সকালের প্রথম চা-টা।
আগের দিনের উত্তাল নাচনকোঁদন, তুলকালাম সব খাওয়াদাওয়া হঠাৎ বিষবৎ মনে হচ্ছে তো? ওই মাহেন্দ্রক্ষণে সব থেকে জরুরি দিনের প্রথম এক কাপ কালো চা, সঙ্গে দু’টো থিন অ্যারারুট। যত তাড়াতাড়ি খাদ্যনালীতে প্রবেশ করছে সেটা, ভাল দিনের শুরু হবে ঝটপট। চায়ে একটু মিশিয়ে নেওয়া যায় আদা, দারচিনি বা গোলমরিচ।
তবে আবার ভেবে বসবেন না, দশটা ওই রকম কাপ ফলটাকে দশ গুণ করবে! বরং ভেজা টি-ব্যাগটাকে অবসর মতো একটু চোখে চেপে ধরতে পারেন। পরপর কয়েক দিন ঘুম কম হওয়ার ফলস্বরূপ চোখের ফোলা ভাব কমাতে কাজে দেবে সেটা। অবশ্য এক কাপ চায়ের সঙ্গে চলতে পারে কড়া করে টোস্ট করা পাঁউরুটির উপরে মধু মাখিয়ে খাওয়া। দুধ-কর্নফ্লেক্স, বা দই সহযোগে বেশি করে ব্রেকফাস্ট এনার্জি-বুস্টার হিসেবে ভাল কাজ করে। দুগ্ধজাত দ্রব্যের এ ব্যাপারে সুনাম রয়েছে।
মরসুমটা উৎসবের। লেগেই আছে হই-হই। সকালে নেমন্তন্ন, বিকেলে পার্টি। দেশি-বিলিতি বিবিধ গুরুপাক খাদ্য। গ্রুভি বিট্স-এর সঙ্গে উদ্দাম নাচ। এক-এক সময়ে ক্লান্তিতে সত্যিই ছেড়ে দিচ্ছে শরীরটা। পরদিন সকাল থেকে মাইগ্রেনের আক্রমণ, বমি বমি-ভাব, মাথাব্যথা, বদহজম, হাত-পায়ের পেশিতে হঠাৎ ক্র্যাম্প। এই সব সময়েই কাজে লেগে যেতে পারে চেনা কিছু ওষুধ বা পথ্য। যেমন চিরকেলে চেনা হোমিওপ্যাথিক ওষুধ নাক্স ভমিকা।
যে কোনও ধরনের পার্টি হ্যাং-ওভার কাটাতে খুবই কাজে লাগে ওই ওষুধ। পার্টির যথেচ্ছ খাদ্য ও পানীয় লিভারের উপরে বেশ চাপ ফেলছে। তাই হাতের কাছে সব সময়ে রাখা জরুরি নাক্স ভম।
জ্যুসারটা সব সময়ে কাজে লাগে না? তবে এই মরসুমে ওটাকে আর কোথাও সরানোর দরকার নেই। পার্টির সময় ছাড়া অন্য সময়গুলোতে রাজত্ব করতে দিন সব ধরনের ডি-টক্স সব্জি বা ফলের রসকে। শরীরে ভিটামিনের মাত্রাটা ঠিকঠাক রাখা বড় জরুরি। ক্লান্তি কাটাতে, শক্তি ফেরাতে, মুখ-হাত-পায়ের চামড়ার ঔজ্জ্বল্য বাড়াতে বিটরুট, গাজর, ব্রকোলি, আনারস, কলা, সবুজ আপেল- এ সবের রস রয়েছে তালিকার প্রথমে।
রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, ত্বকের জেল্লা ফেরাতে দু’টো আপেল, একমুঠো পালং পাতা, এক টুকরো শসা, এক কোয়া লেবু, চাইলে খানিক সেলেরি পাতা, একটা আনারসের এক-চতুর্থাংশ, একটা গোটা অ্যাভোক্যাডোর এক-চতুর্থাংশ একসঙ্গে রস করে মিশিয়ে খান। অথবা দু’টো আপেল, দু’টো গাজর, এককোয়া লেবু, কিছুটা আদার রস একসঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া অবশ্যকর্তব্য। বেশি করে জল খাওয়ার তো বিকল্প নেই কোনও। জলীয় পদার্থের পরিমাণ যত বেশি থাকবে, পাকস্থলীর শক্তি তত বাড়বে। তাই ডাবের জল, বিভিন্ন লেবুর রস, টোম্যাটোর রস পার্টির হ্যাং-ওভার কাটাতে অব্যর্থ।
আর ডিম। হ্যাঁ, শুনতে অবাক লাগলেও ডিমে উপস্থিত এক ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিড উল্টোপাল্টা খাদ্য-পানীয়ে শরীরে গজানো টক্সিনকে তাড়াতে ওস্তাদ। তার উপরে, ডিমে ভিটামিন ‘বি’র মাত্রা বেশি থাকে। সমীক্ষা বলছে, এই দুই উপাদানই হ্যাংওভার কাটাতে কাজে লাগে।
সবই রয়েছে হাতের নাগালে। কাজেই পার্টি চলুক পুরোদমে। পরের দিনের পথ্যটা শুধু ঠিক থাকলেই হল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy