Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

‘বাংলা ছবির ইতিহাসে আমার ব্যোমকেশ জায়গা পাবে না’

আনন্দ প্লাসকে বললেন পরিচালক অঞ্জন দত্তআনন্দ প্লাসকে বললেন পরিচালক অঞ্জন দত্ত

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী
শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

তাঁর পরিচালিত ‘ব্যোমকেশ’ বাণিজ্যিক ভাবে সফল হতে পারে। কিন্তু সেটা তাঁর সেরা কাজ নয়। ‘‘কমার্শিয়ালি সফল হলেও বাংলা ছবির ইতিহাসে আমার ‘ব্যোমকেশ’ জায়গা পাবে না। ভুল স্বীকার তো করতেই হবে। ‘ব্যোমকেশ’-এ টেকনিক্যালি এক্সপেরিমেন্ট করতে পারছিলাম না। গল্পের খাতিরে নির্দিষ্ট কয়েক জন অভিনেতার সঙ্গেই কাজ করতে হচ্ছিল। আর একসঙ্গে দু’ দুটো ‘ব্যোমকেশ’, ফ্র্যাঞ্চাইজির জন্যও ভাল নয়। ওভারডোজ হয়ে যাচ্ছিল,’’ বেনিয়াপুকুরের বাড়ির অফিসে বসে একটার পর একটা সিগারেটে টান দিতে দিতে বলছিলেন অঞ্জন দত্ত।

‘ব্যোমকেশ’-এর লেগাসি ছেড়ে তিনি ফিরছেন নতুন মিউজিক্যাল ‘আমি আসবো ফিরে’ নিয়ে। ‘‘সব প্রজন্মেই প্রথা ভাঙার একটা প্রবণতা থাকে। এই প্রজন্মের ছেলে-মেয়ের মধ্যেও আছে। কিন্তু সেটা করতে গিয়ে কোথাও যেন তারা প্রথার সঙ্গেই জড়িয়ে যাচ্ছে। আধুনিকতার ক্রাইসিস, ভেঙে ফেলেও পুরনোকে আঁকড়ে ধরে বাঁচা, একাকিত্বের টানাপড়েন... প্রতিটি ঘরের সমস্যা। সেটাই আমার নতুন ছবির বিষয়। আমার কাছে আধুনিক স্টেটমেন্টই হল— আমি আসব ফিরে,’’ মত অঞ্জনের।

পরিচালক হিসেবে তাঁর ক্রাইসিস বুঝেছিল এসভিএফ। ‘‘আমার কাছে ‘ব্যোমকেশ’-এর পর যত জন প্রযোজক এসেছিলেন, সকলের দাবি আর একটি ছবি করার। সঙ্গে আর একটি ‘ব্যোমকেশ’ করার আর্জিও। কেউ বুঝতেই চাইছিল না, আমি কী করতে চাইছি!’’

‘আমি আসবো ফিরে’ ছবিতে অঞ্জন দত্ত। ছবি: সুদীপ্ত চন্দ

শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ছবি ব্যক্তিগত ভাবে পছন্দ না হলেও প্রযোজক শিবপ্রসাদের মুক্তকণ্ঠে প্রশংসা করলেন অঞ্জন। ‘‘যখন শিবু প্রযোজনা করল, তখন কিন্তু ওঁর মতো নয়, অনিন্দ্যকে (চট্টোপাধ্যায়) তাঁর মতোই ছবি বানাতে দিল।’’ অরিন্দম শীলের সঙ্গে ঝগড়াও মিটিয়ে ফেললেন! ‘‘দেখুন, আমার জীবনের শুরুতেই অরিন্দম। ‘বো ব্যারাকস...’-এ টাকা না নিয়েই কাজ করেছিল অরিন্দম। আমরা দু’জনেই ‘ব্যোমকেশ’ বানাচ্ছিলাম। তখন প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা বাজারে চাউড় করে দেওয়া হয়। আর আমরা ক্রিয়েটিভ মানুষ। কোন মেজাজে কাকে কী বললাম, তাতে কি সত্যিই কিছু এসে যায়?’’ প্রশ্ন অঞ্জনের।

বয়সে অনেকটা বড় হলেও পরিচালক অঞ্জনের প্রতিদ্বন্দ্বী সৃজিত মুখোপাধ্যায়, মৈনাক ভৌমিক, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় প্রমুখ। গানেও তিনি অনুপম রায়ের সমসাময়িক। ‘‘অনেক পরে শুরু করেছি বলে, এদের দলে আমি। এই সঙ্গটা বেশ উপভোগ করি। আর সে জন্যই হতাশা আমাকে গ্রাস করেনি।’’ বাবা নয়, সহকর্মী হিসেবে ছেলে নীলের সঙ্গে অঞ্জনের জুটি বেশি সফল। ‘‘স্ত্রী ছন্দাই সংসার সামলেছে। ও পাশে না থাকলে হারিয়ে যেতাম,’’ স্বীকারোক্তি অঞ্জনের।

আঘাত দিলে পরে তাঁকে ‘সরি’ বলতেও কুণ্ঠাবোধ করেন না তিনি। ঠিক-ভুলের ঊর্ধ্বে উঠে নতুন ভাবে ফিরে আসাতেই যেন অঞ্জনের পথ চলার আনন্দ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE