Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সম্পর্কে কমিট করার সময় নেই, সোজাসাপ্টা রুক্মিণী

নয় নয় করেও প্রথম বছরেই দুটো ছবি। তাই এখন ঠিক করেছেন মন দিয়ে শুধু অভিনয়ই করবেন। আর সম্পর্ক? খোলামেলা আড্ডায় রুক্মিণী মৈত্র।অভিনয়ে একদম রাজি ছিলেন না। পরে অবশ্য মত বদলেছেন। গত জুনে রিলিজ করেছিল ‘চ্যাম্প’। আর দু’মাস পেরোতে না পেরোতেই দ্বিতীয় ছবি ‘ককপিট’। দুটো ছবিতেই যদিও বিপরীতে দেব। যিনি নাকি আবার তাঁর কাছের বন্ধু, বয়ফ্রেন্ড নন...

রুক্মিণী মৈত্র

রুক্মিণী মৈত্র

শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৭ ০১:৩৬
Share: Save:

সেই তেরো বছর বয়সে প্রথম মডেলিং। তার পর থেকে রুক্মিণী মৈত্রর কেরিয়ার গ্রাফ শুধুই ঊর্ধ্বমুখী। দেশের সেরা সেরা ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপনের মুখ হয়েছেন। র‌্যাম্পে হেঁটেছেন দেশের সেরা ডিজাইনারদের হয়ে। অভিনয়ে একদম রাজি ছিলেন না। পরে অবশ্য মত বদলেছেন। গত জুনে রিলিজ করেছিল ‘চ্যাম্প’। আর দু’মাস পেরোতে না পেরোতেই দ্বিতীয় ছবি ‘ককপিট’। দুটো ছবিতেই যদিও বিপরীতে দেব। যিনি নাকি আবার তাঁর কাছের বন্ধু, বয়ফ্রেন্ড নন...

প্র: যিনি অভিনয়ই করতে চাননি, প্রথম বছরেই তাঁর দুটো ছবি?

উ: সত্যি, না! আমি তো অভিনয় করব না বলেই ঠিক করেছিলাম। ‘চ্যাম্প’-এর সময় দেব-রাজদা মিলে এমন জোরাজুরি করল, খানিকটা নিমরাজি হওয়ার মতো হ্যাঁ বলেছিলাম। তবে ‘ককপিট’-এর ব্যাপারটা সম্পূর্ণ আলাদা। আমার মনে হয়, ভাল সিনেমায় কেন শুধু হিরোরাই তারিফ পাবে! হিরোইনদের বেলায় কিচ্ছু জুটবে না। সে দিক থেকে এই চিত্রনাট্যটা আলাদা। ছবিটা ভীষণ ভাবে মহিলাকেন্দ্রিক। আমিও তাই একটু লোভী হয়ে পড়লাম। আর রাজি হয়ে গেলাম।

প্র: আপনি বাংলা ছবি দেখেন?

উ: (হাসি) না, দেখতাম না। তবে কুরোসাওয়া, হিচকক দেখতাম। বাংলা ছবি একটাই মনে করতে পারছি, ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’। এখন প্রিমিয়ারে গেলে পুরো ছবিটাই দেখি। ইন্ডাস্ট্রিতে যখন এসে পড়েছি, ছবিগুলো দেখে নেওয়া উচিত। এই তো শিবুদার (শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়) কাছ থেকে ওঁর সব ছবির ডিভিডি চেয়ে নিয়ে এলাম।

প্র: তবে কারমেল কনভেন্টের ছাত্রী, এমবিএ পাশ... বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে?

উ: পড়াশোনাটা আমাদের পরিবারে চালিয়ে যেতেই হতো। আমার নিজেরও ভাল লাগত। পড়াশোনা করাটা সব কাজের জন্যই দরকারি। আর বাংলা ছবির কথা বললে বলব, কেন নয়? এখন তো সবই গ্লোবাল হয়ে উঠছে। ভাষার ব্যবধানটা আর কোনও সমস্যা নয়। আমি তো রাশিয়ান ছবি পেলেও করব।

প্র: যশরাজের ছবিই তো করেননি! আফসোস হয় সে কথা ভেবে?

উ: একেবারে না। যশরাজ থেকে যখন অফার করা হয়, তখন আমার বয়স পনেরো-ষোলো। ও রকম অপরিণত বয়সে সিনেমাজগতে ঢোকা ঠিক হতো না। তখন আমার প্রায়োরিটি ছিল পড়াশোনা। এখন যেমন অভিনয়। দশ বছর পর বাচ্চা হয়ে গেলে হয়তো সেটাই প্রায়োরিটি হয়ে যাবে।

আরও পড়ুন: অক্ষয় কী ভাবে হয়ে উঠলেন শয়তান বিজ্ঞানী, দেখুন ভিডিও

প্র: সে কী! উঠতি নায়িকার মুখে বাচ্চার কথা!

উ: হা হা হা। উফ, আপনারা পারেনও! আমি একটা উদাহরণ দিয়েছি মাত্র। ‘চ্যাম্প’-এর পর থেকে তো শুধু ছুটেই বেড়াচ্ছি। সাকসেস পার্টিতেও যেতে পারিনি। ‘ককপিট’-এর শ্যুট শুরু হয়ে গিয়েছিল। এ ছবিতে আমার স্টান্ট আমি নিজে করছি। একবার পা কেটে গিয়েছিল। এমনকী ডাক্তার দেখাতে যাওয়ার সময় পর্যন্ত পাইনি।

প্র: ব্যস্ততার জন্য বয়ফ্রেন্ড দেবের সঙ্গে অসুবিধা হচ্ছে না?

উ: আমি তো কখনও দেবকে বয়ফ্রেন্ড বলিনি। ওটা আপনারা বলেন। দেব আমার খুব কাছের বন্ধু। অভিনয়ের পেশাকে বাইরে থেকে যতই ঝলমলে দেখাক না কেন, আসলে ভীষণ ডিম্যান্ডিং। বললাম না, ডাক্তার দেখাতে পর্যন্ত যেতে পারছি না। আমার কমিটমেন্ট এখন কাজের প্রতি। সম্পর্কে কমিট করার সময় নেই। আর বন্ধুত্বে অসুবিধে কোথায়? বন্ধুত্বের সেরা অংশ হল, আগের বার যেখানে শেষ হয়েছিল, পরের বার সেখান থেকেই শুরু করা যায়। ব্যস, আর কী!

প্র: আচ্ছা। তা হলে জিৎ কোনও ছবির অফার করলে রাজি হবেন?

উ: অবশ্যই। জিৎ ইজ ভেরি জেনুইন। আপনারা এই যে টলিউডে গ্রুপ, গ্যাং... এ সব বলেন না, এগুলো কিন্তু আসলে নেই। এত ছোট ইন্ডাস্ট্রি, তার মধ্যে দলবাজি হলে ইন্ডাস্ট্রিরই ক্ষতি। সেটা দেব-জিৎ সবাই বোঝে। কম্পিটিশন আছে। সেটা তো ভাল। প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকলে কেউ বাড়তি চেষ্টা করবে কেন?

প্র: আপনার প্রতিদ্বন্দ্বী কারা?

উ: ওরে বাব্বা! সবে তো একটা ছবি করলাম। আমি নিজেকে এখনও অভিনেত্রী বলেই মনে করি না। এখনই কম্পিটিটর ভাবতে যাব! সবার সঙ্গে আমার ভাল সম্পর্ক। কোয়েল, মিমি, সায়ন্তিকা... আমি তো ওদের অভিনয় দেখে কমেন্টও করি। ভাল লাগলে বলি, খারাপ লাগলেও। ওরাও ‘চ্যাম্প’ দেখে মতামত জানিয়েছিল।

প্র: তাঁরা নিশ্চয়ই আপনার কাজ দেখতে সিনেমা হলে গিয়েছিলেন...

উ: (থামিয়ে দিয়ে) আমি সে ভাবে ভাবি না। শুধু আমাকে দেখতেই যাবে কেন? অন্যকে নিয়ে এত ভাবতে গেলে নিজের গ্রোথটা হবে কী করে?

প্র: নিজের অভিনয়ের বিকাশ কেমন হচ্ছে?

উ: আরে, প্রথম দিন সেটে গিয়ে বুঝলাম, আমার পুরনো শেখাগুলো ভুলতে হবে (হাসি)। মডেলিংয়ের সময় তো ক্যামেরা অ্যাঙ্গল গুরুত্বপূর্ণ হয়। সেই খেয়ালটা ছিল। সিনেমায় দেখলাম, এ পুরো অন্য জগৎ। আমাকে তো কেউ কোনও দিন অভিনয় শেখায়নি...

প্র: কাছের বন্ধুও না?

উ: (হাসি) ‘চ্যাম্প’-এর সময় সাহায্য করেছিল। এ বার একটুও সাহায্য করেনি। আমার শ্যুটিং শেডিউল ছিল দেবেরও চোদ্দো-পনেরো দিন আগে। কত বার বলেছি, সেটে আসতে। একবারও আসেনি। শুধু বলেছে, ‘এ বার তুমি নিজের মতো করো’।

প্র: আর এক রুক্মিণীও তো আছেন?

উ: কোয়েল বরং খুব সাহায্য করেছে। ওর সঙ্গে আমার আগেই আলাপ ছিল। জানেন, তখনই বলত, ‘তোমার অভিনয়ে আসা উচিত। তুমি এলে অনেক পরিবর্তন হবে।’ আমার তো মনে হয়, বাংলা ছবির জগতে ও-ই সম্রাজ্ঞী। অবাঙালি বৃত্তেও লোকে কিন্তু ওকে চেনে। তবে ওকে দেখলে এতটুকু বোঝা যাবে না।

প্র: আপনি অনেক বার বলছেন অভিনয় শেখার কথা। তা মুম্বইয়ে তো অনেক অ্যাক্টিং ক্লাস আছে...

উ: একদম মনের কথা বলেছেন। আমি ভীষণ ভাবে চাই ক্লাস করতে। পড়াশোনার পরিবার থেকে এসেছি তো। অভিনয়টাকেও সেই থিওরিতে ফেলতে চাই। কিন্তু তার জন্য সাত-আট মাসের একটা ব্রেক দরকার। ‘ককপিট’-এর পর সেটা পেলে অ্যাক্টিংয়ের ক্লাস করার খুব ইচ্ছে আছে আমার।

প্র: র‌্যাম্প থেকে ছবির সেট। জার্নিটা কেমন লাগছে?

উ: দশ বছরের জার্নি। মনে হয় সবচেয়ে বড় র‌্যাম্প ওয়াক (হাসি)। জোকস অ্যাপার্ট। প্রথম সিনেমা থেকে এত অ্যাপ্রিসিয়েশন পেয়েছি। এক কথায়, আমি অভিভূত।

অরিজিৎ চক্রবর্তী

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE