বস টু
পরিচালনা: বাবা যাদব
অভিনয়: জিৎ, শুভশ্রী, চিরঞ্জিত, ইন্দ্রনীল,
নুসরত ফারিয়া
৪.৫/১০
আশঙ্কা ছিল, তিনি গাছে উঠে পড়বেন। কিন্তু না। এ গল্পের গোমাতা তিড়িং লাফে ব্যোমমার্গে ধাবিত হয়ে একেবারে অন্তরীক্ষে পৌঁছে গেলেন!
যাবে না-ই বা কেন! নায়কের নামই যে সূর্য। ইচ্ছাপূরণের বীরগাথায় সব রকমের অসম্ভবেই সে পারদর্শী। আর সেই অতিমানবিক ‘ওভারডোজ’ দেখতে দেখতে প্রেক্ষাগৃহের কৃত্রিম ঠান্ডাতেও গলা শুকিয়ে যায়। সানস্ট্রোকের উপক্রম হয়।
গপ্পো ফাঁদা হয়েছে মুম্বইয়ে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী থেকে পুলিশ কমিশনার (চিরঞ্জিত), সবাই অনর্গল বাংলায় কথা বলে! বাংলাতেই ‘জয় মহারাষ্ট্র’ ধ্বনি দেয়! নায়ক সূর্য মুম্বইয়ে এসেছিল ভাগ্যান্বেষণে। তার পরের অংশটা দস্যু মোহনের পলায়নের মতোই ধোঁয়াটে। নায়ক ধারাবীর ঝুপড়ি হইতে একেবারে ‘ভাই’ হইয়া গেলেন! তবে সে সবের ব্যাখ্যা আগের ছবিতে খানিক ছিল। গোটা শহর সূর্যর কথায় দু’বেলা ওঠবোস করে! মুখ্যমন্ত্রী তাকে পুত্রস্নেহে দেখে! আর খোদ পুলিশ কমিশনারের মেয়ে তার গার্লফ্রেন্ড (শুভশ্রী)!
নায়কের মন কি অত অল্পে ভরে! সে এ কালের রবিনহুড! গরিবের জন্য মন কাঁদে। আবার ‘ট্রিগার-হ্যাপি’ আঙুলের ছোঁয়ায় পটাপট লাশ ফেলে। শেষে এক দিন বান্ধবীর ছলছল চোখে গলে গিয়ে রিভলভারের সঙ্গে আড়ি করে। মাথায় চােপ নতুন খেয়াল— ‘সূর্য ফাউন্ডেশন’। ব্যবসার সঙ্গে সমাজসেবা। চাই ৩৫ হাজার কোটি টাকা! কিন্তু দেবে কে? নায়ক হাজির তার গোপী সাহেবের কাছে। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী। একটু নরমে-গরমে বোঝাতেই সে রাজি! টাকা জোগাড় করে দেবে। নায়কের বক্তৃতায় মুগ্ধ মুখ্যমন্ত্রীর ছেলে (ইন্দ্রনীল)। সে-ও যোগ দিল প্রকল্পে।
টাকা দিতে রাজি হল বাংলাদেশের এক ব্যবসায়ী। এ দিকে, মুখ্যমন্ত্রী খুন হয়ে গেল! সেই ব্যবসায়ী কথামতো প্রথমে পাঁচ হাজার কোটি দিয়ে দিল চুক্তি বা শর্ত ছাড়াই! তার পরেই সে বেপাত্তা। অগত্যা নতুন প্ল্যান। জনগণের থেকে টাকা তোলো। কোন জাদুমন্ত্রে কে জানে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অফিস খুলে কয়েক দিনেই চলে এল পুরো ৩৫ হাজার কোটি! সেই টাকা আবার অ্যাকাউন্ট থেকে চুরিও হয়ে গেল! নায়কের সন্দেহ সেই বাংলাদেশি ব্যয়সায়ীকে।
দেশ জুড়ে প্রবল জনরোষ। তাই ‘কর্তব্যে’ অটল কমিশনার সূর্যকে ধরে বটে, কিন্তু হবু জামাই তার হাত ছাড়িয়েও ফুড়ুৎ। তার পরে প্রথমে বাংলাদেশ। সেখান থেকে এক সুন্দরীর (নুসরত ফারিয়া) সঙ্গে ব্যাঙ্কক। সেখানেই চমকের পর চমক এবং অবশেষে দুষ্ট দমনের অতিনাটকীয় ক্লাইম্যাক্স।
বীরত্বের বহর দেখলে হলিউডের সুপারহিরোরাও লজ্জা পাবেন। সে বাইকে চড়ে সমারসল্ট-ই হোক বা হাত দিয়ে প্লেন ঠেলে শত্রু নিকেশের চেষ্টা— নিজের কাহিনি বলেই বোধহয় কোনও কার্পণ্য করেননি জিৎ। চিত্রনাট্য, পরিচালনা, অভিনয় বা সংগীত— কোনটা যে বেশি দুর্বল, তা বোঝা দায়। কুর্নিশ প্রাপ্য শুধু সিনেম্যাটোগ্রাফারের। তিনিই বোধহয় এ ছবির আসল ‘বস’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy