Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

দীপিকা ছেড়ে আমার কথা বলুন না

বান্ধবীকে নিয়ে বেশি প্রশ্ন করায় রেগে গেলেন। প্রাক্তন বান্ধবীর কথা তোলায় তো উত্তেজিত! আবার পরের মুহূর্তেই রণবীর সিংহ হাসতে হাসতে বললেন কেন ‘ওটি’ থেকে টুইট করেছিলেন সেলফি। আনন্দplus দফতরে তাঁর মুখোমুখি নাসরিন খান ও অরিজিৎ চক্রবর্তীবান্ধবীকে নিয়ে বেশি প্রশ্ন করায় রেগে গেলেন। প্রাক্তন বান্ধবীর কথা তোলায় তো উত্তেজিত! আবার পরের মুহূর্তেই রণবীর সিংহ হাসতে হাসতে বললেন কেন ‘ওটি’ থেকে টুইট করেছিলেন সেলফি। আনন্দplus দফতরে তাঁর মুখোমুখি নাসরিন খান ও অরিজিৎ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৫ ০০:০১
Share: Save:

‘পিকু’ দেখেছেন?

হ্যাঁ, দেখেছি।

দীপিকার অভিনয় কেমন লাগল?

এটা ওর জীবনের শ্রেষ্ঠ অভিনয়। অমিতাভ বচ্চন, ইরফান খানের মতো অভিনেতাদের মধ্যেও ও সবার চোখে পড়েছে। ‘পিকু’তে ওকে দেখে মনেই হয়নি অভিনয় করছে। গত দু’বছরে যে সব ধরনের সিনেমায় ও কাজ করেছে, সেগুলো আমার খুবই ভাল লেগেছে। ওর সঙ্গে ‘বাজিরাও মস্তানি’তে কাজ করার জন্য মুখিয়ে আছি।

তা আপনি দীপিকাকে অভিনয়ে কোনও টিপস দিয়েছেন?

না, আমি কোনও টিপস দিই না। (একটু থেমে) আমাকে নিয়ে প্রশ্ন করুন না। আমরা তো শুধু দীপিকাকে নিয়েই কথা বলে যাচ্ছি!

আচ্ছা আপনার কথায় আসি, কিছু দিন আগে বলেছিলেন আপনি বিয়ের জন্য তৈরি...

(থামিয়ে দিয়ে) না, না, আমি সেটা বলিনি। এখন আমি পুরোপুরি কেরিয়ারে মন দিতে চাই। তাই মনে হয় বিয়ের বা বিয়ে পরবর্তী জীবনের জন্য ততটা সময় দেওয়াও সম্ভব হবে না আমার পক্ষে। কেরিয়ারের দিক থেকে অনেক কিছু করা বাকি। সেগুলো না করে বিয়ের কথা ভাবতে পারছি না।

আইপিএল-এর ফাইনাল দেখতে এসে নিশ্চয়ই খুব ভাল লাগছে...

আমার টিম মুম্বই ইন্ডিয়ান্স খেলছে। তাই খুব ভাল লাগছে...

কিন্তু র‌য়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু হেরে যাওয়ায় আপনি কি খুশি?

না, না। আরসিবি হেরে যাওয়ায় আমার সত্যিই খারাপ লেগেছে।

উত্তরটা ডিপ্লোম্যাটিক হয়ে গেল না!

কেন? ডিপ্লোম্যাটিক কেন? আমি সত্যিই চাইছিলাম আরসিবি-র একটা ম্যাচ আমি লাইভ দেখি। এই দলের তিনজনকে আমার খুব ভাল লাগে— বিরাট কোহলি, ক্রিস গেইল এবং এবি ডেভিলিয়ার্স। এই তিনমূর্তির খেলা লাইভ দেখাটা সত্যিই একটা ট্রিট হত।

কিন্তু শুনেছি বিরাটকে হারতে দেখে আপনার বেশ লাগে!

(কথা থামিয়ে দিয়ে) না। বিরাটকে হারতে দেখতে আমার বেশ লাগে, এটা আমি কোনও দিন বলিনি।

কিন্তু এই কথাটা নিয়ে ইউটিউবে ‘এআইবি রোস্ট’‌য়ে তো অনেক জোকস হয়েছে...

প্লিজ, ‘এআইবি’র রেফারেন্স টানবেন না। ওটা নিয়ে কথা বলতে পারব না। ওটা তো এখন সাব-জুডিস।

শুনেছি, অনিল কপূর আপনার আত্মীয় হন...

হ্যাঁ, আমার মেসো।

ওহ! মেসোর সঙ্গে প্রথম বার কাজ করে কেমন লাগল?

এটা একটা দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা। উনি তো আমার অন্যতম স্ক্রিন আইডল। এটা বললে বাড়িয়ে বলা হবে না যে, ওঁকে দেখেই আমি অভিনেতা হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলাম। ওঁর ছবি দেখে বড় হয়েছি। ওঁর মতো হতে চেয়েছি। বিশ্বাসই হয় না যে, আমার ছোটবেলার আইডলের সঙ্গে আমি অভিনয় করেছি।

এভারগ্রিন থাকা নিয়ে কোনও টিপস পেলেন ওঁর কাছ থেকে?

ওঁকে দেখেই শেখা যায় কী করে সব সময় এনার্জিতে ভরপুর থাকা যায়। প্রচুর ওয়ার্কআউট করেন। জিমে দারুণ নিয়মিত। খাওয়াদাওয়া নিয়েও খুব সচেতন। যেটুকু খাওয়ার সেটুকুই খাবেন। তার থেকে একটুও বেশি নয়। শরীরেরও খুব যত্ন নেন। এটা আমার খুব ভাল লাগে। কারণ অভিনেতাদের কাছে শরীরটাই তো ‘সেলিং পয়েন্ট’। ভাঙা গিটারে যেমন গান বাজানো যায় না, ভাঙা কাঁধ নিয়ে তো আর অভিনয় করা যায় না। প্রত্যেক অভিনেতারই উচিত শরীরটাকে মর্যাদা দেওয়া। যত আমার বয়স নয়, উনি তার থেকে বেশি বছর সিনেমায় অভিনয় করছেন। তবু ওঁর মধ্যে ছেলেমানুষি উদ্যম রয়েছে। বয়সের ছাপ একটুও পড়েনি। প্রত্যেকটা ছবিতে ওঁর এক্সাইটমেন্টটা দেখে মনে হয়, এটাই যেন ওঁর প্রথম ছবি।

আমি ‘দিল ধড়কনে দো’র শ্যুটিংয়ে প্রতিদিন ওঁর সঙ্গে ক্রুজে ওয়ার্কআউট করতাম। ওঁর যা ফিটনেস, তাতে আমাদের জেনারেশনের অভিনেতাদেরও টেক্কা দিতে পারেন। ওঁর বয়সে পৌঁছে আমিও যেন ওই রকম ফিট আর হ্যান্ডসাম থাকতে পারি।

লুকের কথা বললে বলতে হয়, সাজপোশাকের ক্ষেত্রে আপনি আলাদা। সবসময় পরীক্ষানিরীক্ষা করছেন লুক নিয়ে। কারণটা কী?

সত্যি বলতে, পোশাক নিয়ে বেশি ভাবনাচিন্তা করি না। নিজের মর্জি মতোই পোশাক পরি। আমি খুব মুডি। যে দিন যেমন মুডে থাকি, পোশাকও পরি তেমনটাই। কারও স্টাইল কখনও ফলো করি না। কারও পছন্দ অপছন্দের কথা মাথায় রেখেও আমি আমার লুকটা ঠিক করি না। আমার স্টাইলিস্ট যা ধরিয়ে দেয়, সেটাই পরি না। আমার যা ভাল লাগে সেটাই পরি।

আপনি হটকে ফ্যাশনের জন্য তো বেশ বিখ্যাত...

আমি সারা বিশ্বের ফ্যাশন নিয়ে অনেক খবর রাখি। খবর রাখতে ভাল লাগে। আমাকে সবাই অত প্রশংসা করলেও, এটা বলে রাখা ভাল যে, আমি কিন্তু অতশত ভেবে নিজের লুক সেট করি না। আমার সামনে এক ডজন স্যুট থাকলে আমি প্লেন কালো, সাদা, নেভি, বেইজ স্যুটের বদলে ফ্লোরালটাই বেছে নেব। তার কারণ অন্য স্যুটগুলো আমি আগে পরেছি। তাই নতুন কিছু পরার কথা মনে হবে। এমন কিছু পরব যেটা আমাকে আনন্দ দেবে। আমার ভাল লাগে উজ্জ্বল রং। আমার কাছে স্টাইল মানে যেটা ভিতর থেকে আসে।

কেমন লাগে যখন লোকে আপনাকে ভারতের জনি ডেপ বলে...

ওহ তাই! জনি ডেপের স্টাইলের মধ্যে অবশ্যই একটা স্বকীয়তা আছে। তার উপর দুর্দান্ত অভিনেতা। বিশ্বের অন্যতম সেরা তারকা। তবে এই কমপ্লিমেন্টটা আমার ভালই লাগে।

অনেক সময় আপনি এমন এমন ছবি টুইট করেন, যার কোনও মাথামুণ্ডু বোঝা যায় না। এই যেমন সে দিন অপারেশন থিয়েটার থেকে সেলফি...

(হেসে) আসল গল্পটা বলি তা হলে। আমি অপারেশন থিয়েটারে ছিলাম। কিছু সময় পরেই আমার সার্জারি। একজন এসে বলল, আমার সঙ্গে সেলফি তুলবে। আমি তো গালাগাল দিয়ে তাড়িয়ে দিলাম তাকে। কিন্তু পরে খারাপ লাগল। তাই ভাবলাম সবার সঙ্গে শেয়ার করি ওই ছবি। আমি নিজেই নিজেকে হাসানোর জন্য এ সব করতেই থাকি।

আপনি সারা পৃথিবীকে আনন্দ দেন। আবার নিজেকেও আপনার আনন্দ দিতে লাগে?

হতে পারে আমি সবাইকে এন্টারটেন করছি, কিন্তু আমারও নিজেকে এন্টারটেন করার দরকার। আমার মেজাজমর্জির পারদ অনেক বেশি ওঠানামা করে।

পর্দায় তো আপনি গভীর সব চরিত্র ফুটিয়ে তোলেন। ষেমনটা করেছেন ‘রামলীলা’য়। আপনি কি বাস্তব জীবনেও এমনটাই?

হ্যাঁ। আমি বাস্তব জীবনেও ভীষণ ইনটেন্স। ভাল হয়েছে আমি ফিল্মের মতো একটা প্ল্যাটফর্ম পেয়েছি, ষেখানে নিজের গভীরতাকে প্রকাশ করতে পারছি। আমার ভাল-খারাপ সব অনুভুতি প্রকাশ করতে পারছি পর্দায়। আর সেটা তো একটা আর্ট ফর্মই হচ্ছে। না হলে আমি বাস্তবে ওগুলোকে সামলাতে পারতাম না। আমি চাই না আমার রাগ-দুঃখ-কষ্ট কোনও লোক বা কোনও জিনিসের উপর গিয়ে পড়ুক।

সব সময় পজিটিভ চিন্তাভাবনা করি। আনন্দে থাকার চেষ্টা করি। হাসিঠাট্টা করতে ভালবাসি। আমি কর্কট রাশির তো। তাই অতি আবেগপ্রবণ, একটু বেশি সেন্সিটিভও। আমি সহজেই সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি। সহজে প্রভাবিত হয়ে যাই। এ সব থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য আমি সব কিছুকে হাল্কা চালে নিই। সবারই একটা ডার্কসাইড থাকে। আমি সেটা পর্দায় প্রকাশ করি। তাই আমার অভিনয়টাও মন থেকে আসে।

আচ্ছা, অনেক অভিনেত্রীর সঙ্গেই তো অভিনয় করলেন। কার সঙ্গে আপনার অনস্ক্রিন কেমিস্ট্রি সবথেকে ভাল বলে মনে হয়?

সেটা আমি বলতে পারব না। দর্শকরা বিচার করবেন। আমি তো সব চরিত্রই খুব সিনসিয়র ভাবে করার চেষ্টা করি। আমি কখনও কম্প্রোমাইজ করি না। সিনেমা সবাই মিলে বানানো একটা জিনিস। ওটায় সবার অংশগ্রহণটা সমানভাবে দরকারি। তুমি যতটা দেবে, ততটাই পাবে। সহ-অভিনেতাদের মধ্যে ওই সিনার্জিটা এলেই পর্দায় জাদু হবে। না হলে নয়।

আপনার কলিগরা তো এখন অনেক নতুন নতুন ধরনের কাজ করছেন। কেউ পরিচালক, কেউ প্রোডিউসর... আপনার এমন কোনও প্ল্যান আছে?

আমার তো কোনও এক দিন ফারহানের মতো হওয়ার খুব ইচ্ছে। ও কেমন প্রোডিউস করছে, লিখছে, অভিনয় করছে, লিরিক্স লিখছে, গান করছে... ক্রিয়েটিভিটিকে অনেক ভাবে প্রকাশ করছে।

পুনশ্চ: ইন্টারভিউ শেষ। ডিক্টাফোন বন্ধ করতেই সবাইকে অবাক করে নাসরিন খান-এর হাত ধরলেন দীপিকা পাড়ুকোনের বয়ফ্রেন্ড। ‘‘কী সব ব্যক্তিগত প্রশ্ন করলেন বলুন তো!’’ নাসরিন জবাবে বলেন, পেশাদার সাংবাদিক হিসেবে এ রকম প্রশ্ন করাটাই তো স্বাভাবিক। কফি মাগ হাতে নিয়ে মাথা নাড়তে নাড়তে রণবীর বেশ রেগেই বললেন, ‘‘নট ডান ম্যাডাম। নট ডান অ্যাট অল।’’

আনন্দplus-এর তরফ থেকে তাঁদের দেওয়া
উপহারের ছবি দু’দিন আগে ইন্সটাগ্রামে পোস্ট করলেন রণবীর কপূর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE