Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

প্রেম পুজো

বসন্ত এসে গেছে। কাল সরস্বতী পুজো। পরশু ভ্যালেন্টাইন্স ডে। প্রেমের দুর্ধর্ষ সব টিপস নিয়ে হাজির মিমি-অঙ্কুশ। শুনলেন অরিজিৎ চক্রবর্তীবসন্ত এসে গেছে। কাল সরস্বতী পুজো। পরশু ভ্যালেন্টাইন্স ডে। প্রেমের দুর্ধর্ষ সব টিপস নিয়ে হাজির মিমি-অঙ্কুশ।শুনল আনন্দplus

শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ২৩:২৬
Share: Save:

| প্ল্যান |

টলিউডের জেনওয়াই নায়ক-নায়িকার এ বার ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র প্ল্যান কী?

অঙ্কুশ: সাঙ্ঘাতিক প্ল্যান (হাসি)। ‘কী করে তোকে বলব’র জন্য হল ভিজিট।

মিমি: (হাসি) হ্যাঁ, সেটাই...

মানে, প্রেমের দিন ঐন্দ্রিলা বাদ?

অঙ্কুশ: মানতে চাই বা না চাই, সামনের দু’সপ্তাহ আমার প্রেমিকা-বউ-স্ত্রী — সব মিমি।

মিমি: আমারও তাই।

বোরিং উত্তর। মিমির জন্মদিন ১১ ফেব্রুয়ারি, অঙ্কুশের ১৪। প্রেমের মাসে জন্মদিন হওয়ার সুবিধা কী?

মিমি: (হাসি) অঙ্কুশের তো আবার ভ্যালেন্টাইন্স ডে-তে...

অঙ্কুশ: সুবিধা তো অনেকই। বেশি অ্যাটেনশন পাওয়া যায়। বাড়ির দিক থেকে, মেয়েদের দিক থেকেও। মেয়েদের অ্যাপ্রোচ করতে হয় না, উল্টে ওরাই চলে আসে। সেই ফাঁকে হাল্কা করে ছকটা খেলে দিই।

মিমি: অঙ্কুশের তো বার্থ ডে কার্ড আর লাভ লেটার একসঙ্গে আসে। ‘হ্যাপি বার্থ ডে... লাভ ইউ’।

মিমির ক্ষেত্রে?

মিমি: আমি ভীষণ সেল্ফ লাভিং পার্সন। লোকে যেমন দুর্গাপুজোর দিন গোনে, আমি তেমন আমার জন্মদিনের দিন গুনি। প্রতি মাসের ১১ তারিখ ভাবি, আর এত মাস পরে আমার জন্মদিন। আর প্রেমের মাস-টাস বলে আমি ও রকম মনে করি না। কেউ আমাকে ডেট-য়ে যাওয়ার কথা বললই না...

কারণটা তো লোকে জানে রাজ চক্রবর্তী আপনার বয়ফ্রেন্ড!

মিমি: জানলে আর আমি কী করব বলুন! এর উত্তরটা তো আনন্দplus-এ আগেও দিয়েছি। রাজ আমার ফ্রেন্ড, ফিলোজফার অ্যান্ড গাইড। ফুলস্টপ।

| প্রথম ডেট |

কাল সরস্বতী পুজো। পরশু ভ্যালেন্টাইন্স ডে। প্রেম বা ডেটের মোক্ষম দিন। আপনাদের প্রথম ডেটের অভিজ্ঞতা কেমন?

মিমি: ভয়াবহ! (হেসে) আরে সে এক যাচ্ছেতাই ব্যাপার। কলেজের বন্ধুরা মিলে আমার জন্য একটা ব্লাইন্ড ডেট ফিক্স করেছিল...

অঙ্কুশ: (অবাক হয়ে) তুই ব্লাইন্ড ডেটে গিয়েছিলি?

মিমি: হ্যাঁ রে, এটা কারওকে বলিনি। এমনিতে তো টিশার্ট-স্নিকার্সে ঘুরে বেড়াতাম। তো সে দিন, বন্ধুরা ভাল একটা ড্রেস পরিয়ে, সাজিয়ে দিয়েছিল। তার সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছিল। ভাল কথা বলে, ইংরেজিটাও ভাল। তখন আমি আঠেরো। ভাবতাম, ভাল ইংরেজি বলতে পারে মানে নির্ঘাত ভাল দেখতে। তো ডেটের দিন গেলাম সাউথ সিটি। একটা কালো, কুচ্ছিত দেখতে লোক ফোন বের করছে। আমার সিক্সথ সেন্স বলল, এই লোকটা হতে পারে। আমি সঙ্গে সঙ্গে ফোন সায়লেন্ট করে দিলাম। দেখি সত্যিই কলটা আমার ফোনেই আসছে। সঙ্গে সঙ্গে ফোন সুইচড অফ করে দে ছুট। তারপর তো নম্বর-টম্বরই পাল্টে ফেললাম (হাসি)।

অঙ্কুশ: আমার প্রথম ডেটের অবস্থাও পুরো তোর মতো। তখন আমি ক্লাস ইলেভেনে। কল্যাণীর এক মেয়ের সঙ্গে ফোনে কথা হত...

মিমি: কল্যাণী?

অঙ্কুশ: মা-কালী বলছি। এখনও মেয়েটার নাম মনে আছে। তখন তো হোয়াটসঅ্যাপ নেই, ছবি দেখিনি। কিন্তু প্রেমে পড়ে গেছিলাম। তো মেয়েটা একদিন দেখা করতে বলল। কল্যাণীতে ওদের বাড়ির পাশের এক ক্যাফেতে। গেলাম কল্যাণী।

মিমি: (চোখ বড় বড় করে) গেলি কল্যাণী?

অঙ্কুশ: হ্যাঁ, শোন না। গিয়ে দেখি ক্যাফেতে প্রায় দু’টো চেয়ার জুড়ে বসে একটা মেয়ে। ভীমকে আলকাতরা মাখালে যা হবে, তেমন দেখতে। সমস্ত মেয়েদের সম্মান করেই বলছি, চেহারায় সত্যিই কিছু যায় আসে না। তবে আমি না ষোলো বছর বয়সে সেটা নিতে পারিনি। এক ছুটে ট্রেন ধরে বাড়ি। (মিমিকে) তুই তো তবু দেখা করেছিলি...

মিমি: না, না, পাগল নাকি! আমিও ছুট লাগিয়েছিলাম... (হাই ফাইভ অঙ্কুশকে)

| গোপন কথা |

আচ্ছা, একজন আর একজনের কোনও সিক্রেট বলুন না। সম্ভাব্য ডেট-এর যাতে কাজে লাগে...

মিমি: (একটু ভেবে) অঙ্কুশ ভীষণ অগোছালো ভাবে খায়। খাবার পেলে ও আর কোনও দিকে তাকায় না। মুখের চারপাশে লেগে থাকে খাবার। এটা খুব বিচ্ছিরি। আমি তো সব সময় ধমকাই।

অঙ্কুশ: তোরটা বলি! মিমি না গুন্ডাদের মতো পা নাড়ায়। সামনে যে-ই বসে থাকুক না কেন, মস্তানদের মতো পা নাড়িয়েই যাবে। আমি তো অনেক সময় পা চেপে ধরি। (হেসে) তাই মিমির সঙ্গে ডেটে গেলে কখনও যদি মনে হয় সামনে কোনও গুন্ডা বসে আছে, ঘাবড়াবেন না।

মিমি: আরে এটা নিয়ে তো মায়ের কাছে একবার মারও খেয়েছি। বাড়িতে অনেক লোক এসেছে। আর আমি সোফায় বসেও সমানে পা নাড়িয়ে যাচ্ছি। মা এসে চিরুনি দিয়ে চ্যাটাং করে মারল পায়ে... (হাসি)

কিছু দিন আগে মিমি কিন্তু অসাধারণ এক সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। লেকটাউনের কাছে ভয়াবহ এক অ্যাক্সিডেন্ট ঘটিয়ে পালিয়ে যাওয়া দোষীদের তাড়া করে ধরেছেন। খবরটা পড়ে অঙ্কুশের কী মনে হয়েছিল?

অঙ্কুশ: বলছিলাম না, ওর নেচারটাই এ রকম। আই অ্যাম ভেরি প্রাউড অব হার। আমার তো খবরটা পড়ে ভীষণ ভাল লেগেছিল।

মিমি, আপনার সঙ্গে ডেটে যেতে হলে ছেলেদের কোন কোন গুণ থাকা মাস্ট?

মিমি: ওহ, তাকে ওয়েল ড্রেসড, ওয়েল বিহেভড হতে হবে। আর যেন খুব ভাল করে কথা বলে।

রাজ চক্রবর্তীর মধ্যে আছে এগুলো?

মিমি: রাজ তো আমার বয়ফ্রেন্ড নয়। যে আমার বয়ফ্রেন্ড হবে, তার মধ্যে এই গুণগুলো দেখে নেব।

সিক্রেটের কথাই যখন হচ্ছে, মনের সিক্রেটটা বলুন না। এমনিতে তো ব্যাপারটা ওপেন সিক্রেট...

অঙ্কুশ: আমার মন তো স্বপ্ন ভরা...

মিমি: আমার মনের পুরো জায়গা জুড়ে আছে আমার ছেলে। চিকু...

অঙ্কুশ: (এক চোখ ছোট করে) হুমমম, চিকুকে নিয়ে অনেক সিক্রেট আছে। যেমন, ওকে কেউ কুকুর বলতে পারবে না।

মিমি: কুকুর কেন বলবি? ও তো আমার ছেলে...

অঙ্কুশ: হ্যাঁ, ঠিকই তো। আর ক’দিন পরেই স্কুলে অ্যাডমিশন আছে। (চোখ টিপে) আমরা খোঁজ করছি ফর্মে বাবার নামটা কী লেখা হবে?

মিমি: শাট আপ, অঙ্কুশ।

অঙ্কুশ: মিমি আর চিকুর মুখটা মিলিয়ে দেখার চেষ্টা করছি বাবা কে হতে পারে...

মিমি: অঙ্কুশ শাট আপ... আমি সিঙ্গল মাদার...

| ডিজিটাল প্রেম |

আপনারা টুইটার-ফেসবুকে স্বচ্ছন্দ। তা ডিজিটাল মাধ্যমে কেমন প্রোপোজাল পান?

মিমি: বিরক্তিকর। এই তো কিছু দিন আগের ঘটনা। রাতে শ্যুটিং চলছিল। শেষ হতে হতে রাত তিনটে হয়ে গেছে। ফোন হাতে নিয়ে দেখলাম, একটা নম্বর থেকে চোদ্দোটা মিসড কল হয়ে আছে! অচেনা নম্বর। ভাবলাম জলপাইগুড়ি থেকে দরকারি কারও ফোনও তো হতে পারে। রিং ব্যাক করলাম। উল্টো দিকের লোকটা ক্যাজুয়াল গলায় বলল, ‘‘জানার ছিল, কেমন আছ?’’ ভাবা যায়!

অঙ্কুশ: আমার ক্ষেত্রে অবশ্য প্রোপোজালটা অ্যাকসেপ্ট করব কি করব না, সেটা ডিপেন্ড করে প্রোফাইল পিকচারের উপর (হাসি)। উফ, স্কুলে পড়ার সময় যদি হোয়াটসঅ্যাপ থাকত।

হোয়াটসঅ্যাপ না থাকলেও স্কুলের সরস্বতী পুজোয় ঝারি তো ছিল?

অঙ্কুশ: ওটাই তো একটা সুযোগ ভাই। স্কুল ইউনিফর্মের বাইরে মেয়েদের দেদার ঝারি। মনের মধ্যে লাড্ডু ফুটলেও, স্কার্ট পরা মেয়েদের টন্ট করা, কেন পুজোর দিন ওয়েস্টার্ন পরেছে? অ্যাট লিস্ট কথা বলার সুযোগ
তো হল।

মিমির সরস্বতী পুজোর অভিজ্ঞতা?

মিমি: আমাদের স্কুলে তো পুজো হত না। তাই স্কুলের কোনও অভিজ্ঞতা নেই। বাড়িতে পুজো হত। বাড়িতেই থাকতাম। আর বারান্দা দিয়ে লোক দেখা (হাসি)।

| টিপস |

জেন ওয়াইয়ের জন্য কয়েকটা টিপস দিন যা এ বার সরস্বতী পুজোয় লাগবে।

অঙ্কুশ: ঝারি মারার জন্য সারা বছর ধরে চোখের ব্যায়াম করতে হবে (হাসি)। আর ভাল একটা সানগ্লাস কিনতে হবে। তবে মনে রাখবে মেয়েরা কেয়ারিং নেচারকে খুব পছন্দ করে। ওহ, আর ডার্ক চকোলেট। ডেটে যাওয়ার সময় নিতে ভুলো না। শেষে বলব, মনের মধ্যে কথা জমিয়ে রেখো না, বলে ফেলো। ‘কী করে তোকে বলব?’ ভেবো না।

মিমি: ছেলেদের জন্য আমার টিপস হল, মেয়েরা হ্যাংলা ছেলেদের কম পাত্তা দেয়। তাই মেয়েদের সামনে বেশি হ্যাংলামি কোরো না। (হেসে) আর ওভারস্মার্টনেস একদম দেখাবে না। একটা কথা বলি, ছেলেরা প্লিজ টেকস্যাভি হও। মেয়েটার ফোন সংক্রান্ত সমস্যা যেন চুটকিতে সলভ করে দিতে পারো। ইমপ্রেসড তো হবেই। আর অনেক অশান্তি মিটে যাবে (হাসি)।

আর ভাঙা মন সারানোর টিপস?

মিমি: সময়। টাইম ইজ দ্য বেস্ট মেডিসিন।

শেষ প্রশ্ন করি। সরস্বতী পুজো-ভ্যালেন্টাইন্স ডে উইকএন্ডে লোকে প্রেম না করে কেন ‘কী করে তোকে বলব’ দেখতে যাবে?

মিমি: প্রেম করার জন্য তো পুরো উইকএন্ডটাই আছে। মাঝে টুক করে একটা মুভি ডেট বানিয়ে নেওয়া যায়। আর ‘কী করে তোকে বলব’‌তে শুধু গদগদ প্রেমই নেই। তু তু, ম্যয় ম্যয় টাসল আছে। অনেক ইমোশন আছে। পয়সা উসুল হবেই।

অঙ্কুশ: দেখুন, যারা মিমি-অঙ্কুশের ফ্যান, তারা তো যাবেই। আর যারা ফ্যান নয় তাদের জন্য বলি, (চোখ টিপে) থিয়েটার হলের থেকে অন্ধকার জায়গা কিন্তু আর হয় না।

কিন্তু আপনারা তো, ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র দিন ভ্যালেন্টাইন ছাড়া...

মিমি: আবার! (হেসে) আমাদের ফোটোশ্যুট আছে না?

ছবি: কৌশিক সরকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE