ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল।
‘বম্বে ভেলভেট’য়ের প্রচারের কাজ করতে করতে কি খুব ক্লান্ত?
পিঠে খুব ব্যথা। তা সত্ত্বেও দৌড়াদৌড়িটা তো করতেই হচ্ছে। সেদিন এয়ারপোর্টে আমাকে দেখে একজন টুইট করেছেন যে আমি নাকি ‘ব্যাড মুড’য়ে আছি। যিনি এ কথা লিখছেন তিনি তো জানেন না আমি কতগুলো ব্যথার ওষুধ খেয়ে কাজ করছি। সব সময় যে মুখে হাসি লেগে থাকবে এমনটা তো নয়।
বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে বিরাট কোহলির খারাপ পারফর্ম্যান্সের জন্য আপনাকে দোষ দেওয়া হয়েছিল। সেই সময় অনেকে আপনার পক্ষে কথা বলেছিলেন। তার জন্য আপনি কি কৃতজ্ঞ?
আমি পুরো ঘটনাটা থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছিলাম। কেউ ভাল কথা বললেও হোক বা খারাপ কথা, আমি কোনও কৌতূহল দেখাইনি, জড়িয়ে পড়িনি। যাঁরা সমর্থন করছেন তাঁদের ধন্যবাদ। কিন্তু ধন্যবাদটা আমাকে সমর্থন করার জন্য নয়। চারিদিকে যখন এত নেতিবাচক, নোংরা কথা মানুষজনের মাথায় ঘুরছে সেখানে বেশ কিছু মানুষ সমাজের প্রতি কিছু ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন, তার জন্য আমার ধন্যবাদ।
এই পরিণত চিন্তাভাবনার কারণ কি ইন্ডাস্ট্রিতে ছ’ছটা বছর কাটিয়ে দেওয়া?
আমি সব সময়ই এই রকম ছিলাম। এত বছর ইন্ডাস্ট্রিতে থাকার জন্য নয়। অস্থির সময়ে নিজেকে শান্ত রাখা স্বাভাবিক ভাবেই শিখেছি। যে সব কথা ভেবে কোনও লাভ নেই, সে সব কথা কেন ভাবব? আমি এটাও বুঝেছি এই সব ব্যাপার কতটা হাল্কা।
ক্রিকেটের প্রতি ভালবাসা থেকেই কি বিরাট কোহলির প্রতি আকর্ষণ?
তা নয়। কিন্তু যখন কোনও সম্পর্ক তৈরি হয় তখন যার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হচ্ছে তার সব কিছুর সঙ্গেই জীবনটা জড়িয়ে যায়। আগে ভাবতাম ক্রিকেট খেলাটা খুব সোজা। ব্যাট-বল হাতে নিলেই হল। কিন্তু এখন আমি জানি ব্যাপারটা অত সোজা নয়। অনেক পরিশ্রমের দরকার। বিরাট যদি ক্রিকেট না খেলে অন্য কিছু করত সেটাতেই আমার আগ্রহ আর কৌতূহল থাকত। তবে এখন আমি ক্রিকেট দেখতে ভালবাসি।
আপনার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে মানুষের এত কৌতূহল। রাগ হয় না?
মানুষের আমার প্রতি কৌতূহলের কারণ আমার কাজ। জীবন যখন যে ভাবে আসে সে ভাবেই তাকে গ্রহণ করেছি। আমি যা পেয়েছি তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। অপ্রীতিকর কিছু ঘটলে সেটাতে যদি আমি জড়িয়ে পড়ি তা হলে আমার কাজ নষ্ট হবে। আর সেটা আমি কোনও দিন হতে দেব না। আলটিমেটলি 'কাজটাই আমার কাছে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমার পরিবারই আমার কাছে সব থেকে বড় সাপোর্ট সিস্টেম। তা ছাড়া কোনও কিছুতেই কিছু যায় আসে না।
আপনি শুনেছি পুরস্কার না পেলে কাঁদেন।
(হেসে) সবার আগে এটা বলি, প্রথম ছবিতে কাজ করে পুরস্কার না পাওয়ার জন্যই শুধু কেঁদেছিলাম। নানা রকম অঙ্ক কষে ভেবেছিলাম আমিই ‘বেস্ট ডেবিউ’ পুরস্কারটা পাব। সেটা খুব হাস্যকর ছিল। কিন্তু এই ঘটনা থেকে একটা ব্যাপার শিখেছি। যতক্ষণ না প্রাপ্য জিনিস হাতে আসছে, ততক্ষণ সেটা আশা করা উচিত নয়।
আপনি তো বলেছেন সব নায়িকাই আপনার প্রতিদ্বন্দ্বী। তা সত্ত্বেও দেখা যাচ্ছে আপনারা পরষ্পরের প্রশংসা করছেন। কারণটা কী?
পরষ্পরের প্রশংসা করার ব্যাপারটা চিরকালই ছিল। কিন্তু মিডিয়া সেটা না প্রকাশ করে নেগেটিভ গল্প তুলে ধরতে চাইত। প্রতিদ্বন্দ্বী তো নায়কেরাও। নায়িকারা ঝগড়া করছে এই গল্পটাই তুলে ধরা হত এতকাল। যেন তারা একেবারেই অপেশাদার। তারা খোলামেলা ভাবে ঝগড়া করে। ধন্যবাদ সোশ্যাল মিডিয়াকে। তার জন্যই সত্যি কথাগুলো এই ভাবে বেরিয়ে আসছে।
‘এন এইচ 10’য়ে নিজের স্টান্ট নিজে করেছেন। ছবিটার প্রযোজকও ছিলেন। এত প্রেশার সমসাময়িক কোনও হিরোইন নিচ্ছেন না।
‘এনএইচ 10’ শারীরিক আর মানসিক ভাবে খুবই চাপে ফেলেছিল। তার পর মুম্বইয়ের গরম! আমি শীতকালে শ্যুটিং করা পছন্দ করি। কিন্তু কাজ থাকলে তো করতেই হবে। অন্য কোনও উপায় তো নেই। আমি একজন আর্মি অফিসারের মেয়ে। সেই জন্য আমার একটা পরিষ্কার ধারণা আছে। কাজ করার থাকলে সেটা করতেই হবে। তখন আমি ভাবি না গরম কতটা, কতটাই বা চাপে আছি। তখন মজা করে নিজেকে বলতে শুরু করি কত ঠান্ডা লাগছে, সোয়েটারটা বের করতে হবে। আরও এই সব কথা বলে বলে নিজেই নিজেকে হাসাই। মানসিক চাপটাকে বের করে দিই।
কর্ণ জোহরের সঙ্গে এই প্রথম কাজ করলেন। তা-ও আবার অভিনয়। কেমন লাগল?
কর্ণ জোহরের পরিচালনায় পরের ছবি করছি। কিন্তু হ্যাঁ, ওর সঙ্গে এত দিন আমার কোনও ছবি করার সুযোগ হয়নি। সহ-অভিনেতা হিসেবে ওর সঙ্গে কাজ করতে দারুণ লাগল। কর্ণ যাকে বলে একদম টিম-ম্যান। টিমের জন্য সবচেয়ে যেটা ভাল সেটাই ও করে। পুরোদস্তুর একজন অভিনেতার মতোই অভিনয় করেছে ও। অভিনেতাসুলভ কোনও অহঙ্কার করতে দেখিনি। দর্শকেরা কর্ণকে পর্দায় দেখলে সত্যি চমকে যাবেন।
এমন কোনও বন্ধুর দল আছে যাঁদের সঙ্গে ঘুরে বেড়ান, কঠিন সময়ে সমস্যার কথা আলোচনা করেন?
আমি শুধু আমার পরিবার আর মুষ্টিমেয় কিছু বন্ধুর সঙ্গে সময় কাটাতে ভালবাসি। বাইরে শেষ কবে ডিনার করতে গিয়েছি মনে নেই। বাড়িতে থাকা, রিল্যাক্স করা এগুলোই আমার কাছে বড় ব্যাপার। একদমই কিছু না করে বাড়িতে চুপচাপ বসে থাকা আমার দারুণ লাগে।
এই মুহূর্তে কী করতে ইচ্ছে করছে?
একটা মশালাদার সিনেমা করতে পারলে ভাল লাগবে। নাচ-গানে ভরপুর একটা ছবি। বলিউড বলতে ঠিক যা বোঝায়।
আপনি নাকি খেতে ভালবাসেন, রান্নাও করেন। বিরাট কোহলির জন্য কোনও স্পেশাল ডিশ?
না, আমি বিরাটের জন্য স্পেশাল কিছু কখনও রাঁধিনি। রাঁধবও না।
যখন ইচ্ছে করে তখনই রান্না করি। এমনিতে সময়ও পাই না। তা ছাড়া আমি ছ’মাস হল নিরামিষ খেতে শুরু করেছি। তাই স্পেশাল ডিশের প্রশ্নই ওঠে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy