Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

চমকে দিলেন তিন নায়িকা

কিন্তু চিত্রনাট্য আরও ঝরঝরে হতে পারত। লিখছেন স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়।পঁচিশ বছর পর হঠাৎ তিন বন্ধুর দেখা। মধ্যবয়সি তিন মহিলার একঘেয়ে জীবনের ক্যানভাস বদলাতে শুরু করে এই যোগাযোগের জন্য। জমিয়ে ফুচকা খাওয়া থেকে হুটপাট ছেলে পটানো কলেজের ঝলমলে দিনগুলো আবার ফিরে আসে, মালবিকা (ইন্দ্রাণী হালদার), ইরাবতী (রূপা গঙ্গোপাধ্যায়) আর ঝুমুরের (ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত) চঞ্চলতায়।

শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:৩৭
Share: Save:

পঁচিশ বছর পর হঠাৎ তিন বন্ধুর দেখা। মধ্যবয়সি তিন মহিলার একঘেয়ে জীবনের ক্যানভাস বদলাতে শুরু করে এই যোগাযোগের জন্য। জমিয়ে ফুচকা খাওয়া থেকে হুটপাট ছেলে পটানো কলেজের ঝলমলে দিনগুলো আবার ফিরে আসে, মালবিকা (ইন্দ্রাণী হালদার), ইরাবতী (রূপা গঙ্গোপাধ্যায়) আর ঝুমুরের (ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত) চঞ্চলতায়।

বন্ধু হলেও ‘আরও একবার’ ছবির এই তিন বান্ধবী মননে, বিশ্বাসে, জীবনে অনেকটাই আলাদা। কেউ সদ্য স্বামীকে হারিয়েছেন, কেউ বা ব্যস্ত স্বামীর অবহেলা নিয়ে বেঁচে আছেন। আর কেউ সম্পূর্ণ একা। তিন বান্ধবী পাহাড়ের কোলে দুপুরের আড্ডায় তাঁদের পেরিয়ে আসা জীবনের ঝড়ঝাপটার কথা বলেন। এই প্রতিকূলতাই তাদের এক রাস্তায় এনে দাঁড় করায়। নতুন চোখে জীবনটাকে একসঙ্গে দেখতে শেখে তারা। বিয়ের একঘেয়েমি কাটিয়ে খোলা আকাশে প্রাণ ভরে নিশ্বাস নেয় ইরাবতী। ডিভোর্সের পর নতুন করে প্রেম নিয়ে বাঁচতে শেখে ঝুমুর। আর একমাত্র মেয়ের সিঙ্গল মাদারহুডের ঝক্কি সামলে জীবনের সদর্থক দিকগুলো নিয়ে ভাবতে পারে মালবিকা। ছবিতে ক্যামেরার দৃষ্টিকোণগুলি সুন্দর। ইচ্ছে মতো বাঁচার আনন্দে চলতে চলতে ছবিতে তৈরি হয় আজকের মেয়েদের জীবনের জটিলতার নানা মুহূর্ত।

রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, ইন্দ্রাণী হালদার আর ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত—জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত এই তিন নায়িকার দাপুটে অভিনয়ই এ ছবির সব চেয়ে বড় প্রাপ্তি। চমৎকার দেখতে লেগেছে তিন নায়িকাকে। স্টাইলিস্ট অনিরুদ্ধ চাকলাদারের পোশাক নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে চরিত্রের নিজস্বতাও ফুটে উঠেছে।

ছবিতে এই তিন চরিত্রের নির্মাণ এমন ভাবে হয়েছে যাতে তিন অভিনেত্রীই স্বকীয়তা বজায় রেখে সেরা অভিনয়টা করতে পেরেছেন। ‘আরও একবার’-এ এই প্রথম তিন শক্তিশালী অভিনেত্রীর সখ্য, মন কষাকষি, খুনসুটির অনায়াস দৃশ্য ছবিটাকে গতিময় করে তুলেছে। আর দর্শকেরাও সেটা উপভোগ করেছেন। এর জন্যে ধন্যবাদ পরিচালক অরিজিৎ হালদার, চিত্রনাট্যকার সর্বজিৎ চক্রবর্তীকে। হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক আর ওপেন রিলেশনশিপ নিয়ে থাকা আজকের প্রজন্মের ছবিটা সাহেব ভট্টাচার্য আর সায়নী ঘোষের অনায়াস অভিনয়ে বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠেছে।

প্রথম দিকে যে গতি নিয়ে ছবিটা শুরু হয়েছিল, অযথা গানের ব্যবহারে তা ব্যাহত হয়। শুধু তাই নয়, গানের কথা ও ছবির বিষয়ভাবনা কোথাও কোথাও বড় বেশি বেমানান। ঋতুপর্ণার সঙ্গে প্রেমের দৃশ্যে বয়স্ক ফিরদৌসকে দেখতেও বেশ অস্বস্তি লাগে। ঘটনা কমিয়ে সম্পাদনার দিকে জোর দিলে ছবিটা আরও বেশি ঝরঝরে হতে পারত।
নজর রাখা উচিত ছিল ছবির দৈর্ঘ্যর দিকেও।

তিন নায়িকাকে ঘিরে গড়ে ওঠা এই ছবির আলাদা আলাদা কিছু মুহূর্ত মনে থেকে যাবে বহু দিন। ঝুমুরের একাকীত্বে ঋতুপর্ণা, একমাত্র মেয়ে বিদেশে চলে যাবার পর ইন্দ্রাণীর যন্ত্রণা, আর স্বামীর অবজ্ঞায় হতাশ রূপা যে যাঁর জায়গায় দাঁড়িয়ে উজ্জ্বল হয়ে ওঠেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE