Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

নায়িকা নিজে কি বাড়ি-গাড়ি কিনতে পারে না?

উত্তেজিত পায়েল সরকার। বারবার করে তাঁর বয়ফ্রেন্ডদের কথা স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়-এর নেওয়া সাক্ষাৎকারে উঠে আসায়উত্তেজিত পায়েল সরকার। বারবার করে তাঁর বয়ফ্রেন্ডদের কথা স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়-এর নেওয়া সাক্ষাৎকারে উঠে আসায়

শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৫ ০০:০১
Share: Save:

বেল বাজতেই খুলে গেল দরজা। ফোন কানে অভ্যর্থনা জানালেন ভিতরে। টি শার্ট আর কেপ্রিতে পায়েল সরকার তখন তাঁর টকেটিভ বেস্ট... ফোনে কথা চলল আরও খানিকক্ষণ হাই... কেমন আছ?

বাড়িতেই আছি। মানে কী? আমি বাড়িতে থাকতে পারি না?

তুমি শুধু ভাবো টপ হিরোইন...

সত্যি বয়ফ্রেন্ডের অভাব... অথচ সকলে ভাবে আমার অনেক বয়ফ্রেন্ড...

পরে কথা বলছি। এখন টা টা।

আইফোনটা বন্ধ করে মুচকি হেসে বললেন, ‘‘ফোনটা ধরে নিলাম। বন্ধু ছিল। স্যরি।’’

পায়েল সরকারের বয়ফ্রেন্ডের অভাব?

একদম তাই। একজন শিক্ষিত সুপুরুষের খোঁজ দিন না। ইন্ডাস্ট্রির বাইরে কেউ আছে? প্রেমে পড়ার মানুষ খুঁজছি।

ইন্ডাস্ট্রির পুরুষরা কী দোষ করল?

দোষের কিছু নেই তো। কাজ কাজের জায়গায়। ব্যক্তিগত সম্পর্কের সঙ্গে সেটা মিশিয়ে ফেলা ঠিক না।

বেশ পরিণত লাগছে আপনাকে...

অভিজ্ঞতা শিখিয়ে দিয়েছে। পায়েল সরকারের কাজ নয়, তাঁর বয়ফ্রেন্ড নিয়ে বেশি আলোচনা হয় কেন বলুন তো?

দেখুন সম্পর্ক ছিল বলেই তো এক সময় আপনাকে রাজ চক্রবর্তীর গার্লফ্রেন্ড হিসেবে দেখা হত। সেটা আপনার কাজে কি ক্ষতি করেছিল?

একজন নায়িকা হিসেবে আমি কখনওই চাইব না আমাকে রাজ চক্রবর্তীর গার্লফ্রেন্ড হিসেবে লোকে জানুক। সম্পর্ক ছিল। ব্রেক আপ হয়েছে। আমি কাউকে এর জন্য দোষও দিচ্ছি না। এটা আমার ভুল! কিন্তু আমি যে ইমোশনাল স্ট্রাগলের মধ্যে দিয়ে গিয়েছি, তার কথা তো কেউ জানতে চায় না! ‘লে ছক্কা’, ‘প্রেম আমার’ হিট, তা-ও আমি কাজ পাচ্ছি না। পাচ্ছি না কেন, তার কারণ আজও জানি না। রাজের পরিচালনায় ছবি করলাম। সেটাও হিট। তার পরেও টানা এক বছর কোনও ছবি নেই। মাথাখারাপ লাগত। কাউকে তো বলতেও পারতাম না কাজ দিন। কিন্তু কোনও দিন মাঠ ছাড়িনি। যে ভাবেই হোক, টিকে ছিলাম।

রাজের ছবি ‘কাটমুন্ডু’ থেকেও তো আপনি বাদ পড়েছিলেন?

পরিচালক কাকে ছবিতে নেবেন, সেটা তার ব্যাপার। আমার চরিত্রটাই শ্রাবন্তী করেছে। এটা হতেই পারে। আফটার অল ইটস ডিরেক্টর্স চয়েস।

ইন্ডাস্ট্রিতে হিরোইন হিসেবে আপনি তো সব সময়ই ‘প্রোডিউসর্স চয়েস’। ‘চতুষ্কোণ’ থেকে ‘লড়াই’-এর কাস্টিংয়ে প্রযোজকরাই নাকি আপনাকে চেয়েছিলেন?

আচ্ছা! তাই নাকি?

শুধু আচ্ছা বলে এড়িয়ে গেলে হবে না। ইন্ডাস্ট্রিতে যে আপনার একাধিক প্রযোজক বন্ধু আছেন, এটা তো মানবেন?

হয় বয়ফ্রেন্ড, নয় প্রযোজক... এর বাইরে কি হিরোইনদের কিছু নেই? ‘চতুষ্কোণ’ আর ‘লড়াই’য়ের প্রযোজককে কিন্তু আমি আগে থেকে চিনতাম না। ছবিটা করতে গিয়ে চিনেছি। আগে থেকে র‌্যাপো তৈরি করে কাজ পাইনি বিশ্বাস করুন। তবে একজন প্রযোজক আছেন, তিনি আমার দাদার মতো। হ্যাঁ, তার সঙ্গে আড্ডা মারি। অসুবিধেটা কোথায়?

মানে আপনার এই ফ্ল্যাট বা হন্ডা অ্যাকর্ড...

(থামিয়ে দিয়ে) কোনওটাই কোনও প্রযোজকের দেওয়া নয়। এত বছর ইন্ডাস্ট্রিতে আছি। একজন নায়িকা তাঁর সামর্থ্য দিয়েই বাড়ি গাড়ি কিনতে পারে। এই সোজা হিসেবটা মানতে এত অসুবিধে হচ্ছে কেন?

বাবা-মা তেঘরিয়ায়। আপনি রুচিরা রেসিডেন্সিতে একা। এই হিসেবটা কী রকম?

দেখুন, দশটা বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে প্রেম করার জন্য বা গোপন প্রেমের জন্য আমি একা ফ্ল্যাটে থাকি না। কাজের জন্য এই জায়গাটায় থাকতে সুবিধে হয়। এবং কাজ ফুরিয়ে গেলেই আমি তেঘরিয়ায় চলে যাই। এটাই হিসেব। আচ্ছা বলুন তো, কোনও নায়কের একা ফ্ল্যাটে থাকা নিয়ে তো কেউ প্রশ্ন করে না। নায়কের চারটে গাড়ি হলে সেটা তার স্টারডমে অ্যাড করা হয়। আর নায়িকার থাকলে লোকে ভাবতে বসে কোন প্রযোজক দিল?

বেশ রেগে আছেন আপনি।

রাগারই কথা। আমার যোগ্যতা না থাকলে প্রযোজক বা পরিচালক এমনিই ছবিতে আমাকে কাস্ট করতেন? সৃজিতের মতো পরিচালক, যে কাস্টিং নিয়ে খুবই খুঁতখুঁতে, সে কি এমনি এমনিই আমাকে ‘চতুষ্কোণ’য়ে নিয়ে নিল?

একটা সময় শোনা গিয়েছিল সৃজিত আর আপনার বিয়ে হলে ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত নিতবর হবেন...

(প্রচণ্ড হাসি) আমরা মজা করতাম।

হেসে প্রশ্নটা উড়িয়ে দিচ্ছেন তো? ইন্ডাস্ট্রিতে বলা হয় ‘চতুষ্কোণ’য়ের সময় সৃজিতের সঙ্গে আপনার প্রেম ছিল?

বাজে কথা, কোনও প্রেম ছিল না।

সেকী! আনন্দplus-কে একটা সাক্ষাৎকারেই তো আপনি এই সম্পর্কের কথা বলেছিলেন...

সৃজিত আমার ভাল বন্ধু, এটুকুই বলেছি।

টলিউডের সেরা নায়িকাদের নিয়ে সৃজিত সম্প্রতি যে ছবি তৈরি করলেন, সেখানে আপনি নেই কেন জানতে চাননি?

সৃজিত যখন ‘চতুষ্কোণ’য়ে আমাকে নিয়েছিল, তখন যেমন জানতে চাইনি কেন নিয়েছিল, আজও জানতে চাই না কেন নেয়নি। তবে সৃজিতের ছবিতে ভাল চরিত্র করার অপেক্ষায় থাকি।

সৃজিত তাঁর নতুন বান্ধবীর সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিয়েছেন আপনাকে?

(মুচকি হেসে) না, এখনও করায়নি। কেন যে আলাপ করিয়ে দিচ্ছে না!

শুধু সৃজিতের ছবি করার অপেক্ষাতেই থাকেন?

আরে, তা কেন? কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে কখনও কাজ করিনি। শিবুর (শিবপ্রসাদ) সঙ্গে কথা হয়েও কাজ করা হচ্ছে না। আর রিনাদির ( অপর্ণা সেন) ছবিতেও কাজ করতে ইচ্ছে করে।

অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরীর ‘ক্যাফে কিনারা’ আর অঞ্জন দত্তর ‘হেমন্ত’তেও তো কাজ করছেন।

হ্যাঁ, এই দুই পরিচালকের সঙ্গে অনেক দিন ধরেই কাজ করার খুব ইচ্ছে ছিল। চরিত্র দুটো খুব ইন্টারেস্টিং। সামনে মুক্তি পাবে আবীরের সঙ্গে ‘যমের রাজা দিল বর’।

যমের রাজার কাছে কী বর চাইবেন?

‘যমের রাজা দিল বর’ আমার নতুন ছবি। মুখ্য মহিলাচরিত্রে আমি। তবে বলে রাখি, এই ছবির প্রযোজক কিন্তু এক মহিলা। এবারও কি প্রযোজকের পছন্দ নিয়ে কথা বলবেন? এখন তো সব ধরনের সম্পর্কই হয়! (একটু হেসে)

আপনি নাকি ফারহান আখতারের জন্য পাগল?

উফ্, কত কী পারে একসঙ্গে একটা মানুষ। পরিচালনা, অভিনয়, মিউজিক।

সিনেমার খাতিরে কতটা সাহসী হতে পারবেন আপনি? বিকিনি পরতে পারবেন?

শুধু ফোটোশ্যুটের জন্য আমি বিকিনি পরব না। আর সাহসের কথা বলছেন? ‘চতুষ্কোণ’-এর ওই স্মুচিং সিনটার কথা ভাবুন। বা আরও কয়েকটা দৃশ্য যেখানে আমাকে যথেষ্ট খোলামোলা দেখানো হয়েছে। সেগুলো তো করেই ফেলেছি। এমনিতেও ট্যাঙ্ক টপ বা ব্যাকলেস চোলি— সবেতেই আমাকে মানায়। তবে চরিত্রের খাতিরে সিনেমার জন্য দরকার হলে বিকিনি পরব।

একটু টলিউডের কথায় ফিরি। পরম-আবীরের মধ্যে কাকে বেছে নেবেন?

এটা খুব বাজে প্রশ্ন। আমাকে লড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। পরমের নানা দিক আছে। অভিনেতা, পরিচালক, গায়ক। আবীর আবার নিজের অভিনয় নিয়ে ফোকাসড। নানা ধরনের চরিত্র করছে। একই সঙ্গে ব্যোমকেশ, ফেলুদা-ও। তবে দু’জনের দু’টো মিল আছে।

সেগুলো কী?

দু’জনেই ইদানীং খুব শরীর সচেতন। জিম করছে রেগুলার, আর দু’জনেরই দিন দিন মহিলা ফ্যান বাড়ছে।

আর জিৎ?

আমি যখন ছবি করতে আসি, তখন থেকেই ও হিরো। ও যখন আমার ছবির প্রশংসা করে, আমি লাফাতে লাফাতে বাড়ি ফিরি। ‘বচ্চন’য়ে কাজ করেছি। কিন্তু ওর সঙ্গে আরও কাজ করতে ইচ্ছে করে। আমার সঙ্গে সোহমের কেমিস্ট্রিটাও কিন্তু দারুণ। ওকেও অনেক স্ট্রাগল করতে হয়েছে।

শুভশ্রী, শ্রাবন্তীর সঙ্গে সম্পর্কটা কেমন?

কাজ করা হয়নি। তবে তনুশ্রী আর পার্নো আমার খুব ভাল বন্ধু। আর ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে খুব সম্মান করি। কমার্শিয়াল আর আর্বান দু’ধারাতেই নিজেকে ঢেলে দিয়েছেন তিনি। টলি ইন্ডাস্ট্রিতে এখন ভাল অভিনয়ের সময়। ‘ওপেনটি বায়োস্কোপ’, ‘বেলাশেষে’র মতো ছবি হিট হচ্ছে। ভাবুন তো ঋত্বিক চক্রবর্তীর কথা। খুব যে পিআর করে, গসিপ করে তা তো নয়। শুধুমাত্র নিজের অভিনয়টা দিয়ে নিজের জায়গা করে নিচ্ছে। অভিনয়ের জন্য আজ সে ‘সেরা বাঙালি’। ভাল কাজের দাম কিন্তু ইন্ডাস্ট্রি দেয়।

‘সেরা বাঙালি’ অনুষ্ঠানে আপনি খুব মন দিয়ে অনির্বাণ লাহিড়ীকে দেখছিলেন...

(খুব উত্তেজিত) হ্যাঁ, দেখছিলাম। কাগজে পড়লাম এশিয়ার সেরা গল্ফা়র। তার পর সেদিন অনুষ্ঠানে দেখি হলুদ পাঞ্জাবিতে একেবারে অন্য লুক-তাই দেখছিলাম...আর কী?

ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE