যে দিন থেকে ব্রেকিং নিউজে ‘শিনা বোরা মার্ডার্ড’ দেখানো শুরু হয়, ঠিক সে দিন থেকে তাঁর পুরো জীবনটা বদলে যায়। ‘‘আমি যে পাগল হয়ে যাইনি, এটাই আমার কপাল। আমি এই শোতে এসেছি টাকার জন্য। গুয়াহাটিতে আমাদের বাড়িতে এলে দেখবেন সব জিনিসপত্র একে একে বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়েছি আমরা। বাড়ি ভাড়া থেকে কুড়ি হাজার টাকা পাই। সেই দিয়েই কোনও রকমে আমাদের সংসার চলে। তাও তো দিদিমা চলে গেলেন গত অক্টোবরে। এখন আমি আর নানাজি। জানেন, মাসের ২৫ তারিখের পর আর টাকা থাকে না আমাদের। শুধু লাল চা আর ব্রেড খেয়ে থাকি। মাঝে মধ্যে ড্রাইভারি করি কাউকে কিছু না বলে। গুয়াহাটি থেকে নাওগাঁ, তেজপুর — এ সব জায়গায় বন্ধুর গাড়ি নিয়ে গিয়ে দু’পয়সা কামাই,’’ বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন মিখাইল। কান্নাটা দেখে টিআরপি-র জন্য ‘কান্না’ কিন্তু মনে হল না।
কথাগুলো বলেই সিগারেট রুমে চলে যান তিনি। ফিরে এসে বললেন, ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায় কী ভাবে তাঁদের পরিচয় বদলে দিয়েছিলেন। কী ভাবে তাঁকে ঢোকানো হয়েছিল মেন্টাল হাসপাতালে। কী ভাবে ছ’মাস শুধু একটা ঘরে আটকে রাখা হয়েছিল তাঁকে। এক নেপালি কুকের সঙ্গে ভাব করে কী ভাবেই না পালিয়ে গিয়েছিলেন সেখান থেকে।
কাঁদতে কাঁদতে এটাও বললেন, এই হত্যাকাণ্ড জানাজানি হয়ে যাওয়ার পর চাকরির জন্য কোথাও আবেদন করলে তাঁকে ডাকা হয় ঠিকই কিন্তু সেটা চাকরি দেওয়ার জন্য নয়, শুধু তাঁকে দেখার জন্য। ‘‘বাইশ জায়গায় সিভি পাঠিয়েছিলাম। সবাই ডাকে। ডেকে বলে, ‘ওহ, আর ইউ মিখাইল বোরা... সরি উই ক্যাননট গিভ দ্য জব টু ইউ,’’ বলতে বলতে আবেগে প্রতিবেদকের হাত ধরে ফেলেন মিখাইল।
এটাও বলেন, কোনও দিন ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে মুখোমুখি দেখা হলে তিনি শুধু দু’টো কথা জিজ্ঞেস করবেন, ‘‘জিজ্ঞেস করব কেন আমাকে আর দিদিকে এত কষ্ট দিলে জীবনে? কেনই বা দিদিকে মেরে ফেললে?’’ বলে গুম হয়ে বসে পড়েন মিখাইল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy