Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

‘আমার পরের ছবি হার্ডকোর ডান্স ফিল্ম’

ঈদ আর ভাইজান একেবারে সমার্থক। ছবি রিলিজের আগে আনন্দ প্লাসের মুখোমুখি সলমন খান। ঈদ আর ভাইজান একেবারে সমার্থক। ছবি রিলিজের আগে আনন্দ প্লাসের মুখোমুখি সলমন খান।

শ্রাবন্তী চক্রবর্তী
মুম্বই শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৭ ০০:৫০
Share: Save:

ঈদ আপনার কাছে খুব স্পেশ্যাল। প্রায় প্রত্যেক বছরই এই সময় আপনার ছবি রিলিজ হয়...

আমার কাছে সব ফেস্টিভ্যালই স্পেশ্যাল। ঈদের তিন-চার দিন আগে ছবি মুক্তি পেলে একটা অ্যাডভান্টেজ পাওয়া যায় বই কী। কিন্তু তা বলে শুধুমাত্র মুসলিম দর্শক ফিল্ম দেখতে আসেন এমন নয়। কোনও ফিল্ম যখন দিওয়ালি বা বড়দিনে রিলিজ করে তখন যেমন সকলেই হলে ভিড় জামান, এই সময়টাও তাই। আর দর্শকরা ঈদ বলে হলে আসছেন তাও নয়। ওঁরা আসেন লক্ষ্মণপ্রসাদ, চুলবুল পাণ্ডেকে দেখতে।

প্র: ছোটবেলার ঈদের স্মৃতির কথা একটু বলুন?

উ: ঈদি পাওয়া! খুব ছোটবেলায় দশটা করে এক টাকার নোট পেতাম। একটু বড় হওয়ার পর দশটা ১০ টাকার নোট। আরও একটু বড় হয়ে দশটা করে ১০০ টাকার নোট। ভাবছেন দশটা করেই কেন নিতাম! আসলে হাত ভর্তি টাকা দেখতে ভাল লাগত (হাসি)!

প্র: এখনও ঈদি পান?

উ: এখন তো পরিবারে মা-বাবার পর আমি আর সোহেল, আরবাজ বড়। তাই পাওয়ার চেয়ে আমাদেরই বেশি দিতে হয় (হেসে)।

প্র: আপনি এখন প্রযোজকও। এই ভূমিকাটা কতটা শক্ত?

উ: সবচেয়ে আগে আমি একজন লেখকের ছেলে। তাই গল্পের কথাটাই আগে মাথায় আসে। আমি মনে করি, গল্প যদি ভাল হয় তবে ফিল্ম মেকিং মোটামুটি হলেও ছবি হিট করে যায়। কিন্তু উল্টোটা হলে ছবির সঙ্গে দর্শকের কোনও রকম কানেকশন তৈরি হয় না। শুধু জাঁকজমক দেখিয়ে দর্শকদের অ্যাট্রাক্ট করা যায় না। তাঁরা পরদায় আবেগ দেখতে চান। ফিল্মের চিত্রনাট্য বাড়ির সকলকে শোনাই। মতামত নিই। বাড়িতে হয় কেউ অভিনেতা নয় পরিচালক। তাদের প্রতিক্রিয়াটা জরুরি।

প্র: ছবিতে আপনার চরিত্রটা খুব ‘ইনোসেন্ট’। কী ভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন?

উ: মহেশ মঞ্জরেকর আমার ভাল বন্ধু। ওর ছেলে সত্য ভীষণ ভাল। একদম সরল-সাদাসিধে। ওকে আমার কাছে ডেকে পাঠিয়েছিলাম। ওর কিছু চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য রপ্ত করেছিলাম। এ ছাড়া আমার বডি-ডাবল পারভেজ খুব সৎ একজন মানুষ। এদের দু’জনের থেকে অনেক কিছু শিখেছি। আশপাশে যত ভাল মানুষ থাকে তত ভাল। নেগেটিভ লোক একদম পছন্দ করি না।

প্র: আপনি আর সোহেল দু’জনেই আছেন ছবিতে। ছোটবেলার কিছু স্মৃতি মনে পড়ে?

উ: আমি সোহেলের চেয়ে পাঁচ বছরের বড়। তাই ওর জন্মানো, প্রথমবার হাঁটা সবই মনে আছে। আমাদের পরিবারের মধ্যে বন্ডিং খুব ভাল। যখন বুঝতে পারি কোনও ব্যাপারে মতভেদ হয়েছে নিজেরাই মিটিয়ে নিই। সবচেয়ে বেশি ভুল আমিই করতাম। অনেকবার সাবধানও করা হতো। তবে আমাদের পরিবারে কাউকে প্রোটেক্ট করা হয় না। ভুল করলে বকুনি জুটবেই।

প্র: ছেলে, অভিনেতা, বিয়িং হিউমানের উদ্যোক্তা, কোন ভূমিকা সবচেয়ে বেশি উপভোগ করেন?

উ: চ্যারিটি নিয়ে বেশি কথা বলব না। আরও অনেক ফাউন্ডেশন আছে যারা আমাদের মতো কাজ করছে। আমি তো খুব ক্ষুদ্র একটা অংশ। যেটুকু সম্ভব হয় করি। একটা জিনিস সব সময় বিশ্বাস করি, মন যা বলবে সেটাই করব। লোকে কী বলল, না বলল পাত্তা দিইনি। দেবও না।

প্র: এই ছবিতে চিনা অভিনেত্রী জু জু’র সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কী রকম?

উ:খুবই ভাল। ইন্টারন্যাশনাল স্টার হলেও কোনও রকম ট্যানট্রাম নেই। ভাষার সমস্যার জন্য হিন্দি থেকে ইংলিশ অনুবাদ করে দৃশ্যটা ভাল করে বুঝে নিয়ে তার পর ক্যামেরার সামনে শট দিতে আসত। জু জু একদিন আমাদের জন্য চাইনিজ খাবার বানিয়েছিল। আর আমরা একদিন ওর জন্য চাইনিজ অর্ডার করেছিলাম। সে দিন জানতে পারলাম, আমরা যে চাইনিজ খাবার এখানে খাই সেটা আসলে অথেন্টিক চাইনিজই নয়। জু জু তো একটা ডিসও চিনতে পারল না! তবে খেয়ে ওর ভালই লেগেছিল।

প্র: ছবিতে আপনার মা সলমা খানের নামও আছে নির্মাতার জায়গায়...

উ: আজ আমি যা কিছু সবই তো মা-বাবার জন্য। এখন তো মনে হচ্ছে নিজের নামটাও সরিয়ে দিই। মা’র থেকেই তো সব কিছু। মাতৃভাষা, মাতৃভূমি সবেতেই মা শব্দটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।

প্র: কবীর খানের সঙ্গে তৃতীয়বার কাজ করলেন কেন?

উ: আমাদের দু’জনের মধ্যে কমফর্ট লেভেল খুব ভাল। একে অপরকে ভাল বুঝতে পারি। অনেক সময় কোনও পরিচালকের সঙ্গে তিনটে ফিল্ম করলেও এই রকম কমফর্ট তৈরি হয় না। আমি পরিচালকদের সঙ্গে পেশাদার সম্পর্ক রাখি। ডিরেক্টর-অ্যাক্টরের ফোকাস হাওয়া উচিত ভাল ছবি বানানো। ছবি হিট করলেও ভেবে দেখি যে সেই পরিচালকের সঙ্গে আবার কাজ করব কি না।

প্র: আপনি আর ক্যাটরিনা ফের একসঙ্গে ছবি করছেন...

উ: ‘এক থা টাইগার’ হিট করেছিল। তাই সিক্যুয়েলের প্রস্তাব আসতে রাজি হয়ে গেলাম। ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’-এর চিত্রনাট্য খুব ভাল। ‘টিউবলাইট’-এর পর একটা অ্যাকশন ফিল্ম করতে চাইছিলাম। ‘সুলতান’ করার পর আমার হাঁটুর অবস্থা খুব খারাপ হয়ে গিয়েছিল। তাই তখন অ্যাকশন ফিল্মে হাত দিইনি। এর পর রেমো ডি’সুজার সঙ্গে একটা হার্ডকোর ডান্স ফিল্মে কাজ করব।

আরও পড়ুন: আলিয়াই বরুণের দুলহনিয়া

প্র: আজকাল টুইটারে লোকজন একে অপরকে বিচার করে। একটা প্যারালাল সেন্সরশিপ চলে। আপনার কী মত ?

উ: আমি এক সময়ে ভীষণ ভাবে রিঅ্যাক্ট করতাম, যখন আমার আর শাহরুখের ফ্যানরা একে অপরকে বাজে ভাবে গালিগালাজ করত। খুব রেগে যেতাম সেই সময়ে। আমি আর আমার টিম, ১৫ জন লোককে ট্র্যাক করেছিলাম। যারা এই সব বাজে কথা লিখত। অথচ তারা সকলেই ভাল পরিবারের। কিন্তু কেউ তাদের আসল পরিচয় জানত না। আমি ঠিক করে ফেলেছিলাম যে, ওদের মুখোশ খুলে দেব। কিন্তু সেটা আর করিনি। আজ আমি ‘বিয়িং ইন টাচ’ অ্যাপ নিয়ে এসেছি ভক্তদের জন্য। সেখানে ৪ লক্ষ সদস্য। ওখানে ভক্তদের সঙ্গে একদম মন খুলে কথা বলি। টুইটার ব্যবহার করি ছবির প্রমোশনের কাজে। ওখানে কিছু লিখলে আমি প্রতিক্রিয়াগুলো পড়েও দেখি না!

প্র: ‘টিউবলাইট’এ শাহরুখ খানও তো আছেন...

উ: হ্যাঁ, শাহরুখ খুব ভাল যে, একটা ছোট অথচ গুরুত্বপূর্ণ গেস্ট অ্যাপিয়ারেন্স দিতে রাজি হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE