Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

হঠাৎ খেলতে গিয়ে

বাতাসে হিমেল হাওয়ার সঙ্গে এসে গেল অফিসের উইন্টার স্পোর্টস। এ দিকে অভ্যেস নেই একেবারে? উপায় বাতলাচ্ছেন চিন্ময় রায়সিক্স-এ সাইড কর্পোরেট ফুটবল আর ছোট বাউন্ডারিতে টেনিস বল-এ ক্রিকেট তো ছিলই। তার মধ্যেই এসে পড়ছে অফিস স্পোর্টস। ঝাঁ-চকচকে কর্পোরেট অফিসের নিজস্ব কেবিনের আরাম ছেড়ে মাঠে নামতে হবে এক্সিকিউটিদের।

শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬ ০০:০০
Share: Save:

সিক্স-এ সাইড কর্পোরেট ফুটবল আর ছোট বাউন্ডারিতে টেনিস বল-এ ক্রিকেট তো ছিলই। তার মধ্যেই এসে পড়ছে অফিস স্পোর্টস।

ঝাঁ-চকচকে কর্পোরেট অফিসের নিজস্ব কেবিনের আরাম ছেড়ে মাঠে নামতে হবে এক্সিকিউটিদের।

টিভিতে মেসি-কোহালি-বোল্টদের দেখে যতই মনে মনে ভাবুন এ তো আমিও পারি, আমি বলব একটু সাবধানে।

কর্পোরেট টুর্নামেন্ট আর অফিস স্পোর্টসে কিছু করে দেখাতে গিয়ে অনেকেই কিন্তু চোট-আঘাতের কবলে পড়েন। আসলে একবার প্রতিযোগিতার মধ্যে ঢুকে পড়লে বয়স, অপেশাদারিত্ব বা দক্ষতার অভাব — সবই ভুলে যায় মানুষ। অতিরিক্ত চেষ্টায় এসে যায় আঘাত। বিশেষ করে খেলার পরদিন শরীরের যন্ত্রণায় ভোগেন অফিসবাবুরা।

ব্যথা-বেদনার সম্ভাবনা ৯০% বেড়ে যায় মূলত দু’টো কারণে: ১) খেলার শুরুতে বিজ্ঞানসম্মত ভাবে ওয়ার্ম-আপ অর্থাৎ গা না ঘামানো। আর ২) প্রতিযোগিতার আগে শারীরিক প্রস্তুতি না নেওয়া।

বুঝিয়ে বলছি:

১) প্রথমটা হল, ওয়ার্ম-আপ। যে কোনও খেলা শুরুর আগে ওটা একদম বাধ্যতামূলক। উসেইন বোল্টের অ্যাথলেটিক্স হোক বা ব্যাডমিন্টনের পি ভি সিন্ধু — গা গরম করা মাস্ট। তবে পদ্ধতিটা এ বার একটু বুঝে নিন। মিনিট ২-৩ হালকা জগিং করুন। তারপর সাইড ওয়েজ অর্থাৎ পাশাপাশি দৌড়োন। ২০ মিটারের দূরত্বে হাই-নি রান করুন। এ বার পাশাপাশি হাই-নি। একই দূরত্বে ৩-৪টে লং স্ট্রাইড মানে স্প্রিণ্টের থেকে কম গতিতে লম্বা পায়ে দৌড়োন। এতে শরীর থেকে ঘাম বেরোবে। হার্ট-রেট বাড়বে। পেশিতে রক্তের সঞ্চালন হবে। জয়েণ্টগুলো মোবাইল হবে। এখন কয়েকটা স্ট্রেচিং করুন। অবশ্যই ডায়নামিক স্ট্রেচ মানে বডি পার্ট মুভ করবে। যেমন হ্যামস্ট্রিং-এর জন্য দাঁড়িয়ে হাই-কিক। হিপ ফ্লেক্সরের জন্য লাঞ্জ পজিশনে ওঠানামা। মাটিতে শুয়ে ওয়াইপার অর্থাৎ কোমরটা গাড়ির কাঁচ পরিষ্কারের কাঁটার মতো এ পাশ-ও পাশ করা। ক্রিকেট বা ব্যাডমিন্টন খেললে কাঁধের জন্য অবশ্যই আরও কিছু স্ট্রেচ করুন। ঠিকভাবে ওয়ার্ম-আপ করলে অনেক চোট-আঘাতই এড়ানো যায় কারণ পেশি আর জয়েন্ট ধকল নেওয়ার জন্য প্রস্তুতির সুযোগ পায়, যা দুম করে মাঠে নেমে পড়লে হয় না।

২) এ তো গেল স্পোর্টসের দিন। আমি বলব, প্রতিযোগিতার ২-৩ সপ্তাহ আগে থেকে সপ্তাহে ২ দিন দৌড়াদৌড়ি করুন যাকে বলে কন্ডিশনিং। এ জন্য দিনে ৩০ মিনিট বরাদ্দ করুন। যেমন মাঝারি গতিতে মিনিট দশেক দৌড়োন। পায়ে মেপে ২০ পা অর্থাৎ ২০ মিটার দূরত্ব বানান। এ বার স্প্রিণ্ট করে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পৌঁছোন। হেঁটে বা জগিং করে ফিরুন। এরকম ১০-১৫টা স্প্রিন্ট করুন।

লেক তো আছেই, তবে সময় না-পেলে ইন্ডোরেও কন্ডিশনিং করতে পারেন। বাড়িতে লম্বা জায়গা না থাকলেও সমস্যা নেই। এক জায়গায় দাঁড়িয়ে স্পট হাই নি রান করুন ২ মিনিট বেশ জোরে। ২ মিনিট বিশ্রাম নিয়ে আবার ৫ বার রিপিট করুন। এতে দম বাড়বে।

সপ্তাহে ২ দিন ২০-৩০ মিনিট বরাদ্দ করুন জোর বাড়ানোর ব্যায়ামের জন্য। জিমে যেতে পারলে তো কথাই নেই। না পেলে নিজের বডি ওয়েট নিয়ে পুশ আপ, পুল আপ, প্ল্যাঙ্ক, সাইড প্ল্যাঙ্ক এগুলো করুন। পায়ের জন্য স্কোয়াট, একপায়ে ব্রিজ, লাঞ্জ আর স্টেপ আপ করুন।

সপ্তাহ তিনেকের স্ট্রেংথ আর কন্ডিশনিং শুধু আপনার খেলার দক্ষতা প্রকাশে সাহায্য করবে না, চোট-আঘাত কমিয়ে আপনাকে ম্যাচ ফিট করে তুলবে।

এ বার বলি একটু সাবধানতার কথা। যদি খেলতে খেলতে পায়ের পিছনের পেশি হ্যামস্ট্রিং বা কাফ মাসলে টান ধরে তা হলে মাথায় রাখবেন দু’টো বিষয়। শুয়ে পড়ে পা ৯০ ডিগ্রি সোজা করে ৩০ সেকেন্ড ধরে থাকুন। স্ট্রেচ করলে টান কমে যায়। সঙ্গে বরফ লাগান।

শেষে বলি, বেশি চাপ নেবেন না। পুরস্কার না-ই বা পেলেন, পার্টি সিজিন শুরুর আগে শরীরের মর্চেগুলো তো ঝরল। সেটাই বা কম কী!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE