আপনার ছবি ‘জুরাসিক ওয়ার্ল্ড’৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ওপেনিং পেল প্রথম উইকএন্ডেই। আপনিই তো প্রথম ‘খান’ হিসেবে এই রেকর্ড করলেন। কেমন লাগছে?
দারুণ লাগছে। খুব আনন্দ হচ্ছে ছবির পরিচালক এবং গোটা ইউনিটের জন্য। আমি সংখ্যায় বিশ্বাস করি না। তবে এটা ভেবে ভাল লাগছে হলিউডে ক্রমশ ভারতীয় প্রতিভা স্বীকৃতি পাচ্ছে। এত দিন তো হলিউডে স্পেন, চিন, দক্ষিণ আফ্রিকার অভিনেতারাই রাজত্ব করত। সে দিক থেকে দেখতে গেলে ওমর শরিফের অবদান ভুলে যাওয়ার নয়। মিশর থেকে আসা ওমর হলিউডে নন-আমেরিকান অভিনেতা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
তার মানে কি ভারত আর ভারতীয়রা হলিউডি মানচিত্রে ক্রমশই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে?
ওরা প্রতিভাকে স্বীকৃতি যেমন দেয়, তেমনই পরীক্ষানিরীক্ষা চালাতেও দারুণ ভালবাসে। ‘লাইফ অব পাই’য়ের দুর্দান্ত সাফল্যের পর ভারতের প্রচুর গল্প উঠে আসছে হলিউডে।
পরিচালক সুজিত সরকার কিন্তু বলেন ভারতের আন্তর্জাতিক তারকা বলতে আপনিই...
প্রত্যেকের স্বাধীন মতামত আছে। আমি অভিনয় দিয়ে মানুষের হৃদয় জয় করতে চাই, সেটাই আমার একমাত্র উদ্দেশ্য। শুনে ভাল লাগছে ওঁরা আমার ছবির গল্পের জন্য অপেক্ষা করে থাকেন।
টম হ্যাঙ্কস-এর সঙ্গে ইরফান খান
তবে এটা তো ঘটনা যে আপনিই একমাত্র ভারতীয় অভিনেতা হিসেবে বলিউড–হলিউড দু’ জায়গাতেই সেরা কাজগুলো করার সুযোগ পাচ্ছেন।
আমি এখনও অভিনেতা হিসেবে নিজেকে তৈরি করছি। আর জানি আমি একটা ভাল জায়গাতেই রয়েছি। আমি দু’জায়গাতেই সেরা কাজগুলো করতে চাই। গত মাসে ‘পিকু’র সাফল্য যেমন একটা দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা। দর্শক অসম্ভব ভালবেসেছে ছবিটাকে। আর এখন তো ‘জুরাসিক ওয়ার্ল্ড’ও বক্স অফিসে দারুণ ওপেনিং পেল।
‘জুরাসিক ওয়ার্ল্ড’-এর সেটে কাজের পরিবেশটা ঠিক কেমন ছিল?
অনবদ্য অভিজ্ঞতা। শ্যুটিং হয়ে যাওয়ার দু’মাস পরেও ইউনিটের সদস্যদের পারস্পরিক ভালবাসায় টান পড়েনি এতটুকু। ঠিক অনুরাগ কাশ্যপ বা নিশিকান্ত কামতের সঙ্গে কাজ করে যে অভিজ্ঞতা হয়, এখানেও ঠিক সেটাই হয়েছিল।
আমি চাই ভারতীয় ডিরেক্টররা এমন সব ছবি বানান, যা দেখে বিশ্ব চমকে যাবে
দীপিকার মতো মূলধারার ছবির নায়িকার সঙ্গে কাজ করে কেমন লাগল?
বেশির ভাগ অভিনেত্রী ইদানীং খুব উচ্চাকাঙ্ক্ষী। আর খুব ইন্টারেস্টিং সিনেমাও করছেন তাঁরা। দীপিকার ঝুলিতেও বক্স অফিস সেরা ছবির সংখ্যা অনেক। তবে ‘পিকু’ ওঁর কাছে নিঃসন্দেহে একটা বিরল অভিজ্ঞতা। যে ভাবে দর্শক কানেক্ট করেছে ওঁর চরিত্রের সঙ্গে সেটা অবিশ্বাস্য।
আপনি কি কঙ্গনাকে বলেছেন ‘তনু ওয়েডস মনু রিটার্নস’য়ের সাফল্যের পর আর কোনও নায়কই ওঁর সঙ্গে কাজ করবেন না?
(হাসি) কঙ্গনা সত্যি একজন নায়কের জায়গাই নিয়ে নিচ্ছে। খুব ভাল গল্প আর একজন বড় স্টার না হলে কঙ্গনার খুব অসুবিধে হবে এখন। যে ধরনের ছবি করছে তাতে তো ও নিজেই নায়ক।
‘জুরাসিক ওয়ার্ল্ড’-এর সাফল্যে ‘ইনফার্নো’ ইউনিটের প্রতিক্রিয়া কী?
অবিশ্বাস্য। আমরা সবাই একসঙ্গে সিনেমাটা দেখেছি। আসলে পরিচালক রন হাওয়ার্ডের মেয়ে ব্রাইস ডালাস হাওয়ার্ডও অভিনয় করেছেন ছবিটাতে। ছবির সাফল্যে তাই আমরা সাঙ্ঘাতিক উত্তেজিত। আমি তো চাইব আমাদের ভারতীয় ডিরেক্টররা এমন সব ছবি বানান, যা দেখে সারা বিশ্ব চমকে যাবে। ভারতীয় পরিচালকদের নড়েচড়ে বসার সময় হয়েছে। হলিউডি ছবির ভারতীয় আঞ্চলিক ভার্সানগুলোতে ডাবিংয়ের মান অত্যন্ত খারাপ। ওটাকে ভাল করতে পারলে কিন্তু আমাদের সিনেমা ব্যবসা হলিউডের সিনেমাকে কয়েক গোল দিয়ে দিতে পারে।
আপনি কি জানেন নতুন যে অভিনেতারা আসছেন, তাঁদের মনে আপনার সম্পর্কে একটা বিরাট ধারণা রয়েছে?
হ্যাঁ, জানি, ওরা আমার মতো হতে চায়। আমার মনে হয় আমি ওদের সংকেত দিচ্ছি। যারা বোঝার, তারা ঠিকই বুঝছে এবং এগিয়ে যাচ্ছে লক্ষ্যের দিকে। আমিও তো সেই কাজটাই করেছি জীবনে।
হোম প্রডাকশনের কী খবর?
আমার পরের ছবি ‘মাদারি’ মুক্তি পাবে কিছু দিনের মধ্যেই। আমার স্ত্রী সুতপা শিকদার আর শৈলেশ সিংহ প্রযোজনা করছেন ছবিটি। আমরা আরও একটা ছবি নিয়ে প্রস্তুত। মীরা নায়ারের ভাইপো ইশান অভিনয় করছে সে ছবিতে। আমি থাকছি না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy