মধুমিতা সরকার
মধুমিতা সরকার
অভিনেত্রী হওয়ার কোনও অ্যাম্বিশন ছিল না ছোট পরদার ইমন, মানে মধুমিতা সরকারের। ২০১১-র ২৪ জুন। মধুমিতার স্মৃতিতে দিনটা এখনও উজ্জ্বল। সে দিন ছিল ‘সবিনয় নিবেদন’-এর শ্যুটিংয়ের প্রথম দিন। সেটা শেষ হতে না হতেই ‘কেয়ার করি না’র অফার। তার পর ‘বোঝে না সে বোঝে না’, ‘কুসুমদোলা’। পরপর লিড চরিত্র পেয়েছেন মধুমিতা। তিনি যে এই মুহূর্তে ছোট পরদার অন্যতম ব্যস্ত ও জনপ্রিয় অভিনেত্রী সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বিজ্ঞাপনের হাত ধরে, ক্লাস ফোরে ক্যামেরার সামনে হাতেখড়ি। ক্লাস টেনে পড়ার সময়ে একটি ছবিতেও অভিনয় করেছিলেন। যদিও তা মুক্তি পায়নি। মধুমিতার কথায়, ‘‘অভিনয় করাটা প্রথম দিকে পাজল সলভিংয়ের মতো মনে হতো।’’ পাখি না ইমন কোন চরিত্রের সঙ্গে মধুমিতার মিল বেশি? ‘‘ইমনের মতো অতটা চড়া না হলেও, অন্য কারও কথা ভেবে নিজের মত পাল্টে ফেলি না। যার সঙ্গে মানুষ অনেক বেশি রিলেট করতে পারে, এমন চরিত্রই পছন্দ,’’ বললেন স্পষ্টবাদী মধুমিতা।
এ বছরই গ্র্যাজুয়েট হয়েছেন মধুমিতা। দু’বছর আগে বিয়ে সেরে ফেলেছেন অভিনেতা সৌরভ চক্রবর্তীর সঙ্গে। মধুমিতার অভিনয়ের শিক্ষাগুরুও সৌরভ। এত ব্যস্ততার মধ্যে যদি কখনও ছুটি পেয়ে যান, তখন কী করেন? ‘‘একা থাকলে বই পড়ি, গিটার বাজাই, রান্না করি, নাচ করি। আর সৌরভ সঙ্গে থাকলে প্ল্যান হয় একশো রকমের। কিন্তু শেষমেশ করা হয়ে ওঠে ৫-৬টা কাজই,’’ হাল্কা হেসে বললেন ছোট পরদার পাখি।
আরও পড়ুন: বাংলায় পুতুল-ভূত
আমনদীপ সোনকর
‘স্ত্রী’ ধারাবাহিকের নিরুপমার ঋজু ব্যক্তিত্বের কাছে হার মানে তার দজ্জাল শাশুড়ি কিংবা উদ্ধত দেওররা। ‘দেনাপাওনা’র নিরুপমার মতো মাথা নত করে মেনে নেওয়ার মেয়ে সে নয়। নিখাদ বাঙালি নিরুর চরিত্রে অভিনয় করছেন এক পঞ্জাবি কুঁড়ি। আমনদীপ সোনকর। যদিও কলকাতার কেষ্টপুরে বড় হওয়া আমনদীপের বাংলা শুনলে তা বোঝার উপায় নেই। বয়সও নেহাতই কম। বারো ক্লাসের পরীক্ষা দিয়েছেন এ বছর। ‘স্ত্রী’ আমনদীপের প্রথম সিরিয়াল নয়, এর আগে শিশুশিল্পী হিসেবে কাজ করেছেন। বিজ্ঞাপন ও মডেলিংও করেছেন।
ডেলিসোপ মানে টোয়েন্টি ফোর ইনটু সেভেন। কলেজের চৌকাঠে পা না-দেওয়া আমনদীপের ভাল লাগে এত ব্যস্ততা? ‘‘শুরুর দিকে ভাল লাগত না। ঘুম, পড়াশোনার সময় পেতাম না। পরীক্ষা যে কীভাবে দিয়েছি, আমিই জানি। এখন এই সেটই আমার পরিবার। সেটে অনেক দাদা-দিদি রয়েছেন। ভুল হলে আমাকে গাইড করেন। আমার ভাষার একটু সমস্যা রয়েছে। তাই বকুনিও খাই,’’ নিরুর গলায় আঠেরোর সারল্য। সারা সপ্তাহ কাজের পর ছুটির দিনটা কী করেন? ‘‘কোনটা যে করব ভেবে পাই না, এত কাজ থাকে। আমার বেস্টফ্রেন্ড খুব রেগে যায়, বলে, একদম সময় দিস না। ওকে একটু সময় দিতে হয়।’’ বেস্টফ্রেন্ড না কি বয়ফ্রেন্ড? জোর গলায় উত্তর এল, ‘‘না-না, আমার কোনও বয়ফ্রেন্ড নেই। সিরিয়াল শুরু হওয়ার আগে একজন ছিল। এখন কেটে গিয়েছে। তবে আমি এখন চাইও না কাউকে বয়ফ্রেন্ড বানাতে। ছুটির দিনে আমার বেস্টফ্রেন্ডের সঙ্গে থাকতে ভাল লাগে। আর ছুটি পেলে মনে হয়, শুধু ঘুমাই। বাড়ি থেকে বেরোতে ইচ্ছে করে না।’’
সিরিয়ালে শাড়ি পরে থাকতে হলেও এই অষ্টাদশী কিন্তু ওয়েস্টার্নে বেশি স্বচ্ছন্দ। যদিও বিয়ে এখনও দূর কী বাত, তবে কথাপ্রসঙ্গে নিজেই বললেন, ‘‘কোনও এনআরআই-কে বিয়ে করে, বিদেশে সেটল করতে চাই।’’
পল্লবী শর্মা
জবাকে অনেকেই মনে করেন অবাঙালি, তাঁর ‘শর্মা’ পদবির কারণে। ‘‘আমি কিন্তু একশো শতাংশ বাঙালি এবং বাঙালও বটে,’’ জোর গলায় বললেন পল্লবী। ‘কে আপন কে পর’ সিরিয়ালের জবার মতোই পল্লবীর চলার পথটাও কিন্তু মোটেই সহজ নয়। ক্লাস থ্রি-তে পড়াকালীন পল্লবীর মা মারা যান। জীবনের বড় সাপোর্টগুলো খুব তাড়াতাড়ি হারিয়েছেন পল্লবী। তবে অভিনয়ের পাশাপাশি পড়াশোনাটাও চালিয়ে যাচ্ছেন ভবানীপুর কলেজে অ্যাকাউন্টস অনার্সের সেকেন্ড ইয়ারের এই ছাত্রী। ‘‘আইসিএসই পরীক্ষার আগের দিন যখন বাবা মারা যান, আমাকে পরীক্ষা না দেওয়ার কথা বলেছিল অনেকেই। আমি শুনিনি। পরীক্ষা দিয়ে আসার পর বাবাকে শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন ‘ভালবাসা ডট কম’-এ কাজ করছিলাম। মনে আছে, বাড়ি থেকে হবিষ্যি বানিয়ে শ্যুটিংয়ে নিয়ে যেতাম। ওখানেই পড়তাম। তার পরদিন পরীক্ষা দিতে যেতাম। এ ভাবে পড়াশোনা করাটা আমার অভ্যেস হয়ে গিয়েছে।’’ যৌথ পরিবারে বড় হয়েছেন বলে সকলের কাছ থেকে সাপোর্ট পেয়েছেন।
আর সিরিয়ালের সেটে কিন্তু তাঁর সবচেয়ে বেশি বন্ধুত্ব, অনস্ক্রিন শত্রু ‘তন্দ্রা’ অর্থাৎ মোনালিসার সঙ্গে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy