Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বিস্কুটের ডানায় ভালবাসার উড়ান

উচ্চকিত অতিনাটকের সুযোগ ছিল। কিন্তু সে পথে পা বাড়াননি পরিচালক অনিন্দ্য। সহজ গল্পকে সহজ ভাবে বলেছেন। প্রথম ছবির পরে যে আশা তাঁকে ঘিরে তৈরি হয়েছিল, তা পূরণ করেছেন তিনি। চিত্রনাট্যের পরতে পরতে ছড়িয়ে তাঁর রসবোধ।

সম্রাট মুখোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৭:২০
Share: Save:

প্রজাপতি বিস্কুট

পরিচালনা: অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়

অভিনয়: ইশা সাহা, আদিত্য সেনগুপ্ত, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়, রজতাভ দত্ত

৭/১০

ডানা মেলেছে বিস্কুট। ডানা মেলেছে ভালবাসাও।

তবে সেই প্রজাপতির গন্তব্যে পৌঁছনোর তাড়া নেই। নেই কিছু প্রমাণ করারও তাগিদ। শুধু বলে চলে দুটো সহজ মানুষের সহজ গল্প। নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়ে শ্রাবণীর বিয়ে হয় এক বনেদি বাড়িতে। নামটা পছন্দ নয় শাশুড়ির (সোনালি গুপ্ত)। তাই শ্রাবণী হয়ে যায় শাওন (ইশা সাহা)। রামগরুড়ের মতো শাওনের শ্বশুরবাড়িও ধমক দিয়ে ঠাসা। রবীন্দ্রানুরাগী, কালচার-কুম্ভ শাশুড়ির ভয়ে পুজোআচ্চা থেকে সিরিয়াল— সব নিষিদ্ধ। শাওন সেখানে এক সাজানো আসবাব। বাড়িতে একমাত্র বন্ধু ভাসুরের মেয়ে ফুচকা। শাওনকে যে ডাকে ‘চুরমুর’ বলে। অবসর সময়ে শাওন সিরিয়ালের চিত্রনাট্য, গল্প লেখে। তবে গোপনে। সে কাজে তাকে সাহায্য করে বন্ধু পারিজাত।

বাড়ির সামনে একদিন কার্তিক ঠাকুর ফেলে যায় শাওনের স্বামী অন্তরের (আদিত্য সেনগুপ্ত) বন্ধুরা। শাশুড়ির সাফ কথা, সে বাড়িতে ঠাকুর একজনই— রবিঠাকুর। কার্তিক পুজোটুজো আবার কী? তবু কার্তিক ঘরে উঠল। পুজোও হল। কিন্তু শাওনের আর ইচ্ছাপূরণ হয় না। সে আর অন্তর একটি সন্তান চায়। সেক্সোলজিস্ট থেকে মনোবিদ— সর্বত্র ছোটে তারা। লাভ হয় না।

ইতিমধ্যে শাওনের বন্ধু পারিজাত একদিন জানায়, সে অন্তঃসত্ত্বা। সাহেব বয়ফ্রেন্ড বেপাত্তা। তাই গর্ভপাত ছাড়া গতি নেই। শাওনের ইচ্ছা, পারিজাতের সন্তানকে সে দত্তক নেয়। অন্তরকে বলায় সে-ও রাজি। সন্তানের আশায় দিন গোনা শুরু হয় শাওনের। তার পরেই আসে টুইস্ট।

শুরু হয় শাওন-অন্তরের বিবাহিত জীবনেরই নতুন যাপন। অন্তর বরাবরের অন্তর্মুখী। আর শাওন বিয়ের পর থেকেই অন্তরমুখী। ক্রনিক দ্বিধায় ভোগা, ভোলেভালা মানুষটিকে সব দিয়েই ভালবাসে সে। কিন্তু শাওন শ্বশুরবাড়ির অনুশাসনে ক্লান্ত। সে নিজের মতো করে বাঁচতে চায়। আভিজাত্যের পুতুল হয়ে নয়। অন্তরও বোঝে সে কথা। কিন্তু কোনও কালেই সিদ্ধান্ত নিতে সে পটু নয়।
তবু শেষমেশ নতুন এক তীরে পৌঁছয় তাদের ভালবাসার নৌকা।

উচ্চকিত অতিনাটকের সুযোগ ছিল। কিন্তু সে পথে পা বাড়াননি পরিচালক অনিন্দ্য। সহজ গল্পকে সহজ ভাবে বলেছেন। প্রথম ছবির পরে যে আশা তাঁকে ঘিরে তৈরি হয়েছিল, তা পূরণ করেছেন তিনি। চিত্রনাট্যের পরতে পরতে ছড়িয়ে তাঁর রসবোধ। তবে কোথাও কোথাও চিত্রনাট্য সংক্ষেপ করে ছবির দৈর্ঘ্য কিছুটা কমিয়ে আনার সুযোগ ছিল। অন্তর আর শাওনের চরিত্রে নবাগত দুই তরুণ-তরুণী আদিত্য ও ইশা টাটকা হাওয়ার মতো। দু’জনেই বহু দূর যাবেন। শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়, রজতাভ দত্ত, অপরাজিতা আঢ্য আর রজত গঙ্গোপাধ্যায়ের অভিনয় মনে রাখার মতো।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE