ্গে কাজ করতে পারি।
প্র: একটা জিনিস শোনা যায়, আপনি নাকি পার্টি করা পছন্দ করেন না?
উ: পার্টির কথা শুনলেই রেগে যাই। লাউড মিউজিক চলে আর লোকজন একে অপরের কানে কানে কথা বলে! এটাতে কী মজা হয়, বুঝি না। বেঙ্গালুরুতে কলেজে পড়ার সময়ে মাঝে মাঝে পার্টিতে যেতাম। ভাবতাম, রেগুলার পার্টি করব। বেশ হ্যাপেনিং একটা ব্যাপার হবে। পরে দেখলাম, পার্টি মানেই শোরগোল। সেই থেকেই আমার অনীহা। খুব ঘনিষ্ঠ কারও কোনও অনুষ্ঠান না হলে যাই না। আর গেলেও যদি দেখি হট্টগোল হচ্ছে, তা হলে তাড়াতাড়ি পালিয়ে আসি (হাসি)!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy