ফিল্লৌরী
পরিচালনা: অনশাই লাল
অভিনয়: অনুষ্কা, দিলজিৎ, সুরজ, মেহেরিন
৭/১০
‘এন এইচ টেন’, ছবির প্রথম প্রযোজনাতেই রুল-বইয়ের বাইরে বেরিয়ে, হৃদয় দিয়ে স্টেপ আউট করে খেলেছিলেন অনুষ্কা। নায়িকা গাড়ি চালাতে চালাতে ভিলেনকে পিষে মেরে দিচ্ছেন। শক্তিরূপেণ অনুষ্কা!
নাহ, এ বার কিন্তু সেই আশা নিয়ে ছবি দেখতে গেলে চলবে না। ‘ফিল্লৌরী’-তে আদ্যোপান্ত প্রেম আর ফ্যান্টাসিতে গা ভাসিয়েছেন তিনি। ছবি কতটা ভাল, সিনেমা হিসেবে উতরেছে কি না, ফেস্টিভ্যাল বা জাতীয় পুরস্কারের উপযুক্ত কি না, সে সব নিরর্থক। স্বপ্ন, ভূত আর প্রেমে হয়তো গল্প কোথাও খেই হারিয়েছে। এমনকী প্রথম অংশ বেশ অগোছালো। দ্বিতীয় ধাপেই পঞ্জাবের সোনার ফসলে ছবি জমেছে। ছবি অকারণ দীর্ঘও হয়েছে।
তবুও তো প্রেম! পূর্বজন্ম আর ভূতের ভেলকি দেখতে দেখতে দর্শকের মনে যাকে ধরে যাবে, তিনি হলেন দিলজিৎ দোসা়ঞ্জ। গানে, অভিনয়ে, নাচে বলিউড এ বার আরও এক নতুন রকস্টারকে পেল। (এ ছবিতে লজিক না খোঁজাই ভাল। তাই ‘উড়তা প়ঞ্জাব’-এর সঙ্গে তুলনা করবেন না)
ছবিতে দিলজিৎ বলিষ্ঠ অথচ আবেগপ্রবণ, কোথাও উদ্ধত, কিন্তু কবিতার কাছে, প্রেমের কাছে, প্রেয়সীর কাছে মাথা নোয়াতে জানেন তিনি। পঞ্জাবের মাটির গন্ধ তার গানে। সেই গান দিয়ে নেশা ধরিয়ে দিয়েছেন তিনি প়ঞ্জাবের ‘ফিল্লৌর’ গ্রামের বাসিন্দাদের। শিল্পই খুঁজে নিয়েছে তার শিল্পীকে। তার নেশায় চুর গ্রামের ডাক্তারের বোন শশী ওরফে অনুষ্কা। কিন্তু ছোটবেলা থেকে দাদার শাসনে বড় হয়ে ওঠা শশী শিখেছে শিক্ষিত ছেলেমেয়েরা গান বা কবিতার দিকে হাত বাড়ায় না। তা হলে লুকিয়ে শশী কবিতা লেখে কার জন্য?
এক দিকে অনুষ্কা আর দিলজিতের বেশ কয়েক বছর পিছিয়ে যাওয়া বুনো প্রেম, অন্য দিকে সুরজ শর্মা (লাইফ অব পাই-এর কথা ভাববেন না) আর মেহরিন পিরজাদার ২০১৭-র হাইটেক প্রেম। এই দুই ধারায় ছবি কখনও এগিয়ে, কখনও পিছিয়ে কথা বলে। এই আগুপিছুর মধ্যেই ভূত অনুষ্কা উড়ে এসে জুড়ে বসে। এমন মিষ্টি, উড়ুক্কু, আদুরে ভূত বলিউডে খুব কমই দেখা গিয়েছে। তবে অনুষ্কার থেকে আরও কিছু আশা করেছিল বোধহয় দর্শক। আরও গাঢ় অভিনয়। অদ্ভুতুড়ে সংলাপ!
আসলে নিজের ঘরের ছবি বলেই তিনি শুধু মাঠে একা খেলে যাননি। এ বার তাঁর টিমে অনেক নতুন মুখ। পরিচালক আনসাই লােলর এটা প্রথম ছবি। ছবির গানের দায়িত্ব সামলেছেন শাশ্বত সচদেব। ‘সাহিবা’ গানটি লোকের মুখে মুখে ফিরছে।
তবে ছবির বক্তব্য বলতে তেমন কিছু নেই। গতিও ধীর। প্রথম অংশ বেশ একঘেয়ে। অকারণ টেনে টেনে লম্বা করা হয়েছে।
তবুও বলব, ফেসবুক, টুইটারের ভার্চুয়াল জগতের চেয়ে অনুষ্কার পটে আঁকা স্বপ্নের প্রেমের ছবি ঢের ভাল। অল্প সময়ের জন্য দর্শককে প্রেমে-অপ্রেমে ভরিয়ে রাখে।
এ ভূতের হয়তো ভেল্কি নেই, কিন্তু ভবিষ্যৎ আছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy