Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বন্ধুত্বই সম্পর্কের শেষ কথা

বিয়ের আট মাস পরেও মধুচন্দ্রিমায় যাওয়ার সুযোগ হয়নি। বন্ধুত্ব, প্রেম, বিয়ে নিয়ে খোলাখুলি আড্ডায় রাজা ও মধুবনী গোস্বামীবিয়ের আট মাস পরেও মধুচন্দ্রিমায় যাওয়ার সুযোগ হয়নি। বন্ধুত্ব, প্রেম, বিয়ে নিয়ে খোলাখুলি আড্ডায় রাজা ও মধুবনী গোস্বামী

রাজা-মধুবনী। ছবি: অর্পিতা প্রামাণিক

রাজা-মধুবনী। ছবি: অর্পিতা প্রামাণিক

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী
শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৭ ০০:২৮
Share: Save:

প্রথম আলাপ ‘ভালবাসা ডট কম’-এর সেটে। তবে প্রথম দর্শনে প্রেম নয়। অনস্ক্রিন ওম-তোড়ার মধ্যে যতটা প্রেম, অফস্ক্রিন রাজা আর মধুবনীর মধ্যে ছিল ঠিক ততটাই দূরত্ব। এমনকী শ্যুটিংয়ের প্রথম ছ’-আট মাস দু’জনে পরস্পরের ফোন নম্বরও নেননি। রেষারেষির ঠান্ডা লড়াই দিয়েই শুরু হয়েছিল তাঁদের সম্পর্ক।

মধুবনীর কথায়, ‘‘আমাদের একটা রোম্যান্টিক দৃশ্যের শ্যুট চলছিল। রাজার অভিনয় দেখে বেশ জোরেই হেসে ফেলি। আর ও খুব রেগে গিয়েছিল। মেকআপ রুমে এসে আমাকে বলল, তুমি যদি আর এ রকম করো, ফ্লোর ছেড়ে বেরিয়ে যাব।’’ রাজা শুধরে দিলেন, ‘‘তখনও ‘তুমি’ নয়, ‘তুই’ বলতাম।’’ তবে এটা ছিল ট্রেলার। পিকচার আভি ভি বাকি হ্যায়!

মধুবনী একটা শোয়ের জন্য বেরোবেন। চেয়ারে রাখা ব্যাগপ্যাকটা নিতে গিয়ে দেখেন, ব্যাগের সঙ্গে চেয়ারটাও উঠে আসছে। আসলে চেয়ারের সঙ্গে ব্যাগটা তালা-চাবি দিয়ে আটকানো। এটা ছিল রাজার কীর্তি।

রাগারাগি তো হল, অনুরাগের ছোঁয়াটা কবে লাগল?

মধুবনীর কথায়, ‘‘ধারাবাহিকের পাশাপাশি আমরা যাত্রাতেও কাজ শুরু করি। গ্রামে গ্রামে অনুষ্ঠান করতে যাওয়ার ফাঁকেই বন্ধুত্বটা গড়ে ওঠে।’’ এর মধ্যেই রাজা ধরিয়ে দিলেন, ‘‘প্রোপোজ কিন্তু ও-ই আমাকে করেছিল। এমনকী অনেক আগে থেকেই ও আমাকে নিয়ে ভাবতে শুরু করেছিল।’’ লজ্জায় মধুবনীর মুখটা বেশ লাল দেখাচ্ছিল। বললেন, ‘‘এটা সত্যি। রাজাকে দেখে মনে হতো, ওর মতো লাইফ পার্টনার পেলে খুশি হব। কিন্তু ওর তখন গার্লফ্রেন্ড ছিল। আর সেটা জেনে আমি কখনও এগোতাম না। আমি ওকে প্রোপোজ করেছি, যখন ও সিঙ্গল।’’ এক বারেই কি রাজা হ্যাঁ বলেছিলেন? মধুবনীর কথায়, ‘‘উত্তরটা দিয়েছিল ফোনে। প্রথমে বলে ‘হুঁ’ আর তার পরে ‘দেখছি’। আসলে এগুলোই ওর হ্যাঁ,’’ হাসির রেশ দেখা গেল নবদম্পতির মুখে।

রাজা আর মধুবনীর সম্পর্কের চাবিকাঠি নিখাদ বন্ধুত্ব। মধুবনী বলছিলেন, ‘‘যখন ওকে প্রোপোজ করি, দু’জন দু’জনের ব্যাপারে প্রায় সব কিছুই জানতাম। বিশ্বস্ততার উপরেই আমাদের সম্পর্ক দাঁড়িয়ে।’’

আরও পড়ুন: অতিরিক্ত মদ্যপানেই কি ক্লারার মৃত্যু, তদন্ত

মধুবনীর সবচেয়ে ভাল গুণ কোনটা? ‘‘ওর গান শুনে প্রেমে পড়েছিলাম। সব পরিস্থিতিতে ও মানিয়ে নেয়,’’ অকপট স্বীকারোক্তি রাজার। আর খারাপ গুণ? ‘‘খুব সেলফি তোলে। দু’মাস বাদে বাদে ফোন পাল্টায়। আর নম্বর ঠিক করে সেভ করে না। সময়েরও কাণ্ড-জ্ঞান নেই।’’ রাজার সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ তাঁর স্ত্রী। ‘‘ওর তো সবই ভাল। খারাপ একটাই, ছোটখাটো ব্যাপার নিয়ে আমাকে রাগায়। তবে সেই ঝগড়াগুলো কিউটই লাগে,’’ সংযোজন মধুবনীর। তবে রাজার সবচেয়ে ভাল গুণ ধরিয়ে দিলেন রাজা নিজেই। ‘‘বলো, আমি স্মোক-ড্রিঙ্ক করি না। একটাই নেশা, সেটা হল জিম।’’ মধুবনীও পাল্টা বললেন, ‘‘আমারটাও বলো, আমিও এ সব করি না।’’ তা হলে কি ইন্ডাস্ট্রির পার্টিতেও যান না? মধুবনী বললেন, ‘‘আমরা পার্টি অ্যানিমাল নই। খুব কম যাই। আর ড্রিঙ্ক করি না বলে, যে দু’-একটায় গিয়েছি বেশ অস্বস্তি হয়।’’

ইন্ডাস্ট্রিতে আপনাদের ভাল বন্ধু কারা? রাজা স্পষ্ট বললেন, ‘‘এই ইন্ডাস্ট্রিতে ভাল বন্ধু হয় না। ভাল সহকর্মী বা খারাপ সহকর্মী হয়।’’ মধুবনী বললেন, ‘‘সুদীপ্তা আমার ঘনিষ্ঠ বান্ধবী। আর দু’জনেরই কাছের বন্ধু শান।’’

সিনিয়র শিল্পীদের মধ্যে রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়, কুশল চক্রবর্তী আর শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের স্নেহ ও পরামর্শ সবসময় পেয়েছেন রাজা-মধুবনী। রাজার কথায়, ‘‘প্রথম ব্রেক দিয়েছিলেন সুশান্তদা (দাস)। সাফল্য পেয়েছি স্নেহাশিসদার (চক্রবর্তী) হাত ধরে। আর ব্যক্তিগত ভাল লাগা আর শ্রদ্ধার সম্পর্ক লীনাদির (গঙ্গোপাধ্যায়) সঙ্গে। উনি পুজোয় একবার টিশার্ট দিয়েছিলেন। সেটা আমার খুব ভাল লেগেছিল।’’ মধুবনী বললেন, ‘‘লীনাদির বুটিকের লাল বেনারসি পরেই বিয়েতে বসেছিলাম।’’

বিয়ের সবে আট মাস! ঝগড়া হলে এখন প্রথম সরি কে বলে? ‘‘বিয়ের আগে আমি বলতাম, তবে এখন আর কেউই বলি না। জানি তো, একে নিয়ে চলতে হবে,’’ খিলখিলিয়ে হাসতে হাসতে বললেন মধুবনী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE