ছবির সেটে হ্যারিসন ফোর্ড, ডেইজি রিডলি ও জন বোয়েগা
সাবধান শাহরুখ। সাবধান দীপিকা। সাবধান দর্শক।
‘দিলওয়ালে’ না ‘বাজিরাও মস্তানি’ — কোনটা দেখবেন, এখনও যদি ঠিক করে উঠতে না পারেন, তা হলে কিন্তু দু’টোই গেল।
কারণ, আমেরিকা-ইউরোপ-অস্ট্রেলিয়া বক্সঅফিস তোলপাড় করে শুক্রবার থেকে ভারতেও মুক্তি পাচ্ছে ‘স্টার ওয়ার্স: দ্য ফোর্স অ্যাওয়েকেন্স’।
আর ‘স্টার ওয়ার্স’ আপনার পাড়ায় নেমে পড়া মানে, বন্ধুমহলে, সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন সব তোলপাড় শুরু হবে যে, ওটা না দেখে আপনি থাকতে পারবেন না।
রিলিজের প্রথম সপ্তাহেই ‘স্টার ওয়ার্স: দ্য ফোর্স অ্যাওয়েকেন্স’য়ের বক্সঅফিস কালেকশন পেরিয়ে গিয়েছে ৫১৭ মিলিয়ন ডলার (ভারতীয় টাকায় প্রায় ৩৪২৭ কোটি)! হিসেবটা একটু সহজ করে দিচ্ছি। বক্সঅফিস সংগ্রহের নিরিখে সর্বকালের সেরা ছবি ‘অবতার’। জেমস ক্যামেরনের সে ছবির প্রথম সপ্তাহের কালেকশন ছিল ৮৫ মিলিয়ন ডলার (ভারতীয় টাকায় প্রায় ৫৬৩ কোটি)!
বুঝতেই পারছেন কেমন ব্যবসা করতে চলেছে ‘স্টার ওয়ার্স’।
‘স্টার ওয়ার্স’ জ্বরে জুকারবার্গ-কন্যাও
ব্যবসা একটা দিক। ‘স্টার ওয়ার্স’ মানে তো নস্টালজিয়াও। না হলে ট্রেলার দেখে কেন কেঁদে ফেলবেন ম্যাথু ম্যাকনাহি-র মতো অভিনেতা? কেনই বা রিলিজের দিনই সিনেমা হলে যাবেন ফেসবুক প্রধান মার্ক জুকারবার্গ? আর ইয়োডার সাজে মেয়ের ছবি পোস্ট করবেন? ফেসবুক-ইন্সটাগ্রামে আমেরিকা-ইউরোপের বন্ধুদের পোস্ট দেখেও নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন কেমন ‘বাজ়’ ওখানে।
পাগলামির কমতি নেই ভারতেও। চিত্র পরিচালক সুমন ঘোষ যেমন এই সময়ে আমেরিকায় না থাকার জন্য দুঃখ করছিলেন। কারণ, পেশায় তো তিনি ফ্লোরিডা আটলান্টিক ইউনিভার্সিটির অধ্যাপকও। বলছিলেন, ‘‘ওখানে থাকলে এক সপ্তাহ আগেই দেখে নিতে পারতাম ‘স্টার ওয়ার্স’! পরিচালক হিসেবে ছবি দেখার একটা সমস্যা হল, ছবির টেকনিকগুলো মাথার মধ্যে এসে যায়। তাতে ছবি দেখার মুগ্ধতা কিছুটা ফিকে হয়ে যায়। কিন্তু দেখেছি আজও ‘স্টার ওয়ার্স’ দেখতে বসলে প্রযুক্তি বা টেকনিক — এ সব কথা মাথাতেই আসে না। এটাই এই সিরিজের ম্যাজিক।’’
ম্যাজিক তো বটেই। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে ডিজনির ব্যবসায়িক পরিকল্পনা। না হলে কোনও ছবি শুধু মার্চেন্ডাইজ (লাইটসেবার, ডার্থভেডার বা স্টর্মট্রুপার হেলমেট) বিক্রি করে রোজগার করতে পারে ৫ বিলিয়ন ডলার (ভারতীয় টাকায় ৩৩ হাজার কোটি)! এখনও পর্যন্ত রিলিজ না হওয়া দেশ বলতে ভারত আর চিন। এই দু’দেশে ‘স্টার ওয়ার্স’ নিয়ে যে রকম আগ্রহ, তাতে স্পষ্ট, মুক্তি পাওয়ার পর বক্স অফিস আকাশ ছোঁয়া হওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা।
তবে ভাববেন না, শুধুমাত্র সায়েন্স-ফিকশন হলমুখী করছে দর্শকদের। প্রথম ‘স্টার ওয়ার্স’য়ে জর্জ লুকাস যেমন ছুঁয়ে গিয়েছিলেন ভিয়েতনাম যুদ্ধ। তেমনই অনেকের মতে এ বারের ছবিতে আছে ৯/১১ পরবর্তী সরকারি নজরদারির ইঙ্গিত। সব মিলিয়ে তাই ছবি দেখার জন্য ফুটছে কলকাতা। কবি শ্রীজাত যেমন ‘ফার্স্ট ডে, ফার্স্ট শো’ ছাড়া ভাবতেই পারছেন না। বলছিলেন, ‘‘হলে গিয়ে প্রথম দেখেছিলাম ‘দ্য এম্পায়ার স্ট্রাইকস ব্যাক’। সেই থেকে মুগ্ধ হয়ে আছি ‘স্টার ওয়ার্স’য়ে। তার পরে যতগুলো দেখেছি সব ক’টা দেখে অবাক হয়ে গিয়েছি। ছোটবেলায় যেমন মুগ্ধ হতাম, এখনও তেমনই হই। ‘দ্য ফোর্স অ্যাওকেন্স’য়ে তো আরও অনেক অভিনবত্ব থাকবে। তাই এটা প্রথম দিনই দেখে ফেলতে হবে।’’
প্রথম দিন দেখতে চাওয়ার তালিকাটা নেহাত ছোট নয়।
তবে শুক্রবার আসতে তো এখনও দু’দিন বাকি। সিনেমা হলে যাওয়ার আগে, ‘স্টার ওয়ার্স’ সিরিজের আগের ছ’টা ছবি একবার ডিভিডি প্লেয়ারে চালিয়ে দেখে নেবেন নাকি!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy