Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

প্রথম বার একসঙ্গে বিজ্ঞাপন সৌরভ-সানার

কখনও আবদার। কখনও চলছে খুনসুটি। বাবা-মেয়ের একান্ত কিছু মুহূর্ত ফ্রেমবন্দি করল আনন্দ প্লাসকখনও আবদার। কখনও চলছে খুনসুটি। বাবা-মেয়ের একান্ত কিছু মুহূর্ত ফ্রেমবন্দি করল আনন্দ প্লাস

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং সানা গঙ্গোপাধ্যায়।

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং সানা গঙ্গোপাধ্যায়।

দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ
শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৭ ০০:৩৪
Share: Save:

বায়না সাধারণত বাচ্চারাই করে থাকে। বড়দের কাছে। কিন্তু কখনও উল্টোটাও ঘটে।

সাক্ষী লর্ড সিনহা রোডের একটি বহুতলের শ্যুটিং ফ্লোর। মেয়ের কাছে বাবা আবদার জানাচ্ছেন, ‘‘মা, একবারটি কোলে বস। আর তো বসবি না এর পর। ছবি তোলার বাহানাতেই তো একটু সময় কাটাতে পারছি তোর সঙ্গে।’’ মেয়েটি নিতান্তই অনিচ্ছুক। সামনের ফোটোগ্রাফার চিন্তিত মুখে ভাবছে, মনমতো ছবিটা কি হবে?

হল। একদম আদুরে একটা ছবি।

এই প্রথম বার একসঙ্গে বিজ্ঞাপন করছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং সানা। বিজ্ঞাপন না করলেও সানা আর সৌরভের ছবি মেলা দুষ্কর। লরেটো হাউজ স্কুলের ক্লাস টেনের সানা ভয়ঙ্কর রকমের লাজুক।

‘‘ওকে এই বিজ্ঞাপনের শ্যুটিংয়ের জন্য কীভাবে রাজি করিয়েছি সেটা আমি জানি,’’ বলছিলেন সৌরভ। প্রথম বারের জড়তা কেটে গেলে পরে নিশ্চয়ই আর সমস্যা হবে না! ‘‘পরে আর কোনও দিনই হবে না। সেটা বেশ বুঝতে পারছি,’’ দরাজ গলায় হাসতে হাসতে বললেন সৌরভ! ল্যাকমে ফ্যাশন উইকে র‌্যাম্পে হাঁটার প্রস্তাব এসেছিল সানার কাছে। নাকচ করার আগে দু’বার ভাবেনি সে। কারণ? বাবা জানালেন,স্রেফ লজ্জা।

আরও পড়ুন: সইফ-কন্যার বিকিনি লুকের ছবি ভাইরাল

শ্যুটিংয়ের বাহানাতেই গোটা দিনটা একসঙ্গে কাটছে বাবা-মেয়ের। থেকেই থেকেই মেয়েকে আদরে ভরিয়ে দিচ্ছেন বাবা। ‘‘বাড়িতে যেটুকু সময় পাই, আমরা বাবা-মেয়ে সুদে-আসলে পুষিয়ে নিই। কিন্তু সেটা তো খুব বেশি হয় না,’’ বলছিলেন সৌরভ। সায় দিল সানাও। সে কিন্তু একেবারেই ড্যাডিজ গার্ল। মেয়েকে আদর করে বাবা ডাকেন ‘সেনু’ বলে।

বকুনিটা আসলে মা ডোনার তরফ থেকেই বেশি আসে, জানালেন সৌরভ। সানা পড়াশোনা করে মায়ের কাছেই। বাবা মানেই আদর আর আবদার।

বিজ্ঞাপনটি একটি নামী গয়না প্রস্তুতকারক সংস্থার। যাদের প্রচারের মুখ সৌরভ। তিনি পেশাদার। জানেন কেমন করে ক্যামেরার সঙ্গে সহজাত হতে হয়। নিজেই সানাকে তালিম দিচ্ছিলেন। বুঝিয়ে দিচ্ছেন কখন ক্যামেরার দিকে তাকাতে হবে, কখন অফ-লুক দিতে হবে। শটের পরে মনিটরে গিয়ে দেখে নিচ্ছিছিলেন। আর সানা? তাকে শত ডাকলেও সে লাজুক হেসে চুপটি করে এক কোণে দাঁড়িয়ে।

নাচের জন্য শাড়ি পরতে হয়। নইলে সানা মোটেও স্বচ্ছন্দ নয় শাড়িতে। যদিও গোলাপি সিল্কের শাড়িতে তাকে দেখাচ্ছিল বেশ মিষ্টি। গর্বিত বাবা পাশ থেকে ফুট কাটলেন, ‘‘বড় বড় দেখাচ্ছে।’’

বাবা নামী ক্রিকেটার হলেও, খেলা নিয়ে সানার খুব একটা আগ্রহ নেই। শুধু কেকেআর হেরে যাওয়ায় খারাপ লেগেছে। সৌরভের কথায়, ‘‘খারাপ তো সকলেরই লেগেছে। আফটার অল আমাদের টিম।’’

আর্থ-সামাজিক অবস্থা যা-ই হোক না কেন, বাবা মাত্রই সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত। সৌরভ মনে করেন, সঞ্চয় করার বিষয়টা ছোট থেকেই রপ্ত থাকলে ভাল। সানা কি বাড়িতে পকেট মানি পায়? ‘‘নাহ্‌, যখন যেটা মনে হয় চেয়ে নিই। পকেট মানির দরকার পড়েনি,’’ রিনরিনে গলায় জবাব এল। লাজুক হলেও, সানা আত্মবিশ্বাসী। অর্থনীতি পছন্দের বিষয়। হায়ার স্টাডিজের জন্য লন্ডন যেতে চায়। মেয়েকে ছাড়তে কষ্ট হবে না? ‘‘সে তো হবেই। কিন্তু ও যেটা চায়, সেটাই তো আসল,’’ মন্তব্য সৌরভের। সানা জোর গলায় বলে উঠল, ‘‘না না, বাবাও তখন আমার সঙ্গে ওখানে গিয়ে থাকবে।’’

শ্যুটিং ফ্লোর সাজানো হয়েছিল সানার ছোটবেলার কিছু ছবি দিয়ে। ছোট্ট সানা বাবার কোলে। সে দিকে তাকিয়ে বাবা-মেয়ে দু’জনেই নস্ট্যালজিক।

সানার আপাতত গরমের ছুটি চলছে। সৌরভও ছুটি নিয়েছেন। সপরিবার লন্ডন পাড়ি দিচ্ছেন। সুতরাং সামনের ক’টা দিন বাবা-মেয়ে সব সময় একফ্রেমে।

ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE